টাঙ্গাইলে মৃত্যুদন্ড ও যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত দুই আসামীকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) দুপুরে গ্রেফতারকৃতদের পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- সদর উপজেলার চৌবাড়ীয়া গ্রামের ওমর আলীর ছেলে মৃত্যুদন্ড সাজাপ্রাপ্ত শাহাদৎ হোসেন (৩৬) ও সখীপুর উপজেলার রতনপুর গ্রামের মৃত দরবেশ আলীর ছেলে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত বাদল মিয়া (৪৫)।
র্যাব ১২ সিপিসি ৩ টাঙ্গাইলের কোম্পানী কমান্ডার মেজর মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, ২০১৭ সালের ১১ জানুয়ারি ফুসলিয়ে বাদল মিয়া এক কলেজ ছাত্রীকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে তাকে পরিত্যক্ত ঘরে ছয় মাস আটকে রেখে ধর্ষণ করেন। ওই বছর ২৯ জুলাই ওই ছাত্রীকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ওই ঘর থেকে উদ্ধার করা হয়। পরে ওই ছাত্রীর ভাই বাদি হয়ে সখীপুর থানায় বাদল মিয়াকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। বাদল মিয়া গ্রেফতার হওয়ার পর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। ২০১৮ সালের ১ জুন তদন্ত শেষে গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) শামসুল ইসলাম বাদল মিয়ার বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। মামলা চলাকালে বাদল মিয়া জামিনে মুক্তি পান। এরপর থেকে তিনি পলাতক ছিলেন। চলতি বছরের ১৬ আগস্ট মঙ্গলবার বিকেলে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক খালেদা ইয়াসমিন বাদল মিয়াকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের রায় দেন। এছাড়াও তাকে এক লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছর কারাদন্ড দেওয়া হয়।
র্যাব কমান্ডার আরও জানান, ২০০২ সালে দন্ডিত আসামী শাহাদাৎ হোসেনের সাথে সদর উপজেলার ঘারিন্দা ইউনিয়নের আউলটিয়া গ্রামের জাহেরা খাতুনের বিয়ে হয়। বিয়ের ৩ থেকে ৪ মাস পরে ১০ হাজার টাকা যৌতুক দাবি করে শাহাদাৎ। জাহেরা খাতুনের পরিবার যৌতুকের টাকা দিতে না পারায় শাহাদাৎ স্ত্রীকে নির্যাতন করে। পরে ওই বছরের ৬ সেপ্টেম্বর শাহাদাৎ শ^শুর বাড়িতে যায়। পরের দিন ভোরে বাড়ির লোকজন বাড়ির দক্ষিন পাশে একটি পুকুরে জাহেরা খাতুনের মরদেহ ভেসে থাকতে দেখে। মরদেহের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়। ওইদিনই নিহতের ভাই ইউনুস আলী বাদি হয়ে সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। শাহাদাৎ হোসেন জামিনে মুক্তি পেয়ে আত্মগোপনে চলে যায়। মামলায় চিকিৎসক, আইওসহ মোট ৯ জন স্বাক্ষী স্বাক্ষ্য প্রদান শেষে ১৩ জানুয়ারি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যালের বিচারক বেগম খালেদা ইয়াসমিন আসামী শাহাদতের অনুপস্থিতিতে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের রায় ঘোষণা করেন।