ঢাকা, বুধবার ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

ঠাকুরগাঁওয়ে খাবারের অভাবে সেহেরী খেতে পারেনি রোজাদাররা

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি: | প্রকাশের সময় : বুধবার ১৩ এপ্রিল ২০২২ ০৪:১২:০০ অপরাহ্ন | দেশের খবর

 ঠাকুরগাঁও শহর ও বাণিজ্যিক এলাকার অনেক রোজাদাররা খাবারের অভাবে সেহেরী খেতে পারেনি বলে জানা গেছে। এতে করে ধর্মপ্রাণ কিছু মুসলিম শুধুমাত্র পানি খেয়ে রোজা রেখেছে। কিন্তু পরিস্থিতির শিকার বড় একটি অংশই রোজা রাখতে পারেনি।

ঠাকুরগাঁও জেলা জুড়ে চলমান হোটেল-রেস্তোরা-বেকারির শ্রমীক ও মালিকদের ডাকা ধর্মঘট ঘিরে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।

বুধবার দুপুরে হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন ও মালিক সমিতির উদ্যোগে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়। এ সময় তারা হোটেলের জরিমানা বাতিল ও শ্রমিকদের মুক্তি দাবি করেন।

ব্যবসাসহ বিভিন্ন প্রয়োজনে বাইরের জেলা থেকে মানুষেরা আসে ঠাকুরগাঁও জেলায়। এদের মধ্যে রোজাদারদের বড় অংশই সেহেরীর জন্যে হোটেলে উপরে নির্ভর করে। এছাড়াও শহরস্থ অনেক স্থায়ী অস্থায়ী বসবাসকারীরা সেহেরির জন্যে হোটেল বা রেস্তোরাঁর উপরে নির্ভর করে। তবে আগেরদিন রাতে হঠাৎ হোটেল শ্রমিক ও মালিকদের ডাকা ধর্মঘটের কারনে বিপাকে পরেছে এসকল মানুষ।

অসুস্থ ভাইকে নিয়ে পাশের উপজেলা থেকে ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছে আঃ জব্বার। আব্দুল জব্বার জানান, হাসপাতালে কোনো ক্যান্টিন নেই। এখানে সেহেরির সময় খাবারো দেয়না। রুগী নিয়ে হাসপাতালে অবস্থান করা আমার মতো প্রায় ৪০০ স্বজন সেহেরীর জন্যে হোটেলের উপরে নির্ভরশীল। ধর্মঘটের কারনে কেউ সেহেরী খেতে পারিনি।

বগুড়া থেকে আসা কাঁচামাল ব্যবসায়ী রাজ্জাক বলেন, সেহেরির সময় অনেক খুঁজাখুঁজি করেছি। তবে কোনো হোটেল খোলা পাইনি। ব্যবসার কাজে আসা কাঁচামাল আড়তের সবাই একই ভোগান্তিতে পরেছে।

এদিকে দুই হোটেল শ্রমিকের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি পুরন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত রাখা হবে বলে জানিয়েছেন ঠাকুরগাঁও জেলা হোটেল ও বেকারি শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি জয়নাল আবেদিন।

সমস্যা সমাধানে প্রশাসন কাজ করছে বলে জানিয়েছেন ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক মাহাবুবুর রহমান। তবে শ্রমিকদের দাবি অযৌক্তিক বলে জানিয়েছেন তিনি।

উল্লেখ্য যে, মঙ্গলবার নিরাপদ খাদ্য আইন ২০১৩' এর অধীন 'বিশুদ্ধ খাদ্য আদালত' পরিচালনা করেন ঠাকুরগাঁও চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিত্যানন্দ সরকার। উক্ত আইনের তফসিল এ বর্নিত ৩৪ ধারায় অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় শহরের চৌরাস্তার হোটেল গোওসিয়া ও হোটেল  রোজ এর ম্যানেজার -দ্বয়ের প্রত্যেককে তিন লাখ টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে এক বছর বিনাশ্রম কারাদন্ড আরোপ করা হয়। দুইটি হোটেলে ৩ লক্ষ করে ৬ লক্ষ টাকা জরিমানা করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে রাতেই কর্মবিরতি ঘোষনা করে জেলার সকল হোটেল, রেস্তোরাঁ ও বেকারি শ্রমিকরা। তাদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে মালিক সমিতিও হোটেল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়।