টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় সিরাজকান্দী দাখিল মাদ্রাসার সহকারি মৌলভী নজরুল ইসলামকে পিটিয়ে হাসপাতালে পাঠিয়েছে জাহিদ, সাগর, শাহাদত, বাছেদ, স্বপনসহ ৮-১০ বখাটে। গতকাল সোমবার দুপুরে টিফিন করতে যাওয়ার সময় পূনর্বাসন এলাকায় ওই শিক্ষকের ওপর হামলা চালায় তারা। বর্তমানে শিক্ষক নজরুল ইসলাম ভূঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন।
জানা গেছে, গত রোববার দুপুরে মাদ্রাসার মেয়েদের কমনরুমের কাছে টয়লেটের উপর দিয়ে উঁকি মারতেছিল জাহিদ ও সাগর নামের দুই বখাটে। এই ঘটনাটি ওই মাদ্রাসার শিক্ষকরা টের পেলে বখাটে দুইজনের মধ্যে সাগর পালিয়ে যায় এবং জাহিদকে ধরে অফিস কক্ষে নিয়ে যায় শিক্ষকরা। পরে পুলিশ ও মাদ্রাসার সভাপতিকে জানানোর কথা শুনে তাদের কাছ পালানোর চেষ্টা করে জাহিদ। কিন্তু পালিয়ে যাওয়ার সময় ছাত্ররা তাকে ধরে ফেলেন। পরে সুজন নামের তার এক বড় ভাই জাহিদকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়। গতকাল সোমবার দুপুরে ওই মাদ্রাসার শিক্ষক নজরুল ইসলাম ও মুন্নাফ টিফিনের সময় নামাজ পড়তে যাওয়ার সময় এক নম্বর ও দুই নম্বর পূনর্বাসনের মাঝামাঝি কমিউনিটি ক্লিনিকের কাছে পৌঁছলে জাহিদ, সাগর, শাহাদত, বাছেদ, স্বপনসহ ৮-১০ বখাটে শিক্ষক নজরুল ইসলামকে মারার জন্য পথ আটকায়। একপর্যায়ে বখাটেরা তাকে রড ও ক্রিকেট খেলার স্ট্যাম্প দিয়ে মাথায় ও হাতে আঘাত করে আহত করে। পরে এলাকাবাসী ও শিক্ষকরা তাকে উদ্ধার করে ভূঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
আহত শিক্ষক নজরুল ইসলাম জানান, আমি মাদ্রাসা থেকে দুপুরে নামাজ পড়তে যাওয়ার সময় পূনর্বাসন এলাকার বদিউজ্জামানের ছেলে জাহিদ, আব্দুল আলীমের ছেলে সাগর, আকতার হোসেনের ছেলে শাহাদত, আব্দুল গফুরের ছেলে বাছেদ ও ফজলুর ছেলে স্বপনসহ আরও কয়েকজন বখাটে হঠাৎ আমার পথ আটকায়। পরে তারা লোহার রড ও ক্রিকেট খেলার স্ট্যাম্প দিয়ে মাথায় ও হাতে আঘাত করে রক্তাক্ত করে আহত অবস্থায় ফেলে যায়। এলাকাবাসী ও শিক্ষকরা উদ্ধার করে আমাকে ভূঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
সিরাজকান্দি দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস জানান, আমি সকালে মাদ্রাসার কাজে ভূঞাপুর গিয়েছিলাম। দুপুরের দিকে হঠাৎ শুনতে পেলাম কিছু বখাটে মিলে আমার মাদ্রাসার মৌলভী শিক্ষক মাওলানা নজরুল ইসলামকে লোহার রড ও ক্রিকেট খেলার স্ট্যাম্প দিয়ে মারধর করে রক্তাক্ত করেছে। পরে তাকে উদ্ধার করে ভূঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় বখাটে ছেলেদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে। আমি তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
এ ব্যাপারে ভুঞাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ ফরিদুল ইসলাম জানান, এখনও অভিযোগ পাইনি। তবে অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।