আবারও পাহাড়ি ঢলে টানা বর্ষণে প্লাবিত হয়েছে সিলেট সদর উপজেলার নিম্নাঞ্চল। ডুবে গেছে বাড়িঘর ও রাস্তাঘাট, স্কুল, কলেজ, মাদরাসা, মসজিদ। পাহাড়ি ঢল আর টানা বর্ষণে সিলেটের নদী সুরমা পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এক মাসের মাথায় আবারও বন্যা দেখা দিয়েছে।
উপজেলা সদরের সঙ্গে অনেক গ্রামের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। স্কুল-কলেজ, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে পড়ায় কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
বুধবার সকালেও কয়েক দফা ভারী বৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে যেখানে হাঁটু পানি ছিল, সেখানে দেখা দিয়েছে কোমরসমান পানি। বাড়িতে পানি ঢুকায় গবাদিপশু কোথায় রাখবেন, এ নিয়েও অনেক গৃহস্থ চিন্তায় রয়েছেন। এতে করে ভোগান্তিতে পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ, স্কুলের শিক্ষার্থীরা এবং ব্যবসায়ী।
উপজেলার খাদিমনগর, খাদিমপাড়া, টুকেরবাজার, জালালাবাদ, মোগলগাঁও, কান্দিগাঁও, হাটখোলা ইউনিয়নের প্লাবিত। বিভিন্ন হাট-বাজার, মসজিদ, স্কুল-মাদ্রাসাসহ ভিটে বাড়ী পানিতে ডুবে গেছে। প্লাবিত এলাকায় বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে। দ্রুত প্লাবিত এলাকায় সরকারি ত্রাণ পৌঁছানোর দাবিও জানিয়েছেন।
ঘরে পানি ঢুকে পড়ায় সাপের আতঙ্কও দেখা দিয়েছে জনমনে। খাদিমনগর ইউনিয়নের ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭, ৮ সহ বেশ কিছু এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে ঘরবাড়ি, কমিউনিটি ক্লিনিক, স্কুল, মসজিদ, রাস্তাঘাট, ক্ষেত, বীজতলা।
খাদিমপাড়া মুরাদপুর, সোনাপুর, মিরের চক, নয়া মসজিদ, মুক্তির চক, ধনকান্দি, পাচঘরি, কল্লোগ্রামের একাংশ, ইসলামাবাদ, বালুটিকর, বংশিধর, পলিয়া, দেওয়ানের চক, মাজরগাঁওসহ বিভিন্ন এলাকা ডুবে গেছে। টুকেরবাজার, সাহেবেরগাঁও, চরুগাঁও, শেখ পাড়া, ওয়ার্ডের হায়দরপুর, পীরপুর, শাহপুর, ওয়ার্ডের টুকেরগাঁও, গরীপুর, শাহপুর, ওয়ার্ডের নোয়াগাঁও, ওয়ার্ডের শাহপুর তালুকদার পাড়া, নওয়াপাড়া, মইয়ারচর, খুরুম খলাও। মোগলগাঁও ইউনিয়নের প্রায় ঘর-বাড়ী রাস্তাঘাট স্কুল, মাদ্রাসা, মসজিদ ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ডুবে গেছে।
কান্দিগাঁও ইউনিয়নের ঘোপাল, জাংগাইল, মিরপুর, গোবিন্দপুর, মিরের গাও, চামাউরাকান্দি, নীলগাঁও, নলকট। জালালাবাদ ইউনিয়ন, হাটখোলা ইউনিয়ন পানী বন্দি।
সদর উপজেলা নলকট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিক আব্দুল মালিক বলেন, স্কুলে পানি উঠেছে, ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা বন্ধ।
সিলেট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুসরাত আজমেরী হক জানান, বন্যা কবলিত এলাকায় চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। আমাদের মনিটরিং সেল থেকে ওই এলাকাগুলোর খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।
সিলেট সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আশফাক আহমদ বলেন, বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। শুকনো খাবার সরবরাহ ও প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হবে।