ঢাকা, বৃহস্পতিবার ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ঠা আশ্বিন ১৪৩১

৩২ মাস পর মুক্তি পেলো বিনা বিচারে আটক প্রতিবন্ধী মৃনাল রায়

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: | প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার ২৩ অগাস্ট ২০২২ ০৩:৪৯:০০ অপরাহ্ন | দেশের খবর

ঝিনাইদহ কারাগারে বিনা বিচারে ৩২ মাস ধরে আটক থাকা অজ্ঞাত পরিচয় প্রতিবন্ধীর অবশেষে পরিচয় মিলেছে। কোনো অভিযোগ ছাড়া কারাগারে আটক ব্যক্তির নাম মৃণাল রায়। তিনি নীলফামারী জেলার সদর উপজেলার দক্ষিণ চাওড়া গ্রামের যতিন্দ্র রাথ রায়ের বড় ছেলে। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়। 

 

সোমবার (২২ আগস্ট) বিকেলে ঝিনাইদহ জেলা কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে তাকে।

 

এ বিষয়ে জেলা কারাগারের সুপার মো. আনোয়ার হোসেন জানান, ৮ বছর আগে হঠাৎ একদিন বাড়ি থেকে হারিয়ে যায় মৃণাল। বহু জায়গায় খুঁজেও তাকে পায়নি। ছেলে হারানোর শোকে ইতোমধ্যেই তার মা সুধা রায় মারা গেছেন। অসুস্থ বাবাও শয্যাশায়ী।

 

২০১৯ সালের ১৪ নভেম্বর ঝিনাইদহ সদর উপজেলার নগরবাথান এলাকা থেকে রোহিঙ্গা সন্দেহে পরিচয়হীন হিসেবে মৃণালকে আটক করে পুলিশ। 

 

তিনি আরও জানান, ২০১৯ সালের ১৪ নভেম্বর ঝিনাইদহ সদর উপজেলার নগরবাথান এলাকা থেকে পরিচয়হীন এক ব্যক্তিকে উদ্ধার করে পুলিশ। একটি জিডির ভিত্তিতে এস আই মোহাম্মদ ইউনুচ আলী গাজী অজ্ঞাত ওই ব্যক্তিকে আদালতে হাজির করে নিরাপত্তা হেফাজতে রাখার জন্য আবেদন জানান। আদালত জেলা কারাগারের নিরাপত্তা হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। সেই ২০১৯ সালের ১৪ নভেম্বর থেকে কারাগারেই রয়ে গেছেন মৃণাল রায়।

 

জেল সুপার আরও জানান, বিষয়টি ঝিনাইদহের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বৈজয়ন্ত বিশ্বাসের নজরে আসলে তিনি (বিচারক) স্বউদ্যোগে লোকটির আসল ঠিকানা খুঁজে বের করার চেষ্টা করেন। ৩১শে জুলাই অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট টেকনাফ, কক্সবাজার, উখিয়া ভাসানচর থানার অফিসার ইনচার্জসহ ৩৪টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ছবি পাঠানোর নির্দেশ জারি করেন। একই আদেশে আটক লোকের সঠিক ঠিকানা খুঁজে পেতে নোয়াখালী, কক্সবাজার জেলা প্রশাসক এবং পুলিশ সুপার ও এপিবিএন কমান্ডারদের নির্দেশ দেন তিনি। এরআগে মানসিক ভারসাম্যহীন কিনা তা পরীক্ষা করাতে খুলনা মেডিকেলেও নেয়া হয় লোকটিকে। ঝিনাইদহ জেলা নির্বাচন অফিসে ওই ব্যক্তিকে নিয়ে যাওয়া হয় এবং তার হাতের ছাপ গ্রহণ করে বাংলাদেশের নাগরিক কিনা তা যাচাই করা হয়। পরিবারের দেওয়া তথ্যমতে, দীর্ঘদিন মানসিক প্রতিবন্ধী মৃণালের জন্ম ১৯৮১ সালের ১১ই আগস্ট।

 

দীর্ঘ প্রচেষ্টায় পরিচয় উদ্ধারের পর মৃণাল রায়ের পরিবার ঝিনাইদহের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বৈজয়ন্ত বিশ্বাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। 

 

এ বিষয়ে বিচারক নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সঙ্গে ফোনে কথা বলে অবিলম্বে আটক ব্যক্তির পরিচয়ের সমর্থনে কাগজপত্র জমা দিতে নির্দেশ দেন। এরই ধারাবাহিকতায় মৃণালের মামা চিনেন্দ্র নাথ রায় নীলফামারী থানায় হাজির হয়ে নিশ্চিত করেন ঝিনাইদহ জেলা কারাগারে আটক ব্যক্তি তার হারিয়ে যাওয়া ভাগ্নে মৃণাল রায়। তিনি দাবির স্বপক্ষে ভাগ্নের জন্মনিবন্ধন সনদসহ অন্যান্য ডকুমেন্ট জমা দেন।