ঢাকা, রবিবার ১২ জানুয়ারী ২০২৫, ২৯শে পৌষ ১৪৩১
ব্রিটিশ গণমাধ্যম সানডে টাইমস-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে

টিউলিপের পদত্যাগ ও বিতর্কিত সম্পত্তির তদন্ত দাবি ড. মুহাম্মদ ইউনূসের

আহমেদ শাহেদ | প্রকাশের সময় : রবিবার ১২ জানুয়ারী ২০২৫ ০৫:২১:০০ অপরাহ্ন | জাতীয়

যুক্তরাজ্যের সিটি মিনিস্টার এবং বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর তার পদত্যাগের দাবি তুলেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। একইসঙ্গে তার লন্ডনের সম্পত্তি নিয়ে বিস্তারিত তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম সানডে টাইমস-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস বলেছেন, শেখ হাসিনার শাসনামলে টিউলিপ ও তার পরিবারের কাছে যেসব সম্পত্তি পৌঁছেছে, সেগুলোর উৎস নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তিনি মন্তব্য করেন, "যদি প্রমাণিত হয় টিউলিপ এসব সম্পত্তি অবৈধভাবে অর্জন করেছেন, তবে সেগুলো জনগণকে ফেরত দেওয়া উচিত।"

সানডে টাইমসের তদন্তে উঠে এসেছে, টিউলিপ সিদ্দিক দীর্ঘদিন ধরে একটি বাড়িতে বসবাস করছেন, যা দুই বাংলাদেশি ব্যবসায়ী একটি অফশোর কোম্পানির মাধ্যমে কিনেছিলেন। যদিও টিউলিপ সবসময় আর্থিক অস্বচ্ছতার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

ব্রিটিশ গণমাধ্যমটি আরও জানিয়েছে, শেখ হাসিনার শাসনামলে রাশিয়ার সঙ্গে পারমাণবিক শক্তি চুক্তিতে টিউলিপ মধ্যস্থতা করেছিলেন এবং এ চুক্তি থেকে আর্থিকভাবে উপকৃত হন। বর্তমানে বাংলাদেশ দুর্নীতি দমন কমিশন তার এই ভূমিকা নিয়ে তদন্ত করছে।

সানডে টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, "টিউলিপ সিদ্দিক যখন এ কাজগুলো করেছেন, তখন হয়তো বুঝতে পারেননি। কিন্তু এখন তিনি উপলব্ধি করতে পারেন যে, এটি ভুল ছিল। তার উচিত জনগণের কাছে ক্ষমা চাওয়া এবং পদত্যাগ করা।"

তিনি আরও বলেন, "টিউলিপ দুর্নীতি দমন মন্ত্রী হয়েছেন, অথচ তার বিরুদ্ধেই দুর্নীতির অভিযোগ। এটি অত্যন্ত পরিহাসমূলক।"

টিউলিপ সিদ্দিককে বরখাস্ত করতে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন কনজারভেটিভ পার্টির প্রধান কেমি ব্যাডেনোচ। এক সামাজিক মাধ্যমে পোস্টে তিনি উল্লেখ করেন, "টিউলিপ সিদ্দিক লেবার সরকারের দুর্নীতিবিরোধী মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, অথচ তার বিরুদ্ধেই গুরুতর দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এটি ব্রিটিশ রাজনীতির নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।"

কেমি ব্যাডেনোচ আরও বলেন, "বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারও টিউলিপের সঙ্গে শেখ হাসিনার শাসনামলের সম্পর্ক নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তাই তার এই পদে থাকা অনুচিত।"

টিউলিপ সিদ্দিক তার বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তবে বিতর্কিত সম্পত্তি ও দুর্নীতির অভিযোগে ব্রিটিশ রাজনীতি ও মিডিয়ায় চাপের মুখে রয়েছেন তিনি।

বায়ান্ন/এএস/একে