দেশে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থার দুর্দশার বড় কারণ অপব্যয় বলে অভিযোগ তুলেছেন রেল উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। তাই খরচ কমাতে রেলের কাজে সংশ্লিষ্ট সেনাবাহিনীসহ সবার প্রতি অনুরোধ জানান তিনি। অপব্যয় কমাতে পারলে রেল সেবার প্রত্যাশা পূরণ হবে বলে মনে করছেন রেল উপদেষ্ঠা।
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় কমলাপুর রেলস্টেশনে নতুন দুই জোড়া ট্রেনের উদ্বোধনকালে এমন অভিযোগ তুলেন তিনি। এসব নতুন ট্রেনের মধ্যে ৮২৫/৮২৬ নং জাহানাবাদ এক্সপ্রেস ঢাকা-খুলনা ও ৮২৭/৮২৮ নং রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস ঢাকা-বেনাপোল রুটে চলাচল করবে।
রেল উপদেষ্টা বলেন, রেলের আজ যে অবস্থা, এ অবস্থায় আসার একটি বড় কারণ হচ্ছে অপব্যয়। আমাদের যে কোনো প্রকল্পের ব্যয় ভারত কিংবা আশপাশের দেশের তুলনায় অনেক বেশি। আমরা যত্রতত্র স্টেশন স্থাপন করেছি। যত্রতত্র রেললাইনের বিস্তার করা হয়েছে কিন্তু লোকোমোটিভ আছে কিনা, জনবল আছে কি না সেগুলোর ব্যবস্থা না করেই এগুলোর বিস্তার করা হয়েছে। রেলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সেনাবাহিনীসহ অন্যান্য যারা কাজ করেন সবার প্রতি অনুরোধ জানাবো কীভাবে রেলের খরচ কমানো যায়। ব্যয় যদি কমানো যায় তাহলে রেল সেবার যে প্রত্যাশা সেটি আমরা পূরণ করতে পারবো।
সবাই বাড়ির পাশে ট্রেন স্টেশন চায় জনগনের এমন দাবি উল্লেখ করে মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, সবাই আশা করেন যে রেলগাড়িটি তাদের বাড়ির পাশে থামবে। আবার তারা এটাও চান যে দ্রুততম সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাবেন। এটা সম্ভব না। আপনি যতই স্টপেজের সংখ্যা বাড়াবেন যাতায়াতের সময় বাড়বে। আপনি অন্য একটা যানবাহনে রেলস্টেশনে যাবেন। এটা একটা সেকেন্ডারি ট্রান্সপোর্টেশন। যেখানে যাত্রী বেশি হবে, রাজস্ব বেশি পাওয়া যাবে, সেখানেই গাড়ি থামবে।
রেলপথ উপদেষ্টা বলেন, আজ আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের দিন যে পদ্মা রেল সেতু সংযোগের মাধ্যমে খুলনা এবং ঢাকার মধ্যে একটা দ্রুত যাতায়াতের ব্যবস্থা হয়েছে।
রেলের নানান রকম সংকট আছে জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা অনেকেই অসন্তোষ ব্যক্ত করে থাকেন, কিন্তু আপনাদের জানতে হবে রেল কেন আপনাদের প্রকৃত সুবিধা দিতে পারে না। আমাদের লোকোমেটিভের সংকট আছে, কোচের সংকট আছে, ওয়াগন ও লোকবলের সংকট আছে। নতুন ট্রেনগুলো সময়ানুবর্তিতা বজায়, কোচগুলো পরিষ্কার রাখতে রেল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন উপদেষ্টা।
এ সময় রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফাহিমুল ইসলাম, বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েনসহ রেলের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বায়ান্ন/এমএমএল/পিএইচ