বেনাপোলের বিপরীতে ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য সম্পাদনে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) কার্ডবিহীন ট্রান্সপোর্ট ও সিঅ্যান্ডএফ সদস্যদের বন্দরে ঢুকতে না দেওয়ায় সোমবার (১৭ জানুয়ারি) সকাল থেকে বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে দু‘দেশের মধ্যে আমদানি বাণিজ্য বন্ধ রয়েছে।
তবে বেনাপোল বন্দর দিয়ে রফতানি কার্যক্রম চলছে। এর আগে একই দাবিতে গত শনিবার (১৫ জানুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভারত থেকে কোন পণ্যবাহী ট্রাক বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করেনি। দু‘দিন পর পর নানা সমস্যায় এ পথে আমদানি-রফতানি বন্ধ করে দেওয়ায় ব্যবসায়ীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
বনগাঁ গুডস ট্রান্সপোর্ট এসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক বুদ্ধদেব বিশ^াস জানান, এতোদিন আমরা সংগঠনের পরিচয়পত্র নিয়ে পেট্রাপোল বন্দরে আমদানি-রফতানির কাজ করে আসছিলাম। গত শনিবার (১৫ জানুয়ারি) পেট্রাপোল বিএসএফ থেকে বলা হয় ভারতীয় কাস্টমস, বন্দর, সিএন্ডএফ এজেন্ট স্টাফ ও ট্রান্সপোর্ট এসোসিয়েশনের যৌথ স্বাক্ষরের পরিচয় পত্র ছাড়া কাউকে বন্দর এলাকায় প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। এ কারণে শনিবার ৮ ঘন্টা বন্ধ থাকে আমদানি-রফতানি। পরে এক বৈঠকে আলোচনার পর পুনরায় চালু হয় আমদানি-রফতানি। আমরা সময় চাইলেও তারা আজ সোমবার (১৭ জানুয়ারি) পর্যন্ত সময় দেন। ২ দিনের মধ্যে ৪টি সংস্থা থেকে পরিচয়পত্র সংগ্রহ করাও কঠিন। সে কারণে বাধ্য হয়ে বাংলাদেশে রফতানি পণ্য বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া কোন উপায় নেই। সবার সাথে কথা বলে রফতানি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ এ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান জানান, হঠাৎ করে পেট্রাপোল বন্দরে নিরাপত্তায় নিয়োজিত বিএসএফ সদস্যরা সিদ্ধান্ত নেয় কার্ডবিহীন কোনো ভারতীয় ট্রান্সপোর্ট ও সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ বন্দরে প্রবেশ করবে না। এতে কাগজপত্রের আনুষ্ঠানিকতা বিঘ্ন ঘটায় শনিবার ৮ ঘন্টা বন্ধ থাকে ভারত থেকে আমদানি-রফতানি কার্যক্রম। পরে বিএসএফ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ভারতীয় সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ সদস্যদের সমঝোতা বৈঠকে ৮ ঘণ্টা পর বিকাল ৪ টায় পুনরায় বেনাপোল ও পেট্রাপোল বন্দরের মধ্যে বাণিজ্য স্বাভাবিক হয়। আজ সোমবার আবারও একই দাবিতে রফতানি বন্ধ করে দেয় ভারতীয় ট্রান্সপোর্ট শ্রমিকরা।
উল্লেখ্য, প্রতিদিন ভারত থেকে সাড়ে ৩০০ ট্রাক বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানি ও ১৫০ ট্রাক পণ্য ভারতে রফতানি হয়ে থাকে। প্রতিদিন আমদানি পণ্য থেকে সরকারের ২০ থেকে ৩৫ কোটি টাকা পর্যন্ত রাজস্ব আয় হয়। যাত্রী যাতায়াত হয় দিনে ৬০০ জনের মতো। বর্তমানে করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও দেশের অর্থনৈতিকে সচল রাখতে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে বাংলাদেশ বাণিজ্য ও যাত্রী যাতায়াত সচল রাখার চেস্টা করলেও ভারতীয়রা একের পর এক নানা সমস্যা সৃস্টি করে বাণিজ্য বন্ধ করে দিচ্ছে। এমনিতে বনগাঁ পৌর পার্কিং এ এক একটি ট্রাক এক মাসেরও অধিক সময় আটকে রাখা হচ্ছে। তারপরও আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে অচলাবস্থা সৃস্টিতে বাণিজ্যে মারাত্মক প্রভাব পড়ছে। এসব কারণে ব্যবসায়ীরা এ বন্দর থেকে মুখ ঘুরিয়ে অন্য বন্দরে চলে যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে বেনাপোল স্থল বন্দর কর্তপক্ষের উপ পরিচালক আব্দুল জলিল বলেন, এটা ভারতের আভ্যন্তরীণ ব্যাপার। আামাদের এখানে কোন হাত নেই। তাপরও আমদানি-রফতানি সচল রাখতে আমরা ভারতীয় বন্দরের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছি।