ঠাকুরগাঁওয়ে ইট ভাটার মাধ্যমে অতিরিক্ত লাভের আশা দেখিয়ে আব্দুল আজিজ নামের এক ভাটার মালিকের সাথে প্রতারণা করার অভিযোগ উঠেছে ইট ভাটার আরেক অংশীদার মুকসেদ নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। সেই সাথে ভাটার নাম পরিবর্তন করে দিয়ে রাতের আধারেই ভাটার নতুন নাম দিয়ে ভাটা দখলের চেষ্টা অভিযোগ উঠেছেন ওই সেই অংশীদারের বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার রাতে দ্বিতীয় অংশীদার মুকসেদ এম.এ ব্রিক্স মুকসেদ আজিজ ইট ভাটাটি দখল করে ভাটার প্রথম অশীদার আব্দুল আজিজকে মারপিট করে ভাটা থেকে বের করে দেয়। পরে আব্দুল আজিজ সেটি বাধা দিতে গেলে সেখানে একটি উত্তেজনা পরিস্থিতি বিরাজ করেন।
এদিকে ঘটনায় গত ২৬জুন ভাটার প্রথম অংশীদার আব্দুল আজিদ বাদী হয়ে ঠাকরুগাঁও বিজ্ঞ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদলতে দ্বিতীয় অংশীদার মুকসেদ আলীর নামে একটি প্রতারণার মামলা করেন।
মামলায় বলা হয়, দীর্ঘদিন ধরেই থ্রি.স্টার ইট ভাটার মালিক আব্দুল আজিজের ইট ভাটায় খড়ি সাপ্লাই করতে মুকসেদ। সে সময় খড়ি বাবদ মুকসেদ নগদ টাকা ও ইট নিতেন। এক পর্যায়ে তার সাথে একটি ভালো সম্পর্ক তৈরী হয়ে উঠে থ্রি.স্টার ইট ভাটার মালিক আব্দুল আজিজের। পরে ভাটায় অধিক লাভের আশা দেখিয়ে ২ বছরের জন্য আব্দুল আজিজের সাথে একত্রিত হয়ে চুক্তিতে আবদ্দ হয়ে সেই ভাটার শেয়ার নেয় মুকসেদ। এতে মুকসেদ ৬০% ও আব্দুল আজিজ ৪০% লভ্যাংশ নিবেন।
পরবর্তীতে ব্যবসায় প্রসার বাড়ানোর জন্য কিছুদিন যেতে না যেতেই ১০ বছরের জন্য উভয়ে চুক্তিবদ্ধ হয়ে নতুন রুপে এম.এ ব্রিক্স মুকসেদ আজিজ ইট ভাটা নামে নতুন ভাটা চালু করেন। সেখানে উভয়ে ৭০% এবং ৩০% লভ্যাংশ হারে লিখিত চুক্তি বদ্ধ হয়।
পরে প্রথম চুক্তিমতে ২০১৬-২০১৮ সালের চুক্তিমত থ্রি.স্টার.ইট ভাটার হিসাব করে নিজেদের লভ্যাংশ বুঝে নেন উভয়ে। এর কিছুদিন পর থেকেই হঠাৎ করে উভয়ের অংশীদারের মাধ্যমে তৈরী নতুন “এম.এ ব্রিক্স মুকসেদ আজিজ” ইট ভাটার চুক্তি থাকা সত্তেও দ্বিতীয় অংশীদার মুকসেদ কোন কারন ছাড়া প্রথম অংশীদার আব্দুল আজিজকে ভাটা থেকে বের করার চেষ্টা করতে থাকে। আব্দুল আজিজ বিষয়টি বুঝতে পেরে নুতন ভাটার তৈরী থেকে শেষ পর্যন্ত তার প্রায় ২৬ লক্ষ ৭০ হাজার টাকার খরচ বুঝিয়া চায়। কিন্তু নতুন ভাটার দ্বিতীয় অংশীদার মুকসেদ কোন কথা না শুনে আব্দুল আজিজকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি প্রদান করেন ও ভাটায় প্রবেশ করতে বারণ করেন।
একাধিকবার আব্দুল আজিজ মুকসেদকে তার পাওনা টাকা পরিশোধ করতে বললে সে সেটি অস্বীকার করেন। সেই সাথে নতুন ভাটাটি তার একার বলে দাবি করে থাকেন। পরে ভাটার প্রথম অংশীদার আব্দুল আজিজের ম্যানেজার ইয়াসিন আলী ও পাহারাদার লতিফকে মারপিট করে বের করে দেয়।
অভিযোগকারী ভাটার মালিক আব্দুল আজিজ বলেন, আমি বিশ^াস করে তার সাথে শেয়ারের মাধ্যমে ভাটার ব্যবসা শুরু করেছিলাম। প্রথম ভাটায় কোন সমস্যা না করলেও পরে দুইজনে মিলে নতুন যে ভাটাটি করেছি সেটাতে আমার সাথে চিটারি করে। আমি বিষয়টি বুঝতে পেরে তার কাছে আমার ভাটায় খরচকৃত পাওনা টাকা বুঝিয়ে চাইলে সে আমাকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি দেয়। আমি এ বিষয় নিয়ে উকিলের মাধ্যমে উকিল নোটিশ দিলেও সে সেটার কোন জবাব দেয়নি।
তিনি আরো বলেন, এতো টাকা ব্যয় করেও আজ আমি নিরুপায়। সে বিভিন্ন মাধ্যমে আমাকে ভয়ভিতি দেখায়। আমাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। আমি কোন উপায় না পেয়ে আদালতে আমার পাওনা টাকা ও আমার সাথে যে প্রতারণা করা হয়েছে সেটার বিচার চেয়ে একটি মামলা করেছি।
এদিকে অভিযুক্ত মুকসেদ আলীকে ফোন নাম্বারে ফোন করা হলে তাকে পাওয়া যানি।
ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি কামাল হোসেন বলেন, মামলার বিষয়টি শুনেছি। একপক্ষ ফোনে বলেছে সেখানে একটি সমস্যা হয়েছে। তবে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেব।