জয়পুরহাট জেলার ক্ষেতলাল উপজেলার আমানিপাড়া গ্রামে টিনের চালে পরে থাকা গাছের পাতা কাটাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ একই পরিবারের ছয় সদস্য আহত হয়েছে। বর্তমানে তারা ক্ষেতলাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
উক্ত বিষয়ে ক্ষেতলাল থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ঘটনায় আহত মিলন।
থানা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আমানিপাড়া গ্রামের মৃত-সিরাজুল মন্ডলের ছেলে মিলন মন্ডল (৩২) ও সোহেল রানা (২৮) দুই ভাই। সোহেল রানার বসতবাড়ির পিছনে একই গ্রামের মৃত-কাছিম উদ্দিন এর ছেলে নুরুল ইসলাম (৫০) এর কয়েকটি কদম গাছ রয়েছে, যার পাতা পড়ে সোহেল রানার বসতবাড়ির ঘরের টিন নষ্ট হয় ফলে তারা নুরুল ইসলাম কে দীর্ঘদিন ধরে গাছের ডাল কেটে দিতে বললে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান। ১১ (নভেম্বর) সকালে সোহেল রানা তার ঘরের টিনের উপর উঠে টিন নষ্ট হওয়া দেখে ওই কদম গাছের কিছু পাতারি ডাল ভেঙ্গে দেয়।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষ নুরুল ও তার পরিবারের সদস্যরা দুপুর আনুমানিক ২.০০ ঘটিকার সময় সোহেল রানা কে বাড়িতে না পেয়ে তার ভাই মিলনের বাড়িতে জোরপূর্বক প্রবেশ করিয়া মিলকেও না পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে বাড়ির বিভিন্ন জিনিস পত্র ভাংচুর করে। ১. শাহানাজ স্বামীঃ মিলন, ২.রেবেকা স্বামীঃ মৃত-সিরাজুল, ৩.রাবেয়া মিলনের নানী, ৪. মুনিরা (১২) ৮ম শ্রেণীর ছাত্রী পিতা মিলন, ৫. সাদিকুল (০৯) ২য় শ্রেণীর ছাত্র পিতা মিলন। উক্ত পাঁচ জন কে দেশীয় অস্ত্র লাঠি, ছুড়ি, লোহার রড ইত্যাদি দ্বারা আঘাত করে গুরুত্বরভাবে আহত করে। ঘটনাটি মিলন জানতে পেরে বাড়িতে এসে স্থানীয়দের সহোযোগিতায় পরিবারের পাঁচ সদস্যদের ক্ষেতলাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান।
১২ (নভেম্বর) সকালে ওই ঘটনার জের ধরেই আবারও প্রতিপক্ষ নুরুল বাহিনীর সদস্য গণ তার উপর দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আক্রমণ করলে মিলন মন্ডলও গুরুত্বরভাবে আহত হয় পরে তাকেও ক্ষেতলাল উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়।
এ বিষয়ে মিলন জানান, আমার ভাইয়ের ঘরের টিনের উপর নুরুল ইসলামের কদম গাছের ডাল ও পাতা পড়ে টিন নষ্ট হয়। আমি নিজেও নুরুল কে কয়েকবার ডাল কেটে দিতে বলেছি কিন্তু তারা গায়ের জোরে বিষয়টি এড়িয়ে যায়। আমি পেশায় একজন শ্রমিক আমি স্থানীয় এক কোল্ড স্টোরে কাজ করি। সারাদিন বাহিরে থাকি, আমার ভাই তার টিনের উপর আসা কদম গাছের কয়েকটি পাতারি ডাল কেটে দিয়েছে তাকে কেন্দ্র করে আমার পরিবারে পাঁচ সদস্যকে নরুল ও তার পরিবারের সদস্যরা আমার নিজ বাড়িতে ঢুকে বেআইনিভাবে আমার স্ত্রী, মা,নানী ও ছেলে মেয়েকে মারধর করে গুরুতর ভাবে আহত করে এবং আজ সকালে আমাকেও ধরে মারধর করে আমি এর সুষ্ঠ বিচার চাই।
মিলনের বউ শাহানাজ জানায়, আমি বাড়িতে ছেলে মেয়েদেন ভাত বেড়ে দিচ্ছিলাম ঠিক সেই সময় নুরুল তার বউ, ছেলে,মেয়ে ও মেয়ে জামাই জোর পূর্বক আমাদের বাড়িতে প্রবেশ করিয়া অকর্থ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে আমি বাঁধা দিলে প্রথমে আমাকে মারধর করে পরে বাড়িতে থাকা সকল সদস্যদের উপর আক্রমণ করে। আমরা এই ঘটনার সুষ্ঠ বিচার চাই।
মিলনের ৮ম শ্রেণী পড়ুয়া মেয়ে জানায়, আমি স্কুল থেকে বাড়িতে ফিরে ভাত খাচ্ছিলাম আমাকে ভাতের থালের উপরেই চুলের মুটি ধরে কিল ঘুষি সহ শরিরের বিভিন্ন জায়গায় মারধর করে নুরুলের ছেলে জয়।
মিলনের ২য় শ্রেণী পড়ুয়া ছেলে জানায়, আমি বাড়িতে মারামারি দেখে ভয়ে আমাদের খাটের নিচে লুকিয়ে ছিলাম সেখান থেকে আমাকে টেনে বের করে তারা মেরেছে।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মিলন মন্ডল বাদী হয়ে ০৬ (ছয়) জন কে আসামি করে ক্ষেতলাল থানায় একটা অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযুক্তরা হলেন ১. নুরুল ইসলাম (৫০) পিতা মৃত-কাছিম উদ্দিন, ২. মোছঃ বুলবুলি (৪০) স্বামী নুরুল ইসলাম, ৩. জয় (২০) পিতা নুরুল ইসলাম, সর্বসাং আমানিপাড়া থানা ক্ষেতলাল। ৪. মফিদুল ইসলাম (৩৬) পিতা ফটুক, ৫. পারুল বেগম (২৫) স্বামী মফিদুল ইসলাম উভয়ের সাং বাঁশখুর থানা পাঁচবিবি, ৬. পাতাশী (২৭) পিতা নুরুল ইসলাম সাং আমানিপাড়া, সর্বজেলা জয়পুরহাট।
এ বিষয়ে নুরুল ও তার পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলতে গেলে তাদের কাউকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি।
ক্ষেতলাল থানা অফিসার ইনচার্জ নিরেন্দ্রনাথ মন্ডলের সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি জানান, আমরা অভিযোগ পেয়েছি ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।