ঢাকা, শুক্রবার ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শার্শায় নির্বাচন সহিংসতা : দুই সদস্য প্রার্থীর ২০ জন কর্মী-সমর্থক আহত

বেনাপোল প্রতিনিধি : | প্রকাশের সময় : বুধবার ১৭ নভেম্বর ২০২১ ০১:০৮:০০ অপরাহ্ন | দেশের খবর

যশোরের শার্শায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ডিহি ইউনিয়নে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। দুই ইউপি সদস্য প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে ২২ জন কমী-সমর্থক আহত হয়েছে।

জানা যায়, ডিহি ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের দুই ইউপি সদস্য প্রার্থী খানজাহান আলী ও কামরুজ্জামান জজ মিয়ার কর্মী সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষের ঘটনায় উভয় পক্ষ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। দুই পক্ষের এমন ভয়াবহ পরিস্থিতিতে সাধারণ জনগণ বিভ্রান্তিতে পড়ছে এবং এলাকায় অশান্তি বিরাজ করছে বলে সাধারন মানুষ অভিযোগ করেছেন। 

থানায় লিখিত অভিযোগ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (১৬ নভেম্বর ) রাত ৮টার দিকে ডিহি ইউনিয়নের পন্ডিতপুর গ্রামের শিশুতলার মোড় নামক স্থানে মেম্বর প্রার্থী মোরগ মার্কা প্রতীকের খানজাহান আলী ও তালা মার্কা প্রতীকের কামারুজ্জামান জজ মিয়ার কর্মী সমর্থকরা তাদের নিজ নিজ নির্বাচনী কার্যালয়ে অবস্থান করছিলেন।

এর মধ্যে খানজাহান আলী কর্মী সমর্থকরা পন্ডিতপুর গ্রামের দক্ষিণপাড়ায় ভোট চাইতে গেলে কামরুজ্জামান জজ মিয়ার দুইজন সমর্থক তাদেরকে রাতে ভোট চাইতে নিষেধ করেন। এতে খানজাহান আলীর সমর্থকরা ক্ষীপ্ত হয়ে তাদের কে ধাওয়া করেন। এ সংবাদ খানজাহান আলী ও জজ মিয়া কর্মী সমর্থকরা জানতে পারলে উভয় পক্ষ কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে খানজাহান আলীর নির্বাচনী অফিসের পাশেই রাখা ইট ও লাঠি সোটা নিয়ে জজ মিয়ার নির্বাচনী কার্যালয়ে হামলা চালায়। এসময় খানজাহান আলীর কর্মী সমর্থকরা মোড়ের হযরত আলীর ছেলে ফজলুর চায়ের দোকানে ভাংচুর করা হয়। পরে ফজলুর বাড়িতে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে উভয় পক্ষের নির্বাচনী কার্যালয়ে ভাংচুরও করা হয়।

সংঘর্ষে কামরুজ্জামান জজ মিয়ার কর্মী সমর্থক পন্ডিতপুর গ্রামের মতিয়ার রহমান (৪০), আমির আলী কবিরাজ (৬৫), জাকির হোসেন (৩৬), ইউসুফ (৩২), আনোয়ার (৫০), আলাল (৩২), চন্দ্রপুর গ্রামের আনসার আলী (৫৫), তরিকুল ইসলাম (২৬) সহ আরও ৭ জন। খানজাহান আলীর কর্মী সমর্থকদের মধ্যে পন্ডিতপুর গ্রামের রুবেল (৩৫), আঃ হালিম (৫৫), খলিশাখালী গ্রামের মিশির (৫৬) সজিব (২৫), জয়নাল (৪০), শাহিন আলম (৫০), চন্দ্রপুর গ্রামের মনির হোসেন মধু (৩৭) আহত হন। আহতদের মধ্যে গুরুতর অবস্থায় জজ মিয়ার ৮জন এবং খানজাহান আলীর ২ জন কর্মী সমর্থকদের উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে জজ মিয়ার ২ জন সমর্থককে আশংকাজনক হওয়ায় ডাক্তার তাদেরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার করেন। 

হযরত আলী ছেলে চায়ের দোকানদার ফজলু ও তার মা, মোশারফ হোসেন এর ছেলে মিন্টু মিয়া জানান, ওই দিন রাত ৮টার দিকে পন্ডিতপুর গ্রামের দক্ষিণপাড়ায় খানজাহান আলীর কর্মী সমর্থকরা ভোট চাইতে গেলে জজ মিয়ার দুইজন কর্মী সমর্থক তাদেরকে নিষেধ করেন। কারণ প্রশাসনের নির্দেশক্রমে উভয় প্রার্থীর ৪জন প্রতিনিধির দায়িত্ব দেওয়া হয় রাতে কোন প্রার্থী গনসংযোগ বা ভোট চাইতে পারবে না। এরপরও তারা ভোট চাইতে গেলে বাধা দেওয়ায় শিশুতলা মোড়ে খানজাহান আলীর লোকজন ইট পাটকেল ও লাঠি সোটা নিয়ে জজ মিয়ার নির্বাচনী কার্যালয়, ফজলুর চায়ের দোকান ও তাদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে। গোড়পাড়া পুলিশ ক্যাম্প ও শার্শা থানা পুলিশ যৌথভাবে ঘটনাস্থলে অবস্থান নিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন।

তালা প্রতীকের মেম্বর প্রার্থী কামরুজ্জামান জজ মিয়া বলেন, মোরগ প্রতীকের প্রার্থী খানজাহান আলী কর্মী সমর্থকদের নিয়ে পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে আমার নির্বাচনী কার্যালয় ভাংচুর ও আমার কর্মী সমর্থকদের উপরে হামলা করে। 

মোরগ প্রতীকের মেম্বর প্রার্থী খানজাহান আলী বলেন, তালা প্রতীকের মেম্বর প্রার্থী কামরুজ্জামান জজ মিয়ার লোকজন চন্দ্রপুর, খলিশাখালী গ্রাম থেকে এসে আমার কর্মী সমর্থকদের আহত করে ও কার্যালয়ে হামলা করে ভাংচুর করে।

শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বদরুল আলম খান বলেন, ডিহির ৪নং ওয়ার্ড পন্ডিতপুর গ্রামের মেম্বর প্রার্থী কামরুজ্জামান জজ মিয়া ও খানজাহান আলীর কর্মী সমর্থকদের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। উভয় পক্ষ থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তাদের দুই পক্ষকে আমি থানায় ডেকে আপোষ মিমাংশা মর্মে লিখিত মুচলেকা নিয়েছি, তারা পুনরায় এমন ঘটনা আর ঘটাবেন না বলে অঙ্গীকার করেন।