মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার বন্যাদুর্গত এলাকায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ পেয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়েছে।
সোমবার দুপুরে উপজেলা সদরের কামিনীগঞ্জ বাজারে চালানো এ অভিযানে দুটি মুদিদোকানের মালিককে আড়াই হাজার টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ ছাড়া কয়েকজন ব্যবসায়ীদের সতর্ক করে দেওয়া হয়।
ভুক্তভোগী লোকজন ও উপজেলা প্রশাসনের সূত্রে জানা গেছে, অতিবৃষ্টি ও উজান থেকে নামা পাহাড়ি ঢলে ১৭ জুন থেকে জুড়ী উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়। এই সুযোগে স্থানীয় অনেক ব্যবসায়ী হঠাৎ করেই নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন জিনিসের দাম বাড়িয়ে দেন। অনেকে বিষয়টি জানিয়ে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের কাছে মুঠোফোনে খুদে বার্তা পাঠান।
স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি বলেন, বন্যায় বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিউবো) স্থানীয় উপকেন্দ্রে পানি উঠে যাওয়ায় বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। এ কারণে এলাকায় বিদ্যুৎ না থাকায় মোমবাতির চাহিদা বেড়ে গেছে। এই সুযোগে দোকানিরা ১০ টাকা মূল্যের প্রতি পিস মোমবাতি ১৫ টাকায় বিক্রি করছিলেন।
তিন-চার দিন আগে মুড়ির কেজি ৬০ টাকা থাকলেও এখন নেওয়া হচ্ছে ৬৫-৭০ টাকা। পেঁয়াজ-রসুনের দামও কেজিপ্রতি ৫ টাকা বাড়ানো হয়েছে। ৫০ কেজির চালের বস্তার দামও ২০০ থেকে ৩০০ টাকা করে বেশি নেওয়া হচ্ছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) রতন কুমার অধিকারীর নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালতের দলটি উপজেলা সদরের কামিনীগঞ্জ বাজারে অভিযানে যান।
এ সময় মূল্যতালিকায় ঘষামাজা করা ও মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য রাখার দায়ে বিসমিল্লাহ স্টোরে ৫০০ এবং মায়ের দোয়া স্টোরে দুই হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। অভিযানকালে ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক কয়েকজন ব্যবসায়ীকে সতর্ক করে দেন। এ সময় জুড়ী থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) সিরাজুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে জানিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক সহকারী কমিশনার (ভূমি) রতন কুমার অধিকারী বলেন, হঠাৎ করে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ আসে তাদের কাছে। তাই এ অভিযান চালানো হয়। একদিকে বন্যায় মানুষ কষ্টে আছে, অন্যদিকে ব্যবসায়ীরা জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে মানুষকে আরও কষ্টে ফেলা হচ্ছে। এটা অমানবিক।