পূর্ব ঘটনার জের দরে ববি শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করে বিএম কলেজের সন্ত্রাসীরা এতে ১০০ জনের অধিক শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস ভাঙচুর করে। সন্ত্রাসী কর্তৃক হামলায় রেহাই পায়নি মটরসাইকেল চালক ও।
পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী ববির দুই শিক্ষার্থীকে মারধর করে এবং জোরপূর্বক চাঁদাবাজের দায় স্বীকার করে নেওয়া হয়। পরবর্তীতে বিষয়টা সমাধান করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বাস নিয়ে গেলে অতর্কিত শিক্ষার্থীদের উপর ঝাঁপিয়ে পরে এবং বাস ভাঙচুর করে। এবং ববির কয়েকজন শিক্ষার্থীকে জিম্মি করে রাখে।
এতেই ক্ষ্যান্ত হননি বিএম কলেজের শিক্ষার্থীরা ।তারা দেশীয় অস্ত্রসহ ববি শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালায়।ববি শিক্ষার্থীরা নিজেদের রক্ষা করার জন্য গেলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয় ।ববি শিক্ষার্থীদের উপর মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে দেশীয় অস্ত্রসহ হামলা চালায়।এতে ১০০ জনের অধিক শিক্ষার্থীরা আহত হন এবং একজন মোটরসাইকেল চালককে কোপ দিয়ে গুরুতর আহত করেন শিক্ষার্থীরা। জরুরী চিকিৎসার জন্য তাকে সেবাচিম থেকে ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়।
ভুক্তভোগী চালক বলেন,"আমি গাড়ি চালাই আইতেছি এমন সময় বিএম কলেজের ছাত্ররা এলোপাতারি কোপানো শুরু করে দিয়েছে। কি দা দিয়ে কুপিয়ে আমার পেটের নাড়িভুড়ি বের করে দিয়েছে।"
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের আহত শিক্ষার্থী আকিবুল ইসলাম সাকিব বলেন, "আমরা যখন নিজেদের প্রতিরক্ষা করতে যাই তখন আমরা ৫ জন বিচ্ছিন্ন হয়ে পরি এবং আমার মাথায় পিছন থেকে হটস্টিক দিয়ে বাড়ি দেওয়া হলে আমি অজ্ঞান হয়ে পরি তখন আমাদের বিএম কলেজের শিক্ষার্থীরা জিম্মি করে রাখে।অন্য সবাইকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করা হয় এবং সবাইকে নির্যাতন করা হয়।আমার মাথায় ৬ টি সেলাই লাগছে।"
সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ রিপন বলেন,"পূর্ব শত্রুতার বসবর্তী হয়ে গতকাল রাতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীকে চাঁদাবাজির মিথ্যা অভিযোগ এনে মারধর করে বিএম কলেজের কতিপয় শিক্ষার্থী, এমন সংবাদ শোনা মাত্র, আমরা কয়েকজন সেখানে যাই ঘটনার সত্যতা যাচায়ের জন্য। তারা আমাদের উপস্থিত হওয়া মাত্র রামদা ছুরি সহ এগিয়ে আসে এবং কোন কথা বলার সুযোগ না দিয়েই অতর্কিত হামলা চালায় এসময় আমাদের প্রায় ২০ জন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়।"
সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম বলেন,"বুধবার রাত আনুমানিক ৯টার দিকে ব্রজমোহন কলেজের শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত ফেইসবুক গ্রুপে ১০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও পাওয়া যায়। সেখানে দেখা যায় বিএম কলেজের শিক্ষার্থীরা বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইজন শিক্ষার্থীকে চাঁদাবাজ আখ্যা দিয়ে আটক করে।
পরবর্তীতে ববি শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট গ্রুপ ‘লিংকার্স’এ সেই ভিডিও প্রকাশিত হলে শিক্ষার্থীদের একটি টিম তাদের ছাড়িয়ে আনার উদ্দেশ্যে ‘আগুনমুখা’ বাস নিয়ে রওনা হয়।এই খবর পাওয়ামাত্র বিএম কলেজের শিক্ষার্থীরা চাপাতি, রডসহ দেশীয় অস্ত্রসহ ববি শিক্ষার্থীদের উপর অতর্কিত হামলা চালায় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস ভেঙে চুড়মার করে দেয়। এই খবর পাওয়ামাত্র অন্যান্য ক্ষুব্ধ ববি শিক্ষার্থীরা বিএম কলেজে যায় এবং দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়।এতে বহু শিক্ষার্থী আহত হয়। এসময় বিএম কলেজের শিক্ষার্থীদের হাতে দা, রামদা, চাপাতিসহ দেশীয় অস্ত্র থাকলেও ববি শিক্ষার্থীদের হাতে লাঠি ছাড়া ছিলোনা তেমন কিছুই। ঘটনায় জরিত না থাকা সত্বেও এক মোটরসাইকেল চালককে গুরুতর আহত করে ব্রজমোহন কলেজের শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে উভয় প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা এবং সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে ও ঘটনার সমাধান করে।"
রাতে সেনাবাহিনী অবস্থান নিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেন এবং শিক্ষার্থীদের আস্বস্ত করে জিম্মি করা শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করে ববি প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করে ।ববি প্রশাসনের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ দাবি করে এবং হামলার দায় চাপিয়ে দিয়ে একটা লিখিত নেওয়া হয়। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করছেন ববি প্রশাসনকে জিম্মি করে তারা এই লিখিত নিয়েছেন।