এম এ পাশের সনদ জাল এবং পেশাগত অসদাচরণের দায়ে বগুড়ার শেরপুর উপজেলার সুঘাট ইউনিয়নের জয়লাজুয়ান ডিগ্রি কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক রঞ্জন কুমার দে এবং শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় পাশ না করেও জাল সার্টিফিকেট দিয়ে চাকুরী গ্রহণের দায়ে সমাজকর্ম বিভাগের প্রভাষক খন্দকার শহীদুল ইসলামকে চাকুরী হতে বরখাস্ত করা হয়েছে।
এব্যাপারে কলেজের অধ্যক্ষ হোসেন আলীর সঙ্গে কথা বললে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, রঞ্জন কুমার দে এম এ পাশ না করেই জাল সার্টিফিকেট দিয়ে চাকুরী গ্রহন করেছিলেন। বিষয়টি যখন ধরা পড়ে তখন যথাযথ তদন্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেই তাঁকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়া প্রভাষক খন্দকার শহীদুল ইসলাম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার সার্টিফিকেট জাল হওয়ায় তাকেও চাকুরী থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
এদিকে কলেজ পরিচালনা পর্ষদের একজন সদস্য জানান, প্রভাষক রঞ্জন কুমার দে’র শুধু সার্টিফিকেট জাল করেছেন সেটাই নয়, তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে। যেমন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সম্মানিত ব্যক্তিবর্গের বিরুদ্ধে আপত্তিকর কটুক্তিপূর্ণ ও রাষ্ট্রদ্রোহিতামূলক মন্তব্য পোষ্ট করে কলেজের সুনাম ও ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করা, কলেজে চাকুরীরত অবস্থায় কোচিং সেন্টার ও কেজি স্কুল পরিচালনা করা, শিক্ষক থাকাকালীন একাধিকবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কর্তৃপক্ষের বিনা অনুমতিতে রাজনৈতিক দলের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করা, কলেজ অধ্যক্ষের কক্ষে টানানো জাতির জনকের ছবি ভাংচুরের সঙ্গে জড়িত থাকাসহ নানা অভিযোগ তার বিরুদ্ধে রয়েছে। এসব বিষয় নিয়ে তার বিরুদ্ধে তদন্ত হয়েছে। তদন্তে তাঁকে দোষী সাবস্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এছাড়া জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শকও তার বিরুদ্ধে তদন্ত করেছেন। সবগুলো তদন্ত প্রতিবেদনেই তার সার্টিফিকেট জাল ধরা পড়েছে এবং পেশাগত অসাদাচরণ উঠে এসেছে।
এ সব ঘটনায় গত ১৮ মার্চ ২০২০ তারিখে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। ওই সময় অর্থাৎ ১৮ মার্চ ২০২০ তারিখ হতে ১৬ মার্চ ২০২২ তারিখ পর্যন্ত মোট ১ বছর ১১ মাস ১৯ দিনের মধ্যে মাত্র ১৬ দিন কলেজে উপস্থিত হয়ে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে প্রভাষক রঞ্জন কুমার দে। শুধু তাই নয় ওই সময়ের মধ্যে বেতন বিলেও স্বাক্ষর করেনি রঞ্জন কুমার দে। সব মিলিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ তাকে বরখাস্ত করেন।
কলেজ অধ্যক্ষ মোঃ হোসেন আলী আরো জানান, ২০১১ সালে রঞ্জন কুমার দে জয়লা জুয়ান ডিগ্রী কলেজে ইংরেজি বিষয়ে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। পরবর্তীতে জানা যায়, রঞ্জন কুমার দে, এম এ পরীক্ষার যে সার্টিফিকেট দাখিল করেছে তা জাল। জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শক বিষয়টি তদন্ত করেছেন তিনিও তাঁর তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন, রঞ্জন কুমার দে, ‘দারুল ইহসান ইউনিভার্সিটিতে কখনই অধ্যায়ন করেনি। সে যে, সার্টিফিকেট দাখিল করেছে তা জাল।