ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১
বেপরোয়া গতিতে চালাচ্ছে চালকরা গাড়ি

লক্ষ্মীপুরের আঞ্চলিক সড়কে ৬ দিনে ঝরেছে ৭ প্রাণ

মোঃওয়াহিদুর রহমান মুরাদ, করেসপন্ডেন্ট : | প্রকাশের সময় : শনিবার ৪ জুন ২০২২ ১১:৫২:০০ পূর্বাহ্ন | দেশের খবর

লক্ষ্মীপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় ৬ দিনে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে শুক্রবার পিকআপ ভ্যানচাপায় বাইসাইকেল আরোহী বৃদ্ধের মৃত্যু ও আরো সাতজন আহত হন। এ ছাড়া রামগতিতেই চার জেলের মৃত্যু হয়। দুর্ঘটনারোধে সচেতনতা সৃষ্টি ও ট্রাফিক আইন মেনে চলার তাগিদ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

থানা পুলিশ ও সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, শুক্রবার (৩ জুন) বেলা ১১টার দিকে সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর-রামগঞ্জ সড়কের জামিরতলী এলাকায় দ্রুতগতির পিকআপ ভ্যানচাপায় বাইসাইকেল আরোহী আবু তাহের (৫৮) নামে এক ব্যক্তি মারা গেছেন। এ সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে পিকআপটি উল্টে পড়ে আরো সাতজন আহত হয়। নিহত তাহের সদর উপজেলার উত্তর হামছাদী ইউনিয়নের মির্জাপুর হাসন্দি গ্রামের বাসিন্দা। আহতরা পিকআপের শ্রমিক।

বৃহস্পতিবার (২ জুন) সকালে রামগতিতে মাছবাহী পিকআপ ভ্যান নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে দুই মাছ শিকারি জেলের মৃত্যু হয়। তাঁরা হলেন বেলাল হোসেন (৪০) ও গিয়াস উদ্দিন (৩৮)। আলেকজান্ডার-সোনাপুর সড়কের উপজেলার আজাদনগর এলাকার এ দুর্ঘটনা আরো তিনজন আহত হন।

বুধবার (১ জুন) সন্ধ্যায় লক্ষ্মীপুর সদরের মজু চৌধুরীহাট সড়কের কাচারিবাড়ী এলাকায় মালবাহী ট্রাকচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী আবদুর রহমান (৪৫) নামে এক ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়। সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আবুল বাশার জানিয়েছেন, ট্রাকটি পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। পালিয়ে যাওয়ায় চালককে আটক করা সম্ভব হয়নি।

বুধবার (১ জুন) সকালে লক্ষ্মীপুর সড়ক ও জনপদ বিভাগের কার্যালয়ের সামনে অটোরিকশা উল্টে চালক জোহাম মাহমুদের (১৫) মৃত্যু হয়। সড়কের ওপর শ্রমিকের হাতে থাকা লোহার বস্তুর সঙ্গে ধাক্কা লেগে অটোরিকশাটি উল্টে জোহাম মাথায় আঘাত পেয়েছিল।

রবিবার (২৯ মে) রাতে রামগতি উপজেলার উপজেলার চরগাজী ইউনিয়নের করলা বাজার এলাকায় পিকআপ ভ্যান ও মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে দুই ব্যক্তি নিহত হন। তাঁরা হলেন মো. রায়হান (৩২) ও বাবুল মাঝি (৪০)। আহত মোটরসাইকেলের আরেক যাত্রীকে নোয়াখালী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রামগতি থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসা ইলিশ ভর্তি পিকআপ ভ্যান ঘটনাস্থল পৌঁছলে মোটরসাইকেলের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।

যাত্রী কল্যান সংস্থা লক্ষ্মীপুর জেলার আহবায়ক মাহবুবুর রহমান   বলেন, অনেক সময় গাড়ি চালানো অবস্থায় চালকরা মোবাইল ফোনে কথা বলেন। তাঁরা ট্রাফিক সংকেত বোঝেন না, আবার সংসারের টানাপোড়ন-কিস্তির টাকার টেনশনে থাকেন। এসব কারণে বেশি দুর্ঘটনা ঘটে। আবার রাস্তা পারাপারের সময়ও দুর্ঘটনা ঘটছে। লক্ষ্মীপুর জেলায় খুলনাগামী, চট্টগ্রাম গামী, বরিশালগামী পরিবহন ফেরীতে দ্রুত উঠতে যেয়ে বেপরোয়া চালিয়ে দুর্ঘটনা ঘটাচ্ছে প্রায়। 

লক্ষ্মীপুর নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের সভাপতি কার্তিক সেনগুপ্ত বলেন, 'সম্প্রতি লক্ষ্মীপুরে সড়কে দুর্ঘটনা বেড়ে গেছে। দুর্ঘটনারোধে আমরা মালিক-চালকদের নিয়ে সচেতনতামূলক সভা, নাটক প্রচার ও লিফলেট বিতরণ করেছি। রাস্তায় বের হয়ে ইচ্ছেমতো চলাচল করলে হবে না, সবাইকে ট্রাফিক আইন মেনে চলতে হবে।'

লক্ষ্মীপুর ট্রাফিক পুলিশ পরিদর্শক (প্রশাসন) প্রবীর কুমার দাস বলেন, 'চালকরা সচেতন না, তাঁরা ট্রাফিক আইন-কানুন বুঝে না। তাঁদের সচেতন করার জন্য আমরা মাঠে কাজ করছি।'