ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১
তিন বখাটেকে গ্রেপ্তার

টাঙ্গাইলের বাসাইলে শিশু তিশাকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে হত্যা

হাসান সিকদার, টাঙ্গাইল : | প্রকাশের সময় : সোমবার ৬ জুন ২০২২ ০৫:২১:০০ অপরাহ্ন | দেশের খবর

টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার ভাটপাড়া গ্রামের আবু ভূইয়ার ফুটফুটে কন্যা তিশা আক্তার (৯)। মা-বাবার আশা ছিল মেয়েকে ভবিষ্যতে অনেক বড় নৃত্য শিল্পী করার। তাদের সেই আশা আর পুরণ হলো না। এলাকার তিন বখাটে যুবক সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে গলায় ফাঁস লাগিয়ে শিশু তিশার জীবন প্রদীপ নিভিয়ে দিয়েছে। গ্রেপ্তার হওয়ার পর পুলিশের কাছে ধর্ষণ করে ফাঁস লাগিয়ে হত্যার কথা স্বীকার করেছে তিন ধর্ষক। 

সোমবার দুপুরে টাঙ্গাইল পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পুলিশ সুপার সিরাজ আমীন তার সভা কক্ষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এমন তথ্য জানিয়েছেন। এর আগে গত রোববার জেলার বিভিন্নস্থান থেকে এই তিন ধর্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়। 

জানা গেছে, তিশা আক্তার বেসরকারি একটি স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী ছিল। সে খুব ভালো নাচতে পারত। যে কারণে এলাকার যে কোন অনুষ্ঠানে সে ড্যান্স করতো। এলাকার বখাটে যুবক স্বপন মন্ডলের ছেলে গোবিন্দ মন্ডল (১৯), আনন্দ মন্ডলের ছেলে চঞ্চল চন্দ্র মন্ডল (১৭) ও সখীপুরের লালিত সরকারের ছেলে বিজয় সরকারের (১৬) শিশু তিশার উপর লোলুপ দৃষ্টি ফেলে। তারা তাকে রাস্তায় প্রায় উত্যক্ত করতো। সে তার মাকে বিষয়টি জানিয়েছিল। ওই তিনজন বখাটের বিরুদ্ধে তখন ব্যবস্থা নেওয়ার সাহস পায়নি তিশার মা। গত ২৬ মে দুপুরে তিশার মা তিশাকে ঘরে একা রেখে ছোট ছেলে শুভকে কোচিং থেকে আনতে যায়। পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা এ সময় ওই তিন বখাটে ঘরে ঢুকে তিশাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এ সময় সে অসুস্থ হয়ে পড়লে ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য তাকে ফ্যানের সাথে ফাঁস লাগিয়ে চলে যায়। পরে তিশার মা ঘরে ঢুকে তিশাকে ফাঁস থেকে নামিয়ে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল ও পরে সাভার এনাম মেডিকেল কলেজ হাপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে গত ২৮ মে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিশার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় বাসাইল থানায় প্রথমে অপমৃত্যু পরে গত ৪ জুন অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামী করে মামলা দায়ের করা হয়। এরপর তদন্তে নামে পিবিআই। ধর্ষণ ও হত্যার সাথে জড়িত থাকায় ওই তিনজনকে শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করে পিবিআই।  

এ বিষয়ে টাঙ্গাইল পিবিআই এর পুলিশ সুপার সিরাজ আমীন জানান, দুইজন পেশায় গাড়ি চালক। একজন মেকানিক। তারা এলাকায় বখাটে হিসেবে পরিচিত। তিশাকে ধর্ষণ করে ফাঁস লাগিয়ে তারা পালিয়েছিল। প্রযুক্তি ব্যবহার করে তাদের অবস্থান শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা পুলিশের কাছে সব দোষ স্বীকার করেছে। আদালতের মাধ্যমে তাদের জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।