টাঙ্গাইলের মধুপুরে ধর্ষণের অভিযোগে অরণখোলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন নকরেককে আসামী করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে তিনি ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে পাঁচ বছর ধরে এক তরুণীকে ধর্ষণ করে আসছেন। বৃহস্পতিবার মামুনকে গ্রেফতারের পর আদালত জেল হাজতে প্রেরণ করেছে।
অপরদিকে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা হাসানাত আদালতে ভুক্তভোগির ২২ ধারা জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে। এর আগে বুধবার ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে মধুপর থানায় মামলা করেন। এতে আসামী করা হয় উপজেলার অরণখোলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন নকরেককে। এরপর ওই দিন রাতেই আসামীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
পুলিশ ও ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, মামুন নকরেকের সঙ্গে ওই তরুণীর সঙ্গে পাঁচ বছর আগে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তাঁকে একাধিকবার ধর্ষণ করে। এক পর্যায়ে অজান্তেই সেই দৃশ্য ধারণ করেন মামুন। এরপর থেকে ভিডিও প্রকাশ করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে পাঁচ বছর থেকে ধর্ষণ করে আসছেন মামুন। এক পর্যায়ে মেয়েটি অন্তঃসত্তা হয়ে পড়েন। এ ছাড়া বিষয়টি প্রকাশ করলে ওই তরুণীকে হত্যার এবং ভিডিও প্রকাশ করার হুমকি দেন তিনি। সম্প্রতি মেয়ের শরীরের গঠন দেখে সন্দেহ হয় ভুক্তভোগীর মায়ের। এরপর বিষয়টি জানার জন্য মেয়ের ওপর চাপ সৃষ্টি করেন মা। মেয়েটি মায়ের চাপে বাধ্য হয়ে হত্যার হুমকি উপেক্ষা করে মুখ খুলেন।
মেয়েটির মা জানান, অনেক কষ্টে করে মেয়েকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করার চেষ্টা করছি। বর্তমানে মেয়েটি অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তাঁর শরীরের গঠনে পরিবর্তন দেখে মেয়েকে নানাভাবে চাপ সৃষ্টি করলে মেয়েটি মুখ খুলে। বর্তমানে মেয়েটি ছয় মাসের অন্তঃসত্তা। বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয়ভাবে অনেকেই মীমাংসার চেষ্টা করেছে। এরপর আইনের দ্বারস্থ হন তিনি।
অরণখোলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফিলিপ মৃ জানান, তাঁর বিরুদ্ধে একজন নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ শুনেছি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) শফিকুল ইসলাম জানান, ওই মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার করা মামুন নকরেককে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। মামুন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছেন। তাঁর মোবাইলটি জব্দ করা হয়েছে। ভুক্তভোগী মেয়েকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
টাঙ্গাইল আদালতের পরিদর্শক তানভীর আহমেদ জানান, সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব রহমান আসামীকে জেল হাজতে প্রেরণের আদেশ দেন। পরে তাকে কারাগারে নেওয়া হয়েছে।