নৌকায় চড়েও নিজের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারলেন না জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু। কুষ্টিয়া-২ (ভেড়ামারা-মিরপুর) আসনে কারচুপি হয়েছে বলেই হারের মুখ দেখেছেন বলে তিনি অভিযোগ করেছেন।
সোমবার (৮ জানুয়ারি) ভেড়ামারা উপজেলার গোলাপনগর গ্রামের নিজ বাড়িতে স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় তিনি এ অভিযোগ করেন।
১৪ দলীয় জোটের নেতা ইনু বলেন, সারা দেশে একটা বিরূপ পরিস্থিতির মধ্যে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রক্ষায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও শেষ পর্যন্ত একভাবে জনগণের অংশগ্রহণ ও সাড়া পাওয়া গেছে। সেদিক থেকে মনে হয় নির্বাচনী কাজটা নির্বিঘ্নে শেষ হয়েছে। অন্যান্য সব জায়গায় কীভাবে নির্বাচন হয়েছে সেটা আমাকে দেখতে হবে। তবে কুষ্টিয়া-২ আসনে যেভাবে নির্বাচন হলো- আমি মনে করি পরিকল্পিতভাবে ভোট কারচুপি হয়েছে।
তিনি বলেন, ভেড়ামারা-মিরপুর আসনে প্রশাসনের রহস্যজনক নীরবতা ও নিষ্ক্রিয়তার কারণে আমি ক্ষতিগ্রস্ত ও পরাজিত হয়েছি। এলাকায় সবাই জানেন, কালো টাকার ছড়াছড়ি, মাস্তানি পেশীশক্তির প্রভাব থাকলেও প্রশাসনের নীরবতার কারণেই আমি পরাজিত হয়েছি। আমার নির্বাচনী এলাকায় প্রশাসনের পরিকল্পিত নিষ্ক্রিয়তা পরাজয় নিশ্চিত করতে ভূমিকা রেখেছে। কেন প্রশাসনের এই উদ্দেশ্যমূলক নিষ্ক্রিয়তা, সেটা আমি পরে ভেবে দেখবো।
নির্বাচন পরবর্তী সিদ্ধান্ত সম্পর্কে জাসদ সভাপতি বলেন, কেবল নির্বাচন শেষ হলো। এই মুহূর্তে আমি রাজনৈতিক পরিকল্পনা নিয়ে ভাবিনি। দলের সঙ্গে বসবো, এরপর আমরা রাজনৈতিক পরিকল্পনা করব।
নির্বাচনকে স্বাগত জানিয়ে ইনু বলেন, ১৪ দলীয় জোটের যে নির্বাচনী বিজয় ও এর ভিত্তিতে শেখ হাসিনা নতুন সরকার গঠন করবেন। সেটা রাজনৈতিক ধারাবাহিকতার জন্যে একটা গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য। আমি সেটাকে স্বাগত জানাচ্ছি।
উল্লেখ্য, দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে অংশ নেওয়া হাসানুল হক ইনু একজন স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়েছেন।
ভেড়ামারা ও মিরপুরের ১৬১ কেন্দ্রের সব কয়টির ফলাফলে তিনি পেয়েছেন ৮৯ হাজার ৪৭৯ ভোট।
অন্যদিকে স্থানীয় আওয়ামী লীগ মনোনীত স্বতন্ত্র প্রার্থী ট্রাক প্রতীকে কামারুল আরেফিন ১ লাখ ১৭ হাজার ৭৬ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি ২৭ হাজার ৫৯৭ ভোট বেশি পেয়েছেন।
হাসানুল হক ইনু তার নিজের উপজেলা ভেড়ামারার ৫০টি কেন্দ্রে নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ৩৫ হাজার ৭৬৫ ভোট। আর কামারুল আরেফিন পেয়েছেন ৪২ হাজার ৫৫৯ ভোট। ভেড়ামারা উপজেলায় ৬ হাজার ৭৯৪ ভোটে পরাজিত হয়েছেন ইনু।
অন্যদিকে মিরপুর উপজেলায় ১১১টি কেন্দ্রে হাসানুল হক ইনু পেয়েছেন ৫৫ হাজার ৭১৪ ভোট। স্বতন্ত্র প্রার্থী কামারুল আরেফিন ট্রাক প্রতীক পেয়েছেন ৭৪ হাজার ৫১৭ ভোট। প্রাপ্ত ফলাফলে ২৭ হাজার ৫৯৭ ভোট বেশি পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী কামারুল আরেফিন বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।