ঢাকা, মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১
শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানীর মিথ্যা অভিযোগ:

ময়মনসিংহ মেডিকেলে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকসহ ১০ শিক্ষার্থী বহিষ্কার

এম ইদ্রিছ আলী, ময়মনসিংহ ব্যুরো : | প্রকাশের সময় : শনিবার ৫ মার্চ ২০২২ ০৮:৪১:০০ অপরাহ্ন | দেশের খবর

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সার্জারী বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে ৫৩ ব্যাচের শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানী করার আনা অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল হাসানসহ ১০ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করা হয়েছে।

শনিবার তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের পর দিনভর আলোচনা শেষে বিকালে একাডেমিক কাউন্সিলে এমন সিদ্ধান্ত হয় । পরে সাংবাদিকদের কাছে লিখিত ভাবে জানান কলেজ কর্তৃপক্ষ।

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. চিত্তরঞ্জন দেবনাথ বলেন, গত ২ ফেব্রুয়ারী সার্জারী বিষয়ের মৌখিক ও ব্যবহারিক পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে সার্জারী বিভাগের অধ্যাপক ডা.আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ আসে। সেখানে বলা হয়, তিনি উদ্দেশ্যে প্রনোদিতভাবে ডিএসবির একজন সদস্যের সামনে পরীক্ষা সম্পন্ন করেন। এছাড়াও বিভিন্ন সময় তিনি সরকার বিরোধী কর্মকান্ডে লিপ্ত থাকেন। নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী সরকার দলীয় ছাত্রদের ফেল করান। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের ৫৩ ব্যাচের ছাত্র এবং কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল হাসান অধ্যক্ষ বরাবরে এ লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।  এ নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।  তদন্ত কমিটি অভিযোগের কোন সত্যতা পায়নি। ফলে মিথ্যা অভিযোগ করায় অভিযোগকারী আব্দুল্লাহ আল হাসানকে তিন বছরের জন্য একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বহিস্কার করা হয়। এসময় সে ছাত্রাবাসেও থাকতে পারবে না। 

অপরদিকে গত ২৩ ফেব্রুয়ারী ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল গেটের সামনে ৫৩ ব্যাচের শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানীর অভিযোগ এনে সার্জারী বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে কতিপয় শিক্ষার্থী মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করে। তদন্তে যৌন হয়রানীর অভিযোগ মিথ্যা ও ভুয়া প্রমানিত হওয়ায় এবং ডা.কালামের বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দেওয়ায় শিক্ষার্থী ফায়াদুর রহমান আকাশ ও তামান্না তাসকিনকে দুই বছরের জন্য একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বহিষ্কার করা হয়। এসময় তারা ছাত্রাবাসেও থাকতে পারবে না।

মানববন্ধনে স্বেচ্ছায় অংশ গ্রহণ ও শিক্ষকের বিরুদ্ধে অপবাদ প্রচারে সম্পৃক্ত থাকার দায়ে শিক্ষার্থী সুনীতি কুমার দাশ, সানবীম খান, মহিদুল হক, তানভীন হাসান, কাশফী তাবরীজ, বাপ্পু কর্মকার এবং সাখাওয়াত হোসেন সিফাতকে এক বছরের জন্য একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বহিস্কার করা হয়। এসময় তারা ছাত্রাবাসেও থাকতে পারবে না। 

এছাড়াও অনিচ্ছাকৃত ভাবে মিছিলে অংশ গ্রহণ করায় আটজনকে মুচলেকা দিয়ে শর্তসাপেক্ষে একাডেমিক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। 

সার্জারী বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানীর অভিযোগ এনে তাঁর অপসারন দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিষয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ গত ২৪ ফেব্রুয়ারী গাইনী বিভাগের বিভাগীয় প্রধান তাইয়্যুবা তানজিনকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন। 

শনিবার তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে নেয়া হয় বাড়তি নিরাপত্তা।