ঢাকা, শুক্রবার ৩১ জানুয়ারী ২০২৫, ১৮ই মাঘ ১৪৩১

তুরাগ তীরে লাখো মুসল্লির ঢল, বৃহত্তম জুমার নামাজ দেড়টায়

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশের সময় : শুক্রবার ৩১ জানুয়ারী ২০২৫ ০১:৩৪:০০ অপরাহ্ন | জাতীয়

গাজীপুরের টঙ্গীতে শুরু হয়েছে বিশ্ব ইজতেমার ৫৮তম আসর। বৃহস্পতিবার মাগরিবের পর ভারতের মাওলানা ইব্রাহিম দেওলার আম বয়ানের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হওয়া এই ইসলামী জমায়েতে দেশ-বিদেশ থেকে লাখো মুসল্লির আগমন ঘটেছে।

 

আজ শুক্রবার ফজরের নামাজের পর থেকে পর্যায়ক্রমে চলছে বয়ান, আর বেলা দেড়টায় অনুষ্ঠিত হবে বৃহত্তম জুমার নামাজ।

 

বিশ্ব ইজতেমার মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ইজতেমায় অংশ নিতে ইতোমধ্যে ৭২টি দেশ থেকে ২ হাজার ১৫০ জন বিদেশি মেহমান এসেছেন, যাঁরা নির্ধারিত খিত্তায় অবস্থান করে দেশ-বিদেশের আলেমদের বয়ান শুনছেন। রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের এলাকা থেকেও বিপুলসংখ্যক মুসল্লি জুমার নামাজে অংশ নিতে ইজতেমা মাঠে জড়ো হচ্ছেন।

 

শুক্রবার সকালে ইজতেমা মাঠে সরেজমিনে দেখা গেছে, তুরাগ নদের তীরে বাঁশ ও চটের তৈরি শামিয়ানার নিচে হাজার হাজার মুসল্লি বয়ান শুনছেন, কেউবা রান্না, অজু ও গোসলের কাজে ব্যস্ত। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা মুসল্লিরা দলবদ্ধ হয়ে মাঠে প্রবেশ করছেন, কারও হাতে ব্যাগ, কারও কাঁধে কিংবা মাথায় পোঁটলা।

 

গত কয়েক বছর ধরে তাবলিগ জামাতের দুই গ্রুপ—মাওলানা জোবায়ের ও মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারীরা আলাদাভাবে ইজতেমা আয়োজন করতেন। তবে এবার মাওলানা জোবায়ের অনুসারীরা এককভাবে দুটি ধাপে ইজতেমা করছেন।

 

প্রথম ধাপ: ৩১ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি। এতে ৪১ জেলা ও ঢাকার একাংশের মুসল্লিরা অংশ নিচ্ছেন।

দ্বিতীয় ধাপ: ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি।

 

প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের আখেরি মোনাজাত যথাক্রমে ২ ফেব্রুয়ারি ও ৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে।

তৃতীয় ধাপ: ১৪ থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি। এতে অংশ নেবেন মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারীরা। এ ধাপের আখেরি মোনাজাত হবে ১৬ ফেব্রুয়ারি। এরপর ১৮ ফেব্রুয়ারি প্রশাসনের কাছে ইজতেমা মাঠ বুঝিয়ে দেওয়া হবে।

 

ইজতেমা উপলক্ষে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার র‌্যাবের অস্থায়ী ক্যাম্পে এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব মহাপরিচালক এ কে এম শহিদুর রহমান বলেন, "ইজতেমাকে ঘিরে বড় কোনো নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই। শুধুমাত্র দুই পক্ষের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ছাড়া কোনো উদ্বেগের কারণ নেই। আমরা আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবেই ইজতেমা সম্পন্ন হবে।"

 

বিশ্ব ইজতেমার এ সুবিশাল জমায়েত শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খলভাবে সম্পন্ন করতে প্রশাসনের পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবকরাও কাজ করছেন। মুসল্লিদের যাতায়াত, খাবার, চিকিৎসা ও অন্যান্য ব্যবস্থাপনা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য বিশেষ কমিটিও গঠন করা হয়েছে।

 

ইজতেমার প্রথম ধাপের আখেরি মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে ২ ফেব্রুয়ারি। দেশ-বিদেশের লাখো ধর্মপ্রাণ মুসলমানের অংশগ্রহণে এ আয়োজন এক মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে।

 

বায়ান্ন/এএস