ঢাকা, শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ই আশ্বিন ১৪৩১

গাইবান্ধারয় প্রধান শিক্ষককে পিটিয়ে আহত

বগুড়া প্রতিনিধঃ | প্রকাশের সময় : বুধবার ১৯ অক্টোবর ২০২২ ০৩:০৩:০০ অপরাহ্ন | দেশের খবর


 সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্যের মারপিটে গুরুতর আহত হয়ে বগুড়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক প্রধান শিক্ষকের কান্না যেন থামছে না। বার বার বলছে আমি এই মুখ দেখাবো কি করে। গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা উপজেরার ‘মজিদের ভিটা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য আব্দুল করিম তার দলবল নিয়ে প্রধান শিক্ষক শাহ মোঃ শফিউর রহমানকে চেয়ার ও টেবিলের পা দিয়ে পিটিয়েছে। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হন প্রধান শিক্ষক শাহ মোঃ শফিউর রহমান। এ ব্যাপারে সাঘাটা থানায় মামলা দায়ের করলেও এখনও কোন প্রতিকার পাননি ওই প্রধান শিক্ষক।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ১১ অক্টোবর সাঘাটা ফুলছড়ি উপ নির্বাচনের আগের দিন সকালে ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মোঃ আব্দুল করিম বিদ্যালয়ে এসে মাঠের মাঝে জমে থাকা পানি দেখে ক্ষেপে যান। এসময় প্রধান শিক্ষক তাকে বুঝানোর চেষ্টা করেন খুব তাড়াতাড়ি মাটি ফেলে পানির শুকানোর ব্যবস্থা করা হবে। এতে ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ক্ষিপ্ত হয়ে বাক বিতন্ডার এক পর্যায়ে  বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, উপজেলা পর্যায়ের শ্রেষ্ঠ শিক্ষক, উপজেলা স্কাউটের প্রশিক্ষক শাহ মোহাম্মদ শফিউর রহমানকে প্রথমে অকর্থ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। পরে চেয়ার ও টেবিলের পায়া দিয়ে বেদম মারপিট করে। এতে শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত করলে তার মাথা ও চোখে মারাত্মক জখম হয় ।
মারপিটের সময় বিদ্যালয়ের পিয়ন সেলিম মিয়া ও সমাজ সেবক বাদল এগিয়ে আসলে তাদেরকেও করিম মেরে আহত করে। ম্যানেজিং কমিটির সদস্য করিম বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষ জানালা দরজা ভাংচুর করে। পরে তারা যাবার সময় প্রধান শিক্ষকের গাইবান্ধ্যা হ ৪০৩৩ নাম্বারের মোটর সাইকেলটিও ভাংচুর করে।
মারপিটে প্রধান শিক্ষক  জ্ঞান হারিয়ে ফেললে তার বাড়িতে খবর দেয়া হয়। খবর পেয়ে তার স্ত্রী ও জামাই তাকে সাঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান।  সেখানে ১১ অক্টোবর হতে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত চিকিৎসা শেষে তার অবস্থার অবনতি হলে স্থানীয় ডাক্তারদের পরামর্শে তাকে শজিমেক হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। বর্তমানে তিনি শজিমেক হাসপাতালের জরুরী বিভাগের  ১ নং ওয়ার্ডের ১৬ নং রুমে চিকিসাধীন আছেন। তার শারিরীক অবস্থা ভালো নয়। এবিষয়ে গত ১১ তারিখে সাঘাটা থানায় এজাহার দায়ের করা হয়েছে।
সাঘাটা থানার তদন্ত কর্মকর্তা এজাহার গ্রহন করে এস আই জহুরুল ইসলামকে বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে ঘটনার সত্যতা খুঁজে পান। পরে গত ১৮ অক্টোবর ২০২২ মঙ্গলবার সাঘাটা থানায় মামলা দায়ের করা হয়। মামলা নং ১১/২০২২। এদিকে এই নাক্যারজনক মারপিটের বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে জানানো হলে তিনি বলেন আমি প্রধান শিক্ষককে আইনের সহায়তা নিতে বলেছি। এদিকে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির আহবায়ক মোঃ আব্দুল হান্নানের সাথে কথা বললে তিনিও আইনগত ব্যবস্থা নেবার পরামর্শ দেন।
এবিষয়ে সাঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবহিত করেছেন বলে জানান বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহ মোঃ শফিউর রহমান।
এদিকে প্রধান শিক্ষক শাহ মোঃ শফিউর রহমানকে মারপিটের ঘটনায় এলাকার শিক্ষক সমাজ ও এলাকাবাসী ফুঁসে উঠেছেন। তারা অবিলম্বে প্রধান শিক্ষকে মারপিটের ঘটনার বিচার দাবি করেন এবং এঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারের দাবি জানান।