ঢাকা, শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ই আশ্বিন ১৪৩১

ডিজিটাল জনশুমারীতে খুশি ঠাকুরগাঁওয়ের সাধারণ মানুষ

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি: | প্রকাশের সময় : শনিবার ১৮ জুন ২০২২ ০১:১৪:০০ অপরাহ্ন | দেশের খবর

করোনা মহামারী ও বিভিন্ন কারনে কয়েক দফায় পেছানোর পর সপ্তাহব্যাপী শুরু হয়েছে ‘জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২’। সপ্তাহব্যাপী এ শুমারি চলবে ১৫ -২১ জুন পর্যন্ত। এটি দেশের ষষ্ঠ জনশুমারি। 

 

দেশের মোট জনসংখ্যা কত, তা জানতেই মূলত রেলস্টেশন, লঞ্চ টার্মিনাল, বাসস্ট্যান্ডসহ ভাসমান মানুষ গণনাসহ তাদের সম্পর্কে মৌলিক জনমিতিক, আর্থ-সামাজিক ও বাসগৃহ সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহের মধ্যদিয়ে শুরু হয়েছে জনশুমারি৷ 

 

তবে এবারের শুমারীতে ব্যবহার করা হচ্ছে ডিজিটাল ডিভাইস৷ ৩৫ টি তথ্য দেওয়ার মাধ্যমে দ্রুত সময়ের মধ্যে তথ্য সংগ্রহ করা যাচ্ছে। শুমারীতে ডিজিটাল ডিভাইস ট্যাবলেট ব্যবহার করে কম্পিউটার অ্যাসিসটেড পারসোনাল ইন্টারভিউং (সিএপিআই) পদ্ধতিতে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। সহজে ও সুনির্দিষ্টভাবে শুমারির গণনা ও একাধিকবার গণনা না হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সিস্টেম (জিআইএস) ও গুগলে সমন্বয় করে ডিজিটাল ম্যাপ প্রস্তুত করা হয়েছে৷ 

 

ডিজিটাল এ শুমারী বাস্তবায়নে সারাদেশে একযোগে তথ্য সংগ্রহের জন্য তিন লাখ পঁচানব্বই হাজার ট্যাবলেট ব্যবহার হচ্ছে। এ ছাড়াও মাঠ পর্যায়ে সংগৃহীত তথ্য সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে গাজীপুর কালিয়াকৈরে স্থাপিত বাংলাদেশ ডেটা সেন্টার কোম্পানি লিমিটেড এর টায়ার আইভি সিকিউরিটি সমৃদ্ধ ডেটা সেন্টা ব্যবহার করা হচ্ছে৷ মাঠপর্যায় থেকে বিডিসিসিএল হয়ে বিবিএস সার্ভারে আসার পূর্ব পর্যন্ত সংগৃহীত সকল তথ্যের নিরাপত্তা শতভাগ নিশ্চিত করা হচ্ছে৷ 

 

প্রথমবারের মত ডিজিটাল জনশুমারীতে আনন্দের হাসি ফুটেছে ঠাকুরগাঁওয়ের সাধারণ মানুষের। স্বল্প সময়ের মধ্যে পরিবারের সকল তথ্য দিতে পেরে ভোগান্তি বিহীন জনশুমারীকে সাধুবাদ জানিয়েছেন জেলার বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ। 

 

অপরদিকে স্বল্প সময়ে অনেক পরিবারের তথ্য সংগ্রহ করতে পেরে কাজে মনযোগ বেড়েছে শুমারী কর্মীদের।

 

তথ্য প্রদান করার পর ঠাকুরগাঁও পৌরসভার টিকাপাড়া এলাকার বাসিন্দা মহসীন বলেন, প্রথমবারের মত  ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে জনশুমারী হচ্ছে৷ এত অল্প সময়ে সকল তথ্যগুলো দিতে পারব ভাবতে পারিনি৷ পরিবারের সকলের তথ্য গুলো কিছু সময়ের মধ্যে সংগ্রহ করে নিলেন তারা৷ কোন ধরনের ঝামেলা ছাড়াই৷ 

 

ঠাকুরগাঁও সদরেরর সালান্দর এলাকার রফিকুল ইসলাম বলেন, এর আগে কয়েকবার জনশুমারীতে তথ্য দিয়েছি। তথ্য গুলোতে প্রায় দেড় থেকে দুই ঘন্টা সময় লেগে যেত৷ আর নানান ধরনরে কাগজ লাগতো। আজকে মাত্র কয়েক মিনিট সকল ধরনের তথ্য দিয়ে দিলাম। কোন প্রকার ভোগান্তি ছাড়াই। এমন একটি উদ্যোগ নেওয়ায় কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানায়৷ 

 

তথ্য সংগ্রহকারী শুমারীকর্মী মীর রুহুল আমিন বলেন, ডিজিটাল পদ্ধতিতে আমরা তথ্য সংগ্রহ করছি৷ কোন প্রকার ভোগান্তি ও ঝামেলা ছাড়াই স্বল্প সময়ের মধ্যে আমরা সকল তথ্য অর্ন্তরভূক্ত করতে পারছি। এতে সাধারণ মানুষেদের কোন সমস্যা হচ্ছেনা আমরাও কোন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয়নি৷ 

 

আরেক শুমারীকর্মী সাদিয়া আক্তার বলেন, জনশুমারী করার আগে  আমরা প্রশিক্ষণ নিয়েছি৷ কিভাবে আমরা ডিজিটাল ডিভাইসে তথ্যযুক্ত করব তা শেখানো হয়েছে। এবারে খুব সহজে ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে আমরা স্বল্প সময়ে তথ্য যোগ করতে পারছি। 

 

ঠাকুরগাঁও জেলা পরিসংখ্যান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আবু সালেহ মোঃ রব্বানী বলেন, চলমান জনশুমারীতে ঠাকুরগাঁও জেলায় আমাদের ৩৪৭৮ টি ডিভাইস ব্যবহার করা হচ্ছে। পুরো জেলা জুড়ে আমাদের ৩৪৭৮ জন শুমারীকর্মী, ৬০৪ জন সুপারভাইজার ও ৩৫ জন জোনাল অফিসার কাজ করছেন৷ এবারেই প্রথম ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে জনশুমারী হচ্ছে। কোন ঝামেলা ছাড়াই তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। এতে করে শুমারীকর্মী ও সাধারণ মানুষের মাঝে উৎসাহ ও উদ্দীপনা কাজ করছে।