ঢাকা, বুধবার ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ৩০শে মাঘ ১৪৩১

ঝিনাইদহে অপরিকল্পিত খাল খনন, মাটি বিক্রি: হুমকির মুখে সড়ক, বাড়িঘর ও ফসলী জমি

বসির আহাম্মেদ, ঝিনাইদহ | প্রকাশের সময় : শনিবার ২১ ডিসেম্বর ২০২৪ ০২:৪২:০০ অপরাহ্ন | দেশের খবর

ঝিনাইদহে অপরিকল্পিত খাল খনন আর খননের সেই মাটি বিক্রি করায় হুমকির মুখে পড়েছে ফসলী জমি। ইতমধ্যে ধ্বসে গেছে অর্ধশত পরিবারের বসতভিটাসহ স্থাপনা। স্থানীয়দের অভিযোগ, খাল খননে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম আর খাল পাড়ের মাটি বিক্রি করে দেওয়ায় এ দুর্ভোগ তাদের। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের দাবী অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের কারণে এ ভাঙন দেখা দিয়েছে। নেওয়া হচ্ছে কার্যকরী ব্যবস্থা।

স্ত্রী-সন্তান, ভাই ও মা’কে নিয়ে মাত্র ১ শতক জমিতে মহাসড়কের পাশে খাল পাড়ে বসবাস করেন হরিনাকুন্ডু উপজেলার মকিমপুর গ্রামের কৃষক আলম মন্ডল। গত কয়েকদিন আগে ভাঙন শুরু হলে তার বসতভিটার খালগর্ভে চলে যায়। খোলা আকাশের নিচে রান্নাসহ বসবাস করছেন হতদরিদ্র এই পরিবারটি।

আলম মন্ডলের মকিমপুর গ্রামের বাগমারা খাল পাড়ের অর্ধশত পরিবার এখন ভাঙনের ঝুকিতে রয়েছে। খালের দুই পাশের বাসিন্দাদের গাছপালা, বসতঘর, টয়লেট ভেঙে গিয়েছে। অপরদিকে খাল পাড়ে থাকা এলজিইডির সড়কেরও একই অবস্থা। কোন কোন স্থানে সড়কের অর্ধেক নেমে গেছে খালে। হুমকির মুখে রয়েছে অন্যান্য বসতভিটা ও ফসলী জমি।

মশিয়ার রহমান নামের এক কৃষক জানান, আমার জমি খালে যে কোন সময় বিলিন হয়ে যেতে পাড়ে। এখন আমি কি করবো কিছুই বুঝতে পাড়ছিনা। তাই দ্রুত খালের পাড় বাঁধার দাবি জানাচ্ছি।

ইউনুছ আলী নামের এক কৃষক জানান, খাল খননের সময় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজন খাল পাড়ের মাটি বিক্রি করে দেওয়ায় এ সমস্য দেখা দিয়েছে। যদি খালের মাটি বিক্রি না করতো তাহলে এ সমস্য হতোনা। তাই দ্রুত খালের পাড় বাঁধার দাবি জানাচ্ছি।

সবুজ হোসেন নামের এক পথচারী বলেন, খালের ভাঙ্গনে সড়কটি প্রায় বিলিন হয়ে গেছে। যদি এখনি খালের পাড় বাঁধা না হয় তাহলে এই সড়কটি দিয়ে চলাচল করা অসম্ভব হয়ে যাবে। তবে এই সড়কটি দিয়ে গ্রামের কৃষকেরা মাঠ থেকে ফসল আনা-নেওয়ার জন্য আর ব্যবহার করতে পারবে না। খালের পাড় না বাঁধলে এই সড়কটি দিয়ে কোন পন্য আনা-নেওয়া সম্ভব না।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান খননে অনিময় আর খনন করা পাড়ের মাটি বিক্রি করায় এ ভাঙন দেখা দিয়েছে। দ্রুত খাল সংস্কার করে ভাঙন রোধ করার দাবী তাদের।

ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী (অঃদাঃ) রঞ্জন কুমার দাস বলেন, এ বছর অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে এ ভাঙন দেখা দিয়েছে। সমস্যা সমাধানে কাজ করছেন তারা।

উল্লেখ্য, ২০২২-২৩ অর্থবছরে এই খালটি খনন করে ইউনুস এন্ড ব্রাদার্স নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। ১৩.৫ কিলোমিটার এই খালটি খননে ব্যায় হয়েছিলো ২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা।

বায়ান্ন/প্রতিনিধি/পিএইচ