ঢাকা, রবিবার ১২ জানুয়ারী ২০২৫, ২৯শে পৌষ ১৪৩১

সীমান্তে অপরাধ কমাতে বাংলাদেশের সহযোগিতা প্রত্যাশা ভারতের

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশের সময় : রবিবার ১২ জানুয়ারী ২০২৫ ০৪:৩৭:০০ অপরাহ্ন | জাতীয়
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে অপরাধ দমনে ঢাকা থেকে সহযোগিতাপূর্ণ উদ্যোগ আশা করছে ভারত। এ বিষয়ে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা রোববার (১২ জানুয়ারি) দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান।

ভারতীয় হাইকমিশনার বলেন, সীমান্ত অপরাধমুক্ত করতে ভারতের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে বাংলাদেশকেও ভূমিকা রাখতে হবে। এছাড়া নিরাপত্তার জন্য সীমান্তে বেড়া নির্মাণে যৌথ বোঝাপড়া ও সহযোগিতা প্রয়োজন। এ বিষয়ে সচিবের সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে।

এদিকে একইদিন সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) জানান, সীমান্তে বিজিবি সর্বোচ্চ সতর্কতায় রয়েছে। বিজিবি ও স্থানীয় বাসিন্দাদের দৃঢ় অবস্থানের কারণে ভারত বেশ কয়েকটি স্থানে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণকাজ বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছে।

উপদেষ্টা বলেন, “সীমান্তের পাঁচটি জায়গায় ভারত কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ শুরু করেছিল। কিন্তু বিজিবি এবং স্থানীয় জনগণের শক্ত প্রতিক্রিয়ার মুখে তারা কাজ স্থগিত করেছে। সীমান্তের অধিকার রক্ষায় স্থানীয় বাসিন্দাদের ভূমিকার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ।”

উপদেষ্টা আরও জানান, পূর্ববর্তী সরকারের সময়ে সীমান্ত ইস্যুতে স্বাক্ষরিত কিছু অসম চুক্তি পুনর্বিবেচনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এসব চুক্তি বাতিলের বিষয়ে ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হবে। ফেব্রুয়ারিতে বিজিবি ও বিএসএফের মহাপরিচালক পর্যায়ের বৈঠকে এই বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে।

বাংলাদেশ-ভারত যুগ্ম সীমান্ত নির্দেশাবলি-১৯৭৫ অনুযায়ী শূন্য লাইনের ১৫০ গজের মধ্যে কোনো প্রতিরক্ষা বা উন্নয়নমূলক কাজ করতে হলে উভয় পক্ষের সম্মতি নেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এ বিষয়ে উভয় দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত মোট চারটি চুক্তি বর্তমানে কার্যকর।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, ৪১৫৬ কিমি দীর্ঘ সীমান্তের মধ্যে ৩২৭১ কিমি এলাকায় ইতোমধ্যে ভারত কাঁটাতারের বেড়া স্থাপন করেছে। তবে ৮৮৫ কিমি এলাকায় এখনো বেড়া দেওয়া হয়নি।

সীমান্তে চোরাচালান এবং অন্যান্য অপরাধ দমন দুদেশের জন্যই একটি বড় চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে ভারতীয় হাইকমিশনার বলেন, এমন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে আরো ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা প্রয়োজন।

দুই দেশের সীমান্ত-সংশ্লিষ্ট বিষয়ে স্বচ্ছতা, সমঝোতা এবং পারস্পরিক সহযোগিতা অপরিহার্য বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। এই প্রেক্ষাপটে আগামী মাসের বৈঠকে নতুন করে কোনো সমাধান আসার আশা করা হচ্ছে।

বায়ান্ন/এএস/একে