ঢাকা, সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

এসটিএস সিমুলেশন কোর্স ক্যাপ্টেনদের আত্মবিশ্বাস ও দক্ষতা বাড়াবে

নিজস্ব প্রতিবেদক : | প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার ১২ মে ২০২২ ০৪:৫৪:০০ অপরাহ্ন | চট্টগ্রাম প্রতিদিন

প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ মেরিন একাডেমিতে সম্পন্ন হয়েছে দুই দিনব্যাপী এসটিএস সিমুলেশন কোর্স। বসুন্ধরা গ্রুপ ও এক্সমার (বেলজিয়াম) এ কোর্সের উদ্যোগ নিয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১২ মে) বিকেলে বাংলাদেশ মেরিন একাডেমির নবনির্মিত সিমুলেশন সেন্টারে কোর্সটি শেষ হয়।

বেলজিয়াম ও ভারতের অভিজ্ঞ প্রশিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে এলপিজি, এলএনজি গ্যাস শিপ টু শিপ ট্রান্সফারের বিভিন্ন বিষয়ে এ কোর্সে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

বসুন্ধরা গ্রুপের শিপ অ্যান্ড লজিস্টিক্সের সিও ও ক্যাপ্টেন রুহুল আমিন বলেন, আমরা ছোট জাহাজে শুরু করি মোংলা টু ঢাকা। এরপর দুইটি জাহাজ হায়ার করি। আমাদের গ্যাস ক্যারিয়ার পরিচালনায় অভিজ্ঞতা ছিল না। বিদেশি এক্সপার্টদের সহায়তায় আমরা এসটিএস শুরু করি। আমরা প্রতিদিন ৫ হাজার ডলার দিয়ে কি পারসন এনেছি। এখন আমরা ৬ জনকে ট্রেনিং দিয়েছি। স্মোথ অপারেশনের জন্য আমরা টাগ সংগ্রহ করেছি। স্টোরেজ ভ্যাসেলের মাধ্যমে আমরা পুরো দেশকে সাপোর্ট দিতে চাই।  

তিনি বলেন, এক্সমারের সঙ্গে যৌথভাবে বসুন্ধরা গ্রুপ সব ধরনের জাহাজের ক্রুদের ট্রেনিং করাব। এদেশের ক্রুদের বিদেশ পাঠাব, বৈদেশিক মুদ্রা আহরণ করতে। তাদের চাকরির ব্যবস্থা হবে। তার হাতে স্মারক তুলে দেন মেরিন একাডেমির কমান্ড্যান্ট।

কোর্সে অংশ নিয়েছেন মেরিন একাডেমির বিভিন্ন ব্যাচের ক্যাপ্টেন মুরাদ হোসেন, নূর, কাজী মইনুল ইসলাম, ফরমান উল্লাহ আনসারী, মনজুরুল করিম ও মাসুদ রানা।  

ক্যাপ্টেন নূর বলেন, এ কোর্স দুইটি পার্টে বিভক্ত ছিল। থিওরি পার্টে ইক্যুইপমেন্ট টেস্ট, উপকরণ রেডি করা, দুইটি জাহাজের মাঝখানে ফ্যান্ডার (রাবার) বসানো, কোন সাইজের জাহাজের রশি কত বড় হবে, এসটিএস উপযোগী কিনা, কী কী উপকরণ লাগবে ইত্যাদি অপটিমোর সফটওয়্যার দিয়ে অ্যানালাইজ করা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সিমুলেশন পার্টে ডাইরেক্ট অপারেশন শেখানো হয়। স্রোতের তীব্রতা, বাতাসের দিক পরিবর্তন, জাহাজের আকার পরিবর্তনসহ তাৎক্ষণিক নানা চ্যালেঞ্জ প্রতিকূল পরিস্থিতি কীভাবে মোকাবেলা করতে হয় তা দেখানো হয়।  

মেরিন একাডেমির কমান্ড্যান্টের হাত থেকে সনদ নেন বেলজিয়ামের এক্সমার শিপ ম্যানেজমেন্টের হেড অব ফ্লিট ম্যানেজমেন্ট মি. সচিন মোহন, মেরিন অ্যান্ড এসটিএস সুপারিন্টেনডেন্ট ক্যাপ্টেন আদর্শ আগারওয়াল, ভারতের প্রশিক্ষক ক্যাপ্টেন পাওয়ান গুপ্তা, ভারতের পেস মেরিন সলিউশনস প্রাইভেট লিমিটেডের চিফ অপারেটিং অফিসার ক্যাপ্টেন সৌরভ কুমারসহ কোর্সে অংশগ্রহণকারী ক্যাপ্টেন ও পাইলটরা।

মেরিন একাডেমির কমান্ড্যান্ট ড. সাজিদ হোসেন বলেন, মেরিন একাডেমিতে এসটিএস কোর্স চালু করতে পেরে আমরা গর্বিত। বেলজিয়ামের বিখ্যাত কোম্পানি এক্সমার ও বসুন্ধরা গ্রুপের সহায়তায় একাডেমির সিমুলেশন সেন্টারে এ কোর্স চালু হয়েছে। আশাকরি আগামীতেও এটি চালু থাকবে।  

এসটিএসের ক্ষেত্রে দক্ষতার প্রয়োজন আছে। মাস্টার মেরিনারদের মাদার ভ্যাসেল পর্যবেক্ষণ, নিয়ন্ত্রণ ও গ্যাস খালাসে দক্ষতা প্রয়োজন। এ কোর্স অংশগ্রহণকারীদের আত্মবিশ্বাস বাড়াবে।

বসুন্ধরা গ্রুপের জিএম মাহমুদ নাসের বলেন, এটি বিশ্বমানের কোর্স। পৃথিবীর যেখানে এসটিএস হোক না কেন একজন 'কি পারসন' দরকার। আমাদের আগে হায়ার করতে হতো। এখন মেরিন একাডেমি থেকে যারা পাস করেছেন তাদের কোর্স করানো হয়েছে। এটির ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে।

মেরিন একাডেমির সিনিয়র নটিক্যাল ইনস্ট্রাক্টর ক্যাপ্টেন মো. তারেক আলী বলেন, টেকনিক্যাল চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় এ কোর্স গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। ট্রেনিং রেগুলার হলে ফিউচারে দেশের এসটিএস সেইফলি হবে।  

দেশের প্রথম পিওএসি মুরাদ হোসেন বলেন, দেশে প্রথম ভেরি লার্জ গ্যাস ক্যারিয়ার এনেছে বসুন্ধরা গ্রুপ। এতে বাংলাদেশি মেরিনারদের জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচন হয়েছে। এসটিএস অপারেশনের জন্য এ কোর্স জরুরি ছিল।   সঞ্চালনায় ছিলেন মেরিন একাডেমির মেরিন ইঞ্জিনিয়ার আতিকুর রহমান চৌধুরী প্রমুখ।