দায়িত্ব বন্টনের দ্বন্ধ এবং দায়িত্বে অবহেলায় দুই চিকিৎসকের বেতন বন্ধ রাখা। এসবের জেরে আড়াইশ' শয্যাবিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে সৃষ্টি হয়েছে অচলাবস্থা। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের সঙ্গে অসদাচরণ করার অভিযোগ উঠেছে তিন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে।
এসব নানান নাটকীয়তায় হাসপাতালের প্রশাসনিক কার্যক্রম কার্যত অচল হবার পাশাপাশি সাধারণ রোগীরা পড়েছেন দুর্ভোগে।
সোমবার (৩১ জুলাই) সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল তত্ত্বাবধায়কের কক্ষে রানা নূরুস শামস, ওবায়দুল হক ও ফাইজুর রহমান নামীয় তিন চিকিৎসক অসদাচরণ করেন বলে অভিযোগ হাসপাতাল তত্ত্বাবধায়কের। দায়িত্বে অবহেলায় দুই চিকিৎসকের বেতন বন্ধ রাখার জেরেই তত্ত্বাবধায়কের সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগ তুলেন ওই তিন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে।
এই ঘটনার পর থেকে হাসপাতালের প্রশাসনিক কার্যক্রম কার্যত অচল হয়ে পড়ে। অন্যদিকে হাসপাতালের চিকিৎসকরা তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. ওয়াহিদুজ্জামানের বিরুদ্ধে অসন্তোষ জনাতে সকালের ঘটনার পর মিটিং করেন এবং অন্তত এক ঘণ্টা হাসপাতালে রোগী দেখা বন্ধ রাখেন। এতে দুর্ভোগে পড়েন সাধারণ রোগীরা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. ওয়াহিদুজ্জামান জানান, সোমবার (৩১ জুলাই) সকালে চক্ষু বিভাগের চিকিৎসক ডা. ওবায়দুল হকসহ তিনজন চিকিৎসক এসে তিনদিন বহি:র্বিভাগে রোগী দেখবেন এবং বাকি তিনদিন বৈকালিক সেবা দেবেন বলে জানান। কিন্তু বহি:র্বিভাগ বন্ধ থাকলে রোগীরা চিকিৎসক না পেয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করবেন জানালে ওই তিন চিকিৎসক তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন।
এরই এক পর্যায়ে তারা কক্ষের দরজায় লাথি দিয়ে বের হয়ে যান। এছাড়া দায়িত্বে অবহেলার কারণে চলতি মাস থেকে হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. রানা নূরুস শামস ও ফাইজুর রহমানের বেতন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এই নিয়েও তারা ক্ষুব্ধ ছিলেন। পরে সোমবার সকালের ঘটনার জেরে ডা. রানা নূরুস শামস, ডা. ফাইজুর রহমান এবং ডা. ওবায়দুল হক দ্বিতীয়বার আমার কক্ষে এসে আবার অসদাচরণ করাসহ তত্ত্বাবধায়কের কোনো নির্দেশনা মানবেন না বলেও জানান।
আড়াইশ' শয্যাবিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের উদ্বুত পরিস্থিতি বিষয়ে হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. রানা নূরুস শামস বক্তব্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করে বলেন, 'যেহেতু আমার বিরুদ্ধে অহেতুক অভিযোগই তুলেছেন, সেহেতু আমি লিখিতভাবেই বিষয়টি জানাবো। অপর আবাসিক চিকিৎসক ডা. ফাইজুর রহমান অভিযোগ তুলে বলেন, 'হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. ওয়াহিদুজ্জামান সকল চিকিৎসকের সঙ্গেই দুর্ব্যবহার করেন। সেজন্য এখন থেকে কেউ তাঁর নির্দেশনা মানবেন না।'