চাঁদপুরের হাইমচর নীলকমল ইউনিয়নে মেঘনা নদীর মাঝেচর এলাকায় সারবাহী জাহাজ এমভি আল-বাকেরাহরার মাষ্টার ও ছুতকানিসহ ৭ জন খুনের ঘটনাটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড বলে দাবি করছেন নিহতের স্বজনরা। এদিকে, পুলিশও এই ঘটনাকে সন্দেহের মধ্যে রেখে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রাখা মরদেহ শনাক্তের জন্য আসা স্বজনদের সাথে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
এর আগে সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকেলে ঘটনাস্থল থেকে নিহতদের মরদেহ ও আহতদের উদ্ধার করে কোস্টগার্ড ও নৌ পুলিশ।
সকাল ১০টার পর থেকে মরদেহগুলো ময়না তদন্তের জন্য মর্গে নেয়া হয়। সেখানেই তাদের স্বজনদের মধ্যে অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। পরে সুরতহাল এবং ময়না তদন্তে কাজ শেষে পরিবারের কাছে লাস্ট অন্তর করা হয়।
হত্যার শিকার জাহাজের লস্কর শেখ সবুজ (৩৫) এর ছোট ভাই সাদিকুর রহমান বলেন, জাহাজের মাষ্টার গোলাম কিবরিয়া আমার মামা। তার মাধ্যমেই আমার ছোট ভাই সবুজ কাজে আসেন। তিনি লস্কর হিসেবে কাজ করেন। গত ১দিন আগে আমার সাথে ভাইয়ের কথা হয়েছে। যে মর্মান্তিক ঘটনায় আমার ভাই হত্যার শিকার হয়েছে, আমি চাই এমন ধরণের ঘটনা যাতে না ঘটে। এই জাহাজে থাকা প্রত্যেকটি হত্যার সুষ্ঠ তদন্ত ও বিচার দাবী করছি। ঘটনাটি যাতে করে কেউ ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা না করে আমি এটিও দাবী করছি।
এই হত্যাকান্ডের একই ধরণের দাবি জানালেন জাহাজের মাষ্টার গোলাম কিবরিয়ার ভাই আউয়াল হোসেন। তিনি বলেন, এই মাসেই আমার ভাইয়ের চাকরির মেয়াদ শেষ হত। তিনি ১ জানুয়ারি থেকে অবসরে যেতেন। উনার দুই মেয়ে ও এক ছেলে। বড় মেয়ের জানুয়ারি মাসে বিয়ে হওয়ার কথা। কিন্তু এই ঘটনার পরে সব পকিল্পনাই শেষ।
হত্যার শিকার আমিনুল মুন্সীর বড় ভাই মো. হুমায়ুন, ইঞ্জিন চালক সালাউদ্দিনের মামাত ভাই জাহাঙ্গীর বলেন, ঘটনাটি আমরা ডাকাতি শুনলেও খুনের ঘটনার দৃশ্য দেখে মনে হয়েছে এটি পরিকল্পিত হত্যা। কারণ প্রত্যেকটি নিহতের মাথায় ধারলো অস্ত্রের আঘাত। যারা হত্যার শিকার হয়েছেন সকলেরই প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র জাহাজে পাওয়া গেছে। এমনকি জাহাজে থাকা ৫ জনকে উদ্ধারের সময় তাদেরকে শোয়া অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
মরদেহ হস্তান্তরের সময় চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন। এসময় তিনি বলেন, নিহত ৭ পরিবারকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২৫ হাজার টাকা করে দেয়া হবে। এই ঘটনায় নিহতদের পরিবার থেকে থানায় মামলা হবে।
বায়ান্ন/প্রতিনিধি/একে