ঢাকা, রবিবার ১০ নভেম্বর ২০২৪, ২৬শে কার্তিক ১৪৩১
আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে তেলের যোগান হবে পর্যাপ্ত

রায়পুর সহ জেলা জুড়ে সরিষার বাম্পার ফলন

মোঃওয়াহিদুর রহমান মুরাদ: | প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার ৫ জানুয়ারী ২০২৩ ০৫:১০:০০ অপরাহ্ন | দেশের খবর
 
  রায়পুর সহ জেলা জুড়ে লক্ষ্মীপুরে সরিষার বাম্পার ফলন,মাঠে ছবি তোলা ঠেকাতে হিমসিম খাচ্ছে কৃষকরা।আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে তেলের যোগান হবে পর্যাপ্ত বলছেন কৃষকরা। 
 
জেলার বিভিন্ন উপজেলায় বিস্তৃর্ণ ফসলের মাঠে এখন হলুদের ঢেউ। ফসলের মাঠ গুলোতে দিগন্ত জোড়া সরিষার ফুল নজর কেড়েছে সবার। হলদে রঙের ফুলে মৌমাছির গুনগুন শব্দ শুনতে ভাল লাগে সবার। এবছর বাম্পার ফলনের হাতছানি দেখা দেওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। সরিষার এই ফলনে কৃষকের চোখেমুখে আনন্দের হাঁসি ফুটে উঠেছে। চাষিরা বলছেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার ফলন ভালো হয়েছে। এ ছাড়া কৃষি বিভাগ বীজ ও সার সরবরাহ করায় বেড়েছে আবাদ।
 
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, জেলার ৫টি উপজেলায় এ বছর সরিষা আবাদ হয়েছে। জেলার ৫টি উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি সরিষা আবাদ হয়েছে রায়পুর উপজেলায়। রায়পুর উপজেলায় ৭৫০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। এ ছাড়া সদর উপজেলায় ১৭৫ হেক্টর জমিতে, কমলনগর উপজেলায় ২২০ হেক্টর জমিতে, রামগঞ্জ উপজেলায় ২২৫ হেক্টর জমিতে ও রামগতি উপজেলায় ৫৫০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। উ
 
সদর, রায়পুর ও রামগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়- ফসলের মাঠগুলো সরিষা ফুলের হলুদ রঙে অপরূপ শোভা ধারণ করেছে। মাঠে পরিচর্চার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। ধান বা অন্য ফসলের তুলনায় লাভজনক হওয়ায় কৃষকরা দিন দিন সর্ষে চাষের দিকে ঝুঁকছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার ফলন ভাল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এখন মাঠ জুড়ে সরিষার ক্ষেতে ফুল ফুটেছে। সড়ক, মহাসড়কে চলাচলের সময় পাশের মাঠে সরিষার ক্ষেত দৃষ্টি কাড়ে সবার। অনেকে আবার সরিষা ক্ষেতে দাঁড়িয়ে ছবি তোলার আনন্দে মেতে ওঠেন।
 
 সরিষা চাষিরা জানান, উঁচু জমি সরিষা চাষের জন্য উপযুক্ত। প্রথমে হালকাভাবে চাষ করে সরিষার বীজ বপন করতে হয়। পরে দু-এক বার কিছু ওষুধ ও কীটনাশক দিলেই সহজে ফলন ভাল হয়। তুলনামুলক কম পরিশ্রমে বেশি লাভ হওয়ায় দিন দিন সরিষা চাষে আগ্রহ বাড়ছে এ অঞ্চলের কৃষকদের।
 
চররমনী মোহন এলাকার সরিষা চাষি তছলিম উদ্দিন বলেন, কয়েক বছর আগেও তাদের জমি পরিত্যক্ত থাকতো, কিন্তু বর্তমানে কৃষি বিভাগের পরামর্শে তারা এখন জমিতে সরিষা চাষ করছেন। সরিষা চাষ করে বাড়তি আয় হওয়ায় দিন-দিন সরিষা চাষে এ অঞ্চলের কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে। সরিষার ফুল মাটিতে পড়ে জমির উবরর্তা ও শক্তি বাড়ায়। তা ছাড়া সরিষার বাজার দরও ভালো হওয়ায় লাভের মুখ দেখছেন তারা।
 
রায়পুর উপজেলা কৃষক আমানত উল্যা বলেন, এ অঞ্চলের মাটি সরিষা চাষের উপযোগী হওয়ায় দিন দিন আবাদ বাড়ছে। গত বছর এ উপজেলায় ১৬০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছিল। এবার ৯৯৫ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। ফলন দেখে মনে হচ্ছে, গতবারের চেয়ে উৎপাদন আরও বেশি হবে। সে কারণে এবার বেশি লাভের আশা করছি।
 
"রায়পুর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ তহমিনা খাতুন বলেন,  মাঠ পর্যায়ে অনুকূল আবহাওয়া আর যথাযথ পরিচর্চার কারণে এবার সরিষার বাম্পার ফল হয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। মাঘ মাসের শেষ দিকে ও ফাল্গুনের শুরুতে ক্ষেত থেকে সরিষা তোলা শুরু হবে। অন্যান্য ফসলের তুলনায় সরিষার উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় এবং গত কয়েক বছর ধরে বাজারে সরিষার ভালো দাম থাকায় চাষিরা দিন দিন সরিষা চাষের দিকে ঝুঁকছেন।সরকারি ভাবে বিপুল পরিমান বীজ দেয়া হয়েছে কৃষকদের " ।
তিনি আরো জানান,  রায়পুরে এবার ৭৫০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ হয়েছে। পূর্নবাসন ও প্রণোদনার আওতায় আমরা কৃষকদের বীজ ও সার সরবরাহ করেছি। পাশাপাশি তাদের নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। এতে সরিষার আবাদ দিন দিন এই জেলায় জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। ‘অনুকূল আবহাওয়া ও নিবিড় পরিচর্যার কারণে এ অঞ্চলের কৃষকেরা এবার সরিষার ভালো ফলন পাবেন বলে আশা করছি।প্রতি বছরই লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে সরিষার আবাদ হচ্ছে। বাজারে সরিষার দাম বেশি থাকায় এবং ফল ভালো হওয়ায় কৃষকেরা সরিষা চাষে ঝুঁকে পড়ছেন।