ঢাকা, বৃহস্পতিবার ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ঠা আশ্বিন ১৪৩১

জৈন্তার ঘাটেরচটিতে ডালিম নয়, শম্ভূ দেবনাথের মরদেহ দাফন হয়েছিল

জৈন্তাপুর প্রতিনিধি: | প্রকাশের সময় : শনিবার ১২ মার্চ ২০২২ ১২:৫১:০০ অপরাহ্ন | সিলেট প্রতিদিন

সিলেটের জৈন্তাপুর উপজালার চিকনাগুন ইউনিয়নের ঘাটেরচটি এলাকার মৎস্য খামার থেকে উদ্ধার হওয়া মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করেছে পুলিশ। উদ্ধারের ৪ দিন পর পুলিশ জানিয়েছে, মরদেহটি কানাইঘাটের শম্ভু দেবনাথের।

শম্ভূর মরদেহ ইসলামী রীতি মেনে দাফন করা হয়েছিলো। একই সময়ে খুন হয়েছিলেন ডালিম আহমদ নামে জৈন্তাপুরের আরেক যুবক। শম্ভূকে ডালিম ভেবে তার মরদেহটির জানাযা ও দাফন করে ডালিম আহমদের পরিবার।

শুক্রবার শম্ভূ দেবনাথের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়। এরপর ওসমানী হাসপাতাল মর্গে ডিএনএ সংগ্রহের পর শম্ভূর পরিবারের কাছে তার মরদেহ হস্তান্তর করে পুলিশ। সন্ধ্যা ৭টায় কানাইঘাট উপজেলার লামা ঝিঙ্গাবাড়ির এলাকায় নিহতের সৎকার সম্পন্ন হয়। শম্ভু দেবনাথ ওই উপজেলার লামা ঝিঙ্গাবাড়ির শৈলেশ চন্দ্র নাথের ছেলে। ৪ মার্চ থেকে নিখোঁজ ছিলেন শম্ভূ।

জানা যায়, গত ৫ মার্চ স্ত্রীকে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে গিয়ে নিখোঁজ হন সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার চিকনাগুল ইউনিয়নের ঘাঠেরচটি গ্রামের ডালিম আহমদ। এর দুইদিন পর ৭ মার্চ বিকেলে ঘাঠেরচটি এলাকার একটি মৎস্য খামার থেকে পুলিশ উদ্ধার করে মুখমণ্ডল বিকৃত একটি মরদেহ। গায়ের পোশাক দেখে ডালিমের পরিবার নিশ্চিত করে এটি তার মরদেহ। ময়নাতদন্ত শেষে মঙ্গলবার নিজ বাড়িতে এই মরদেহ দাফন করে ডালিমের পরিবার।

এদিকে ঘটনার তদন্তে নেমে জৈন্তাপুর থানা পুলিশ মঙ্গলবার রাতেই ঘাঠেরচটি এলাকার নায়াটিলা জামে মসজিদসংলগ্ন একটি বিদ্যুতের খুঁটিতে রক্ত দেখতে পায়। সেই সূত্র ধরে মসজিদসংলগ্ন কৃষিজমিতে মাটিচাপা দেয়া অবস্থায় একটি মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

বিকৃত এ মরদেহ শনাক্তে পরদিন নেয়া হয় আঙুলের ছাপ। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) দেখতে পায়, আঙুলের ছাপটি নিখোঁজ ডালিমের। তখন রাজমিস্ত্রি ডালিমের বাবা বাচ্চু মিয়াকে খবর দেয়া হয়। তিনি সন্তানের মরদেহ নিয়ে দাফন করেন আগের কবরের পাশে।

এরপর মৎস্য খামার থেকে উদ্ধার হওয়া মরদেহের পরিচয় শনাক্তে নামে পুলিশ।

কানাইঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম দস্তগীর আহমদ বলেন, গত ৪ মার্চ গরু চরাতে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছিলেন শম্ভু দেবনাথ। পরদিন ৫ মার্চ এ ব্যাপারে তার মামা পরিমল দেবনাথ সিলেটের শাহপরাণ (র.) থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।

তিনি বলেন, শুক্রবার আঙ্গুলের ছাপ মিলিয়ে দেখা যায় মৎস্য খামার থেকে পাওয়া মরদেহটি শম্ভূ দেবনাথের। শম্ভূর পরিবারও থানায় এসে পোষাক ও ছবি দেখে এটি শম্ভূর বলে নিশ্চিত করেন।

এরপর শুক্রবার দুপুর ১২টায় জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার আল বশিরুল ইসলাম উপস্থিতিতে ঘাটেরচটি গ্রামে কবরস্থান থেকে শম্ভু দেবনাথের লাশ উত্তোলন করা হয়। লাশ উত্তোলনের পর ডিএনএ সংগ্রহ করে পরিবারের কাছে তার মরদেহ হস্তান্তর করা হয়।  

শম্ভূর ভাই কৌশিক দেবনাথ বলেন, প্রায় এক সপ্তাহ ধরে আমাদের ভাই নিখোঁজ ছিলো। অবশেষে আজ তার মরদেহের খোঁজ পাই।

তিনি বলেন, আজ বিকেল ৩ টায় পুলিশ আমাদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করেছে। এরপর সন্ধ্যা ৭টায় কানাইঘাট উপজেলার লামা ঝিঙ্গাবাড়ির এলাকায় মরদেহ সৎকার করি।