ঢাকা, শুক্রবার ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ই পৌষ ১৪৩১

আওয়ামী লীগ গুম-খুনের রাজত্ব কায়েম করেছিল: ডা. শফিকুর রহমান

সনত চক্রবর্ত্তী, ফরিদপুর | প্রকাশের সময় : রবিবার ১ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৬:০৬:০০ অপরাহ্ন | রাজনীতি

বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আওয়ামী লীগের নেতাদের কথায় মনে হতো ২০৪১ সাল পর্যন্ত তারা দেশের লিজ নিয়েছিলেন। তারা নিজেদেরকে দেশের মালিক আর ১৮ কোটি মানুষকে দেশের ভাড়াটিয়া মনে করতেন। এমনকি ক্ষমতায় টিকে থাকতে তারা নিজদলের নেতাকমীর্দেরও ভয় দেখাতেন। আওয়ামী লীগের বড় নেতারা বলতেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না থাকলে একদিনে ৫ লাখ নেতাকর্মীকে হত্যা করে ফেলবে। 

রোববার (১ ডিসেম্বর) বিকেলে ফরিদপুর জেলা জামায়াত ইসলামীর আয়োজনে সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ মাঠে জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি কথাগুলো বলেন। 

তিনি বলেন, ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর লগি—বৈঠার তাণ্ডবের কাছে বাংলাদেশ সেদিন পথ হারিয়েছিল। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ৩৯ জন মানুষকে সেদিন লগি—বৈঠা দিয়ে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়েছিল। লাশের উপর দাড়িয়ে সেদিন বিকৃত নিত্য করা হয়েছিল। সেদিন মানবতার বুক ভেঙে দেওয়া হয়েছিল। অনেক লড়াই সংগ্রামের পর মানুষের হাতে এ দেশ আবার তুলে দেওয়া হয়েছে। যাদের কারণে দেশ ফিরে পেয়েছি, আমাদের ভালবাসা, শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা সেই ছাত্র—জনতার জন্য। আমরা তাদেরকে স্যালুট জানাই।    

সম্মেলনে নেতাকর্মীদের উদ্দে্যশ্যে জামায়াতের আমির বলেন, আপনাদের সামনে দাঁড়িয়ে আজ বক্তব্য দিতে পারবো এটা কখনো ভাবিনি। আল্লাহ সুযোগ করে দিয়েছেন তাই এখানে এসেছি। ফরিদপুরে জামায়াতের ইসলামীর তৎকালীন সেক্রেটারী জেনারেল শহীদ আলী আহসান মুহাম্মাদ মুজাহিদ ও সহকারী জেনারেল শহীদ আব্দুল কাদের মোল্যার বাড়ি ছিল। তাদের অত্যান্ত নিষ্ঠরভাবে বিচারিক আদালতে খুন করা হয়েছে। আমরা এই হত্যার বিচার চাই। 

তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগ গুম—খুনের রাজত্ব কায়েম করেছিল। তারা শুধু আমাদের নেতাকর্মীদের হত্যা করেনি। তারা বিএনপির নেতাকর্মী, হেফাজত নেতাকর্মী, আলেম—ওলামা ও সাধারন মানুষকে হত্যা করেছে ও গুম করেছে। এমনকি দেশ প্রেমিক ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাকেও তারা খুন করেছেন। তারা মানুষের জীবন নিয়ে উপহাস করেছেন। 

ফরিদপুর জেলা জামায়াতে ইসলামের আমীর মাওলানা মুহাম্মদ বদরুদ্দনীর সভাপতিত্বে কর্মী সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল, সাবেক এমপি ও ফরিদপুর অঞ্চলের পরিচালক এ এইচ এম হামিদুর রহমান, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও অঞ্চল সহকারী পরিচালক দেলোয়ার হোসেন, মো. মোবারক হোসেন, কেন্দ্রীয় মাজির্লসে শুরা সদস্য শামসুল ইসলাম আল বরাটি, কেন্দ্রীয় মাজলিসে সুরা সদস্য প্রফেসর আব্দুত তাওয়াব প্রমুখ।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন, মাদারীপুর জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা মো. মোখলেচুর রহমান, গোপালগঞ্জের আমীর মাওলানা মো. রেজাউল করীম, শরীয়তপুর জেলা আমীর মাওলানা আব্দুর রব হাসেমী, রাজবাড়ী জেলা আমীর এ্যাড. নুরুল ইসলাম, ফরিদপুর জেলা জামায়াতের এ্যাসিস্টেন্ট সেক্রেটারি মো. আবু হারিচ মোল্যা, শ্রমিক কল্যান ফেডারেশনের সভাপতি এস এম আবুল বাশার, ফরিদপুর সদর উপজেলা জামায়াতের আমীর মো. জসিম উদ্দীন, নগরকান্দা উপজেলা আমীর মাওলানা মো. ছোহরাব হোসেন, বোয়ালমারী উপজেলা আমীর মাওলানা মো. শহিদুল ইসলাম, ফরিদপুর পৌরসভার আমীর এহসানুল মাহবুব রুবেল, জেলা ছাত্র শিবিরের সভাপতি আব্দুল হামিদ ও পৌর ছাত্র শিবিরের সভাপতি মো. জিহাদুল সালাম রুত্ন প্রমুখ। 

এর আগে বেলা ১২টার পর বিভিন্ন উপজেলা ও ইউনিয়ন থেকে জামায়াত ও ছাত্র শিবিরের সদস্যরা নসিমন, করিমন ও বাস যোগে সমাবেশস্থলে উপস্থিত হতে দেখা যায়। 

 

বায়ান্ন/প্রতিনিধি/পিএ