ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

ডাঃ শাহ আলীর ভুল চিকিৎসায় ক্ষতিপূরণ ও বিচার দাবি করে বগুড়া সাংবাদিক সম্মেলন

বগুড়া প্রতিনিধি : | প্রকাশের সময় : শনিবার ৪ জুন ২০২২ ০৭:৪৩:০০ অপরাহ্ন | দেশের খবর

ডাক্তারের ভুল চিকিৎসার প্রতিকার চেয়ে বগুড়া প্রেসক্লাবের সংবাদ সম্মেলন করেছে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের কন্যা মোছাঃ ইসকত জাহীন বিথী। শনিবার দুপুরে বগুড়া প্রেসক্লাবের লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, স্নাতক পাস করে আমি ঢাকায় একটি গার্মেন্টসে চাকরি করছিলাম। সেখানে স্থানীয় এক যুবককে বিয়ে করে ঘর সংসার শুরু করে। কিন্তু হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পডায় বিথী ২ বছর আগে পিতার বাড়িতে আসে। বিগত ২০২০ সালে জানুযারি মাসে তাড়াশের গুল্টা বাজারে আব্দুর রহমানের ছেলে ফেরদৌস এর প্ররোচনায় বিথীর বাবা ও ভাই শেরপুরের সেবা নামে একটি ক্লিনিকে নিয়ে আসে। এখানে ওই ক্লিনিকের ডাঃ এস এইচ এম শাহ আলী চিকিৎসা শুরু করেন। ডাক্তার বিথীকে দেখে ৬টি পরীক্ষা নিরীক্ষা করে বলেছিল তার জন্ডিস, ডায়াবেটিস এবং জরায়ুতে টিউমার হয়েছে। জরুরী ভিত্তিতে জরায়ুতে অস্ত্রোপাচার না করলে পরিস্থিতি আরো খারাপ হবে। অপারেশন করতে ৫০ হাজার টাকা লাগবে বলে জানান। টাকা সংগ্রহ করে ২১ জানুয়ারি ওই ক্লিনিকে অস্ত্রপাচার করা হয়। 

অপারেশনের পর বিথী সুস্থ না হয়ে আরো বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় বিথীকে নিয়ে বগুড়া শহরে প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার রোকশানা বানুর কাছে আসেন। ডাঃ রোকশানা তাকে বলে ভুল অপারেশন হয়েছে। তিনি বিথীকে পুনরায় ডাক্তার এস এইচ এম শাহ আলীর কাছে যেতে বলেন। ওই রোগী তখন ডাঃ শাহ আলীর কাছে গেলে তিনি আবারও অপারেশন করে। এতে তার শরীর আরো বেশি খারাপ হয়ে যায। এ নিয়ে ডাক্তারের সঙ্গে কথা বললে ডাক্তার ও ক্লিনিকের লোকজন বিথীর বাবা মাকে ক্লিনিক থেকে বের করে দেয়। পরে নিরুপায় হয়ে বগুড়া ইবনে সিনায় ডাক্তার স্বপন কুমার সাহাকে দেখানো হয়। তিনি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ডাক্তার হাসিনা বানু কে দেখাতে পরামর্শ। ডাক্তার হাসিনার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন ওই রোগীকে। কিন্তু করোনার কারণে চিকিৎসা শেষ না করেই আমি বাড়িতে চলে আসি। পরবর্তীতে দিনাজপুর পার্বতীপুর ল্যাম্প হাসপাতালে বিদেশি ডাক্তার দ্বারা চিকিৎসা করালে শারীরিকভাবে সুস্থ হলেও শরীরের চলাচলে ক্ষমতা ফিরে পাই না। এদিকে বিথীর চিকিৎসা করাতে তার পিতা স্বর্ণ ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা ঋণ করে। যার সুদ চালিয়ে গেলেও মূল টাকা শোধ করা তার পিতার পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। পুরো পরিবার এখন নিঃস্ব হয়ে পথে বসার উপক্রম হয়েছে। 

এমতাবস্থায় ২০২০ সালের ১৯ নভেম্বর ডাক্তার শাহ আলীসহ তার সহযোগী পাঁচজনকে আসামি করে বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শেরপুর আমলি আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নম্বর ৫১৫/২০। আদালত মামলার তদন্ত করে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিলে ওই থানার এসআই আব্দুস সামাদ এর উপর তদন্তের ভার ন্যস্ত করেন। তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা উভয় পক্ষকে নিয়ে সালিশের আয়োজন করেন। শালিসে বিথী তার চিকিৎসার জন্য ৫ লাখ টাকা এবং ভবিষ্যতের জন্য ৫ লাখ টাকার মোট ১০ লক্ষ টাকা দাবি করেন। কিন্তু এতে আসামিপক্ষ সম্মতি জানালো পরবর্তীতে ওই তদন্তকারী কর্মকর্তার রহস্যজনক কারণে মামলায় হাজিরা না দেবার জন্য হুমকি ধামকি দেয় বিথীকে। এদিকে ভূল অপারেশনের কারণে মা হবার ক্ষমতা হারিয়েছে বিথী। এ কারণে স্বামী সাথে সংসার ভেঙ্গে গেছে। অপরদিকে শারীরিক অসুস্থতায় কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলায় তার রোজগারের পথও বন্ধ হয়ে গেছে। এমতবস্থায় আর্থিক ক্ষতিপূরণ, ডাঃ শাহ আলী ও তার সহযোগীদের বিচার, হয়রানিকারী পুলিশ কর্মকর্তার বিচারের দাবিতে তিনি শনিবার বগুড়া প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন।