নাটোর সদর থানা থেকে শহরের তৃষা ক্লিনিকের পাশের গলির দুরত্ব বড়জোর ১০০ গজ। একটি বাড়িতে গড়ে উঠেছে মাদকের আখড়া। প্রতিদিন ফজরের নামাজের পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত সেখানে হেরোইন ও ইয়াবা বেচাকেনা এলাকার মাদকবিক্রেতা বলে পরিচিত একটি পরিবার । এই পরিবারের প্রতিটি সদস্যই মাদকব্যবসার সাথে জড়িত । মাঝে মধ্যেই পুলিশ তাদের আটক করলে জামিনে বের হয়ে এসে ফের মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে মাদক সম্রাট রফিজা ও তুষার পরিবার। নাটোর সদর থানার দেয়াল ঘেঁষেই তাদের মাদকের আখড়া। এ পরিবারের কারণে এলাকার যুবসমাজ মাদকাসক্ত হয়ে ধ্বংসের পথে বলে মনে করছে এলাকার সচেতন মহল।
বুধবার বিকেলে মাদকে জড়িতদের পরিবারের সদস্যদের ধরতে বড় ধরনের অভিযান চালিয়েছে থানা পুলিশ। অভিযানে গ্রেপ্তার হয়েছে শহরের কানাইখালী মহল্লার রোকন আলীর স্ত্রী কুখ্যাত মাদক সমাজ্ঞী রওশন আরা (৪৮),দেবর মাদক সম্রাট তুষার শেখ (৩২)এবং তার স্ত্রী মনীষা আকতার সুমী (২৬) ।এ সময় তাদের কাছ থেকে ৬ গ্রাম হেরোইন এবং বিক্রির ১৩ হাজার টাকা ও হেরোইন বিক্রির জন্য প্রস্তুত করার কাজে ব্যবহূত বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।
নাটোর সদর থানা পরির্দশক (এস,আই) রুবেল উদ্দীন জানান,তিতাস ও রফিজা খাতুনের পরিবার র্দীঘদিন ধরে মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত । পুলিশ একাধিকবার অভিযান চালিয়ে মাদকসহ কারবারিদের গ্রেপ্তার করার পর তারা জামিনে এসে মাদক ব্যবসা করে যায়।পুলিশের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে মিথ্যা অভিযোগ করে ।
নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনসুর রহমান জানান, নাটোর সদর থানা পুলিশ ব্লক রেইডএর মাধ্যমে তিতাস পরিবারের তিনজন মাদক ব্যবসায়ী গ্রেপ্তার করে।তাদের বিরুদ্ধে মাদক আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।বাঁকিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে ।
এলাকাবাসীরা জানান ,নাটোর সদর থানা থেকে মাত্র ১০০ গজ দূরে তৃষা ক্লিনিকের সামনে গলি এবং আল মদীনা ক্লিনিকের পাশের গলিতে প্রতিদিন ভোর থেকে শুরু করে গভীর রাত পর্যন্ত প্রতিদিন মাদক সেবীদের মেলা বসে। মেলার আয়োজক মাদক ব্যবসায়ী টনিক তিতাস, তাঁর মা রফিজা বেগম ও মামা রশিদুল, রবিউল, তুষার এবং তাদের কিছু আত্মীয় । তাদের মাদক বিক্রয়ের জন্য রয়েছে কয়েকজন নির্ধারিত ব্যক্তি । এরা সবাই পুলিশের তালিকাভুক্ত মাদক বিক্রেতা। এই পরিবারটির কারণে এলাকার তরুণ সমাজ মাদকের ছোবলে ধ্বংস হচ্ছে।গ্রেফতার হয় আবার ছাড়াও পায়। স্বামীরা জেলে থাকলে স্ত্রীরা মাদক ব্যবসা চালান।
বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ আবুল কালাম আজাদ জানান,তিতাসের পরিবারটি চিহ্নিত মাদক কারবারি পরিবার। এ পরিবারের কারণে নাটোর পৌরসভার তরুণ প্রজন্মের অনেকেই মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে। পুলিশ বারবার গ্রেপ্তার করার পর তারা কীভাবে থানার পাশে আস্তানা গড়ে তুলে দিনদুপুরে মাদক ব্যবসা করে আসছে- এ প্রশ্ন এখন পুরো নাটোর পৌরসভার জনগণের। পরিবারটির বিরুদ্ধে আইনগত লড়াইয়ের পাশাপাশি সামাজিক লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। তিতাসের ছত্রছায়ায় যারা আছে তাদেরও চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।