এবার ল্যাট্রিন ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে ধারণা নিতে বিদেশে যেতে চান ৯ কর্মকর্তা। নিম্ন আয়ের মানুষের স্যানিটেশনের আওতায় আনতে এ প্রকল্প। শুধু বিদেশ ভ্রমণ খাতে ব্যয় ধরা হয়েছে অর্ধকোটি টাকা। প্রকল্পের আওতায় আন্তর্জাতিক কর্মশালা ও সেমিনারে অংশ নিতে দুই দফা বিদেশ যাওয়ার আবদার তাদের। কোন দেশে যাবেন সেটি উল্লেখ নেই। তবে প্রকল্প উন্নয়ন প্রস্তাবের অনেক বিষয়ের সঙ্গে একমত নয় পরিকল্পনা কমিশন।
‘ওয়াশ সেক্টর স্ট্রেনদেনিং অ্যান্ড স্যানিটেশন মার্কেট সিস্টেম ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট ইন বাংলাদেশ’ প্রকল্পের আওতায় কর্মকর্তাদের এ প্রস্তাব। প্রকল্পের প্রধান উদ্দেশ্য দেশের ১২ লাখ পরিবারের প্রায় ৫৪ লাখ মানুষের স্যানিটেশন ব্যবহারের ধারণা, রক্ষণাবেক্ষণ, সুস্বাস্থ্য, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা সুবিধা এবং সিস্টেম শক্তিশালীকরণের মাধ্যমে জীবনযাত্রার উন্নয়ন করা।
জানা যায়, দুই দফায় মোট ৯ জন কর্মকর্তা বিদেশ ভ্রমণ করতে চান। এ খাতে মোট ব্যয় হবে ৫০ লাখ ২০ হাজার টাকা। প্রকল্পে মোট খরচের খাত দেখানো হয়েছে ৬৭টি। প্রকল্পের ডিপিপিতে ৩৫ নম্বর খাতে দেখানো হয়েছে ‘নলেজ শেয়ারিং ডিসেমিনেশন থ্রো পার্টিসিপেশন অব ইন্টারন্যাশনাল ওয়ার্কশপ অ্যান্ড সেমিনার’-এ পাঁচজন অংশ নেবেন। এ খাতে মোট ব্যয় হবে ২৭ লাখ ৮৯ হাজার টাকা। প্রতিজনের জন্য ব্যয় ৫ লাখ ৫৮ হাজার টাকা। এছাড়া প্রকল্প ব্যয়ের ৫৬ নম্বর খাতও একই। আন্তর্জাতিক সেমিনার ও কর্মশালায় অংশ নিতে যাবেন আরও চার কর্মকর্তা। এতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২২ লাখ ৩১ হাজার টাকা। এখানে প্রতি কর্মকর্তার জন্য ব্যয় হবে ৫ লাখ ৫৮ হাজার টাকা। তবে কর্মকর্তারা কোন দেশে যাবেন তা উল্লেখ করা হয়নি প্রকল্পের ডিপিপিতে (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনায়)।
প্রকল্পে প্রমোশন বাবদ পাঁচটি ফার্মের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১ কোটি ২৭ লাখ ২৮ হাজার টাকা। প্রশিক্ষণ খাতে ৪ কোটি ১৮ লাখ টাকা ছাড়াও বিহ্যাভিয়ার মেসেজিং (আচরণগত বার্তা) খাতে ৫৭ লাখ টাকা ব্যয় দেখানো হয়েছে।
স্থানীয় সরকার বিভাগের যুগ্ম সচিব (পলিসি সাপোর্ট অধিশাখা) নুমেরী জামান বলেন, প্রকল্পের আওতায় নিম্ন আয়ের মানুষদের স্যানিটেশন সুবিধার আওতায় আনা হবে। এছাড়া কাজ হবে স্যানিটেশন পলিসি নিয়ে। একসময় দেশে অনেক মানুষ খোলা স্থানে মলমূত্র ত্যাগ করত। কিন্তু এখন স্যানিটেশনের অনেক উন্নতি হয়েছে। বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তর হয়েছে। সুতরাং স্যানিটেশনে আরও কীভাবে উন্নয়ন করা যায় সে বিষয় নিয়ে পলিসি লেভেলে কাজ হবে।
স্যানিটেশেনর ধারণা নিতে কর্মকর্তাদের দুই ধাপে বিদেশ ভ্রমণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটা এখনো ফাইনাল স্টেজে আসেনি। সবকিছুই প্রাথমিক পর্যায়ে। তবে একই জিনিস দুটি জায়গায় থাকার কথা নয়।
প্রকল্পের প্রস্তাবনা এরই মধ্যে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগে পাঠিয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। মোট প্রস্তাবিত ব্যয় ১৩৫ কোটি ৯১ লাখ টাকা। এতে সুইজারল্যান্ডের সুইস এজেন্সি ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড কো-অপারেশন (এসডিসি) ১১০ কোটি ৪২ লাখ টাকা অনুদান দেবে। বাকি অর্থ মেটানো হবে সরকারি খাত থেকে। প্রকল্পটি অনুমোদনের পর পাঁচ বছর মেয়াদে বাস্তবায়ন করবে স্থানীয় সরকার বিভাগ। ৭০ হাজার ল্যাট্রিন নির্মাণ খাতে বরাদ্দ ধরা হয়েছে ২৮ কোটি টাকা। এছাড়া অধিকাংশ খাতই মূলত বিদেশ ভ্রমণ, প্রশিক্ষণ, পরিমর্শক ও যানবাহন কেনা সংক্রান্ত।