বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান বলেছেন, আওয়ামী লীগের কোন বাঁধা নেই, আওয়ামী লীগের পথকে আর রুদ্ধ করা যাবেনা। এ সময় তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মাধ্যমে ফাঁসির রায় কার্যকর করে জাতীকে কলঙ্কমুক্ত করেছেন। এতে শেখ হাসিনা প্রমান করে দিয়েছেন খুনি ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও আওয়ামী লীগ সরকার করতে জানে। তাই আর কোন অপশক্তি আওয়ামী লীগ সরকারকে রুখে দিতে পারবেনা এবং এ সরকার এগিয়ে যাবে দুর্বার গতিতে। আর শেখ হাসিনার হাতেই বাংলাদেশ নিরাপদ বলে তার নেতৃত্বে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। রোববার দুপুরে রাজধানীর ডেমরার ডগাইর রুস্তম আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৬৬ নং ওয়ার্ড ও সকল ইউনিট আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে (২০২১) প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আব্দুর রহমান আরও বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ ই আগস্ট বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সবাইকে হত্যা করা হয়েছে। ধানমন্ডী ৩২ নম্বর বঙ্গবন্ধুর বাড়ীর সিড়িতে পড়েছিল তার লাশ। কিন্তু সেদিন বঙ্গবন্ধু মরেন নাই। জয় বাংলা ও জয় বঙ্গবন্ধু স্লোগানে মনে হচ্ছে বঙ্গবন্ধু আজও বেঁচে আছেন আমাদের মাঝে। স্বাধীনতা বিরোধী বঙ্গবন্ধুর খুনীরা সেদিন ভেবেছিল বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে আর জয় বাংলা স্লোগান হবেনা ও চিরতরে মুছে যাবে বঙ্গবন্ধুর নাম। এদিকে ২১ বার শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করেও তাকে রুখতে পারেনি। শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত করে সকল ষড়যন্ত্রের মোকাবেলার মাধ্যমে আজও তার পিতার স্বপ্নের বাংলাদেশ বিনির্মানে কাজ করে চলেছেন। কিছুদিন আগেও হেফাজতে ইসলামের ভাস্কর্য বিরোধী আন্দোলনের অন্তরালে ছিল আওয়ামী লীগ সরকার হটানোর পরিকল্পনা। সেই পরিকল্পনার নীল নকশাও ভুলন্ডিত করেছেন শেখ হাসিনা। তাই ইউনিট পর্যায়ের কমিটির মাধ্যমে আমরা প্রমান করতে চাই, বাংলাদেশে এবং ডেমরায় শুধু আওয়ামী লীগ থাকবে।
ডেমরা থানাধীন সারুলিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোহাম্মদ আলীর সঞ্চালনায় সম্মেলনের উদ্বোধন করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ¦ আবু আহমেদ মন্নাফী। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী। প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ¦ মো. হুমায়ুন কবির। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মিজবাহুর রহমান ভূঁইয়া রতন ও সরফুদ্দিন আহম্মেদ সেন্টু, যুগ্ম সাধারন সম্পাদক মহিবািদ্দন মহি, ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম খাঁন মাসুদ ও সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান মোল্লা সজল। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন অনুষ্ঠান উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক শাহাবউদ্দিন ও সদস্য সচিব হানিফ তালুকদার, ডিএসসিসির ৬৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আলহাজ্ব সালাহউদ্দিন আহমেদ ৭০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আতিকুর রহমান আতিক, ৬৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাহমুদুল হাসান পলিনসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ ডেমরা ও যাত্রাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও সহযোগী অংগসংগঠনের হাজারও নেতাকর্মীরা। এর আগে অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতীয় সঙ্গিত পরিবেশন, বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধনে অংশ গ্রহন করেন অনুষ্ঠানে আগত আওয়ামী লীগের নেতারা।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ নিয়ে তৃনমূলে ইউনিট কমিটির মাধ্যমে আমরা আবারও ডিএসসিসির ৬৬ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের দূর্গ গড়ে তুলব। কমিটিতে হাইব্রিড ও কাউয়াদের আর স্থান হবেনা কারণ তারা যদি আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশ করতে পারে তাহলে দলের বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে যাবে। তাই ত্যাগী ও সামাজিকভাবে যোগ্যতাসম্পন্ন আওয়ামী লীগ ঘরানা ব্যক্তিদেরকে নিয়েই ইউনিট কমিটি গঠন করা হবে। আমার ভাগ্যবান বলেই বঙ্গবন্ধুর কারণে আমরা আজ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করছি। তবে অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে হয়েছে আমাদের বিজয় ও বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে যা বারবার ব্যর্থ হয়েছে। এখনো ষড়যন্ত্র চলছে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে। এদিকে খালেদা জিয়ার শাসনআমলে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ৮ টি মামলা করা হয়েছে। অথচ শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ সরকারের ১৩ বছরের মধ্যে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে একটি মামলাও করা হয়নি। এর একমাত্র কারণ দরদী শেখ হাসিনা। বিএনপি সরকার শুধু বিদ্যুতের খাম্বা দিয়েছেন দেশকে অথচ শেখ হাসিনা ওইসব খাম্বায় বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছেন। পর্যায়ক্রমে ২০ হাজার মেঘাওয়াট বিদ্যুতের ব্যবস্থা করেছেন শেখ হাসিনা। তাই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে ও ভালবেসে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করে তার নেতৃত্বে আমরা বাংলাদেশ এগিয়ে নিয়ে যাবো।
সম্মেলনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন তৃনমূল অভিমানি হয় কিন্তু বেইমানি করেনা। যুগে যুগে তৃনমূলরাই বাংলাদেশে ইতিহাস সৃষ্টি করে চলেছে। তারপরও আমরা তৃনমূল নেতৃবৃন্দের কদর করিনা। তাই শেখ হাসিনা তৃনমূলকে সুসংগঠিত ও মর্যাদাসম্পন্ন করতেই ইউনিট কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আর শেখ হাসিনার হাতেই বাংলাদেশ নিরাপদ বলে তার নেতৃত্বে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। তবে ইউনিট কমিটিতে কোন সন্ত্রাসী,চাঁদাবাজ ও হাইব্রিডদের স্থান দেওয়া যাবেনা।