কুষ্টিয়া শহরে আবারো ব্যাঙ্গের ছাতারমত গজিয়ে উঠছে কিশোর গ্যাং। এই গ্যাং গুলো মুলতঃ চুরি, ছিনতাই, ইভটিজিং, মাদকসেবন ও বিক্রি এমনকি মানুষ হত্যারমত জঘন্য কাজ করে থাকে। ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিতে আরেক দলের উপর হামলা পাল্টা হামলা করে থাকে। ছোটখাটো বিষয় নিয়ে হত্যাকান্ডেরমত ঘটনা ঘটে।
অভিযোগ আছে শহরের কিশোর গ্যাংদের রাজনৈতিক দলের কিছু নেতা ও কথিত বড় ভাই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে আশ্রয় প্রশ্রয় দেয়। রাজনৈতিক দলের কিছু নেতার মদদপুষ্ট হয়ে এই গ্যাংগুলো দ্রুত বেপরোয়া হয়ে উঠছে। শহরের সচেতন মানুষ মনে করেন, রাজনৈতিক দলের মাত্র কয়েকজন নেতা তাদের হীনস্বার্থ হাসিল করার জন্য উঠতি বয়সী কিশোরদের ব্যবহার করছে। বিভিন্ন কিশোর গ্যাং দলে ভিড়িয়ে এইসব নেতারা দলেভারী করে নিজেদের শক্তিমত্তা জানান দেয়। মুলতঃ সিনিয়র ছাত্র ও যুব নেতারা এই গ্যাং ব্যাবহার করে থাকে।
বিভিন্ন দিবস, যে কোন উপলক্ষ অথবা কারোর জন্মদিনে এই কথিত বড় ভাইরা উপহার বা সরাসরি টাকা দিয়ে তাদের দেখভাল করেন। এমনকি কিশোর গ্যাংএর কেউ মাদক বা চুরি -মারামারি ইত্যাদি কারনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আটক হয় তাহলে, বিভিন্ন কৌশলে তদবির করে তাদের ছাড়িয়ে আনে এই কথিত বড় ভাইরা। বিনিময়ে কথিত বড় ভাইরা তাদের ব্যবহার করে মাদকব্যবসা, আধিপত্য তৈরী, মিছিল মিটিং এ দলভারি, চুরি, ছিনতাই ইত্যাদি কাজ করান বলে অভিযোগ করেন সচেতন নাগরিক।
একটি সূত্রে জানা যায়, এই ধরনের কিশোর গ্যাং মাদক বিক্রির সাথে জড়িত হয়ে পড়েছে তাদের মাদক ক্রেতা মুলত স্কুল কলেজের কোমলমতি শিশু কিশোররা। সম্প্রতি কুষ্টিয়া শহরে কিশোর গ্যাং এর তৎপরতা বৃদ্ধি পাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন শান্তিপ্রিয় মানুষ। প্রযুক্তির সহজলভ্যতায় দ্রুত একে অপরের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করে তারা একত্রিত হতে সক্ষম। সম্প্রতি কিশোর গ্যাং এর সাথে কয়েকটি ঘটনা সংঘটিত হওয়ার সচেতন মানুষ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন। এ সম্পর্কে কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিজ্ঞ কৌশলী (পিপি) ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক এ্যাডঃ অনুপ কুমার নন্দী সাংবাদিকদের বলেন, "সবসময় সবস্থানে আইন দিয়ে কিছু করা যায়না। কোমলমতি শিশুদের মাঝে যতদিন পারিবারিক ও সামাজিক সুশিক্ষা এবং ভালোমন্দের জ্ঞান না হয় ততদিন এদের নির্মুল করা কঠিন। সন্তান জন্মের পর তাকে মানুষেরমত মানুষ করে গড়ে তুলতে পরিবারের ভূমিকা অপরিসীম।
তাই সন্তানের ভারো মন্দের দায় পরিবারকে নিতে হবে।তা না হলে জাতীয় ও স্থানীয় অপরাধ বৃদ্ধির কারন হয়ে উঠবে। কুষ্টিয়া শিশু অপরাধ সংক্রান্ত বিষয়ে দায়িত্বরত প্রবেশন কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, সম্প্রতি কুষ্টিয়াতে ৪০ টি শিশু কিশোর অপরাধের ঘটনায় জড়িত শিশি কিশোরদের নিয়ে কাজ করছি। তাদের অভিভাবকদের সাথে নিয়মিত কথা বলে তাদের আইনি সহায়তা ও পুনর্বাসনের কাজ করা হচ্ছে। কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাব্বিরুল আলম সাংবাদিকদের বলেন,কুষ্টিয়া শহরের কিশোর গ্যাং এর বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলেই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
তবে কিশোর অপরাধ রোধ করতে তাদের পরিবারের ভূমিকা অপরিসীম। পরিবারকে নিয়মিত খোজ রাখতে হবে সন্তান কোথায় যাচ্ছে কি করছে কাদের সাথে মেলামেশা করছে।