সৈয়দপুরে বাংলাদেশ রেলওয়ের কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের জন্য বরাদ্দ রয়েছে ২ হাজারের উপরে বাংলো ও কোয়ার্টার। রেল কর্মচারীদের জন্য বরাদ্দকৃত এইসব বাসা, কোয়ার্টার, বাংলো তারা রিটায়ার করলে রেল প্রশাসনকে যথাযথভাবে বুঝিয়ে দেওয়ার কথা থাকলেও রেল প্রশাসনের কিছু দূর্নীতিবাজ কর্মচারীর যোগসাজোসে ১৭০০ এর বেশী রেল কোয়ার্টার, বাংলো অবৈধভাবে দখল করে রেখেছেন খোদ রেলেরই পেনশনে যাওয়া কিছু কর্মচারী। নিয়ম অনুযায়ী তাদের নামে বরাদ্দকৃত কোয়ার্টার বুঝে নিয়েই রেল কর্তৃপক্ষ তাদের পেনশনে যাওয়ার অনুমোদন দেবেন কিন্তু সৈয়দপুর রেলওয়েতে ঘটছে অদ্ভুত ঘটনা। কর্মচারীরা রেলের বাসা বরাদ্দ নিয়ে বাসা রেল কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে না দিয়েই অবৈধভাবে কোয়ার্টার দখল এবং কোয়র্টার সংলগ্ন চারপাশের জমি বিক্রি করে দিয়ে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা।
অবৈধ দখলদারদের মধ্যে পেনশনভোগীর অন্যতম হলেন অফিসার্স কলোনী এলাকায় জিন্নাতুল ইসলাম, প্রাক্তন হিসাব রক্ষক, ডিএফএ,সৈয়দপুর কোয়ার্টার নং-৫৫৭ ও ৫৫৮ দীর্ঘদিন ধরে তিনি এই কোয়ার্টার দুটি অবৈধ দখল করে বাসাটির চারিদিকের সকল জমি প্লট আকারে অন্যের কাছে বিক্রি করে হাতিয়ে নিয়েছেন অর্ধকোটি টাকা। অফিসার্স কলোনীর আরো অবৈধ দখলদারদের মধ্যে রয়েছেন নজরুল ইসলাম, প্রাক্তন মিস্ত্রি, ক্যারেজ শপ, বাসা নং-৫৪৭/এ ও ৫৪৭/বি অবৈধভাবে দখলে রেখে সামনের অংশ বিক্রী করে দিয়েছেন। হাবিবুল্লাহ, প্রাক্তন এও, ডাব্লু এম অফিস, বাসা নং-৫৫৪/এ ও ৫৫৪/বি দুইটি দখল করে বাসাটির চারিদিকের জমি ও কোয়ার্টার বিক্রি করে হাতিয়ে নিয়েছেন অর্ধ কোটি টাকা। আলাউদ্দিন চৌধুরী, প্রাক্তন খালাসী, ক্যারেজ শপ, কোয়ার্টার নং-১০১০এ/বি দুইটি কোয়ার্টার তিনিও বাসাটির চারিদিকের জমি অবৈধভাবে বিক্রি করেছেন।
অবৈধ দখলদারদের মধ্যে পেনশনভোগীর অন্যতম হলেন সাহেবপাড়া এলাকায় সালেহ, প্রাক্তন ইউডিএ/ডাব্লুএম অফিস যার দখলে চারটি বাংলো নং-এল/৩৮ডি সহ আরো তিনটি, রুহুল আমিন, প্রাক্তন মিস্ত্রি, সিএইচ আর শপ, বাংলো নং-এল-৩৭/বি, নান্নান শরীফ, প্রাক্তন মিস্ত্রি, জিওএইচ শপ, বাংলো নং-১২৪/সি, আব্দুল মান্নান প্রাক্তন মিস্ত্রি, ক্যারেজ শপ, বাংলো নং-এল-১১৩, হাসান আলী মল্লিক, গার্ডপাড়া, বাসা নং-৯২২/এ, নবির উদ্দিন, প্রাক্তন অফিস সহকারী, ডিসিওএস, বাসা নং-টি ৮১/এ । এরা সবাই চাকুরী শেষ করে পেনশন ভোগ করলেও রেলে বাসা ও বাংলো না ছেড়েই অবৈধভাবে দখল করে রেখেছেন।
এছাড়াও চাকুরীরত অবস্থায় যারা অবৈধভাবে রেলের বাসা ও কোয়ার্টার দখল করে রেখেছেন তারা হলেন মনিরুজ্জামান, ষ্টোর মুন্সি, বাংলো নং-এল ২৯। দেওয়ান জুয়েল, টিকিট নং-২৫৫, বাংলো নং-এল-৩৮, রানা, খালাসী, বাসানং-টি-৮৫। বাবুল এসআই, বাংলো নং-এল-২৫। মাসুদ ফিডার, টিকিট নং-৬০১০, বাসা নং-এস/২৪০। এরা সবাই রেলে চাকুরী করেন অথচ বরাদ্দ ছাড়াই এইসব কোয়ার্টার ও বাংরো দখল করে রেলের রাজস্ব ক্ষতি করছেন। এইসব অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে শরিফুল ইসলাম, এসএসই/ওয়ার্কস, সৈয়দপুর স্বাক্ষরিত ০৯/০২/২০২২ ইং তারিখে সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবর পত্র প্রেরণ করেন, পত্রে দখলকারীদের নাম ঠিকানা দখলকৃত বাসার নাম্বারসহ তাদের পেনশন স্থগিত করার সুপারিশ করেন। এবং অবিলম্বে সব অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য সংশ্লিষ্ঠ সকল দপ্তরে অনুলিপি প্রেরণ করেন। এ ব্যাপারে ফিল্ড কানুনগো সাথে কথা বললে তিনি জানান আগামী সপ্তাহে সকল অবৈধ দখলকারীদের উচ্ছেদ পূর্বক রেলের বাসা দখলমুক্ত করা হবে। বারবার এ রকম খেলা চললেও রেল কি পারবে এই সকল অবৈধ দখল উচ্ছেদ পূর্বক তাদের পেনশন স্থগিত করতে?