ঠাকুরগাঁওয়ে সকল হোটেল ও রেস্তোরা বন্ধ ঘোষণা করেছে হোটেল মালিক ও শ্রমীক সমিতি। জেলার বেকারিগুলোতে শ্রমীক না থাকার শঙ্কায় বেকারিও বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মালিকেরা।
মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) রাতে জেলার হোটেল রেস্তোরা ও বেকারি শ্রমীক সমিতির সাথে হোটেল মালিক সমিতি একযোগে এই ঘোষনা দেয়।
জানাগেছে, নিরাপদ খাদ্য আইন ২০১৩' এর অধীন 'বিশুদ্ধ খাদ্য আদালত' পরিচালনা করেন ঠাকুরগাঁও চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিত্যানন্দ সরকার। উক্ত আইনের তফসিল এ বর্নিত ৩৪ ধারায় অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় শহরের চৌরাস্তার হোটেল গাওসিয়া ও হোটেল রোজ এর ম্যানেজার -দ্বয়ের প্রত্যেককে তিন লাখ টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে এক বছর বিনাশ্রম কারাদন্ড আরোপ করা হয়। দুইটি হোটেলে ৩ লক্ষ করে ৬ লক্ষ টাকা জরিমানা করে। এই সময় রোজ হোটেলের ম্যানেজার রুবেল হোসেন ও গাওসিয়া হোটেলের ম্যানেজারকে আটক করা হয়।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে দুই হোটেলের অর্ধশত হোটেল শ্রমিক জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করে ও চৌরাস্তা ট্রাফিক মোড়ে ইফতারি খাবার ফেলে প্রতিবাদ শুরু করেন। সে সময় শ্রমীক হেনস্থার প্রতিবাদ জানিয়ে আটক শ্রমীকের মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত কর্ম বিরতি ঘোষনা করে দুই হোটেল শ্রমীকরা।
রাতে সেই দুই হোটেল শ্রমীকের সাথে একাত্ম প্রকাশ করে জেলার সকল শ্রমীকের কর্মবিরতি ঘোষনা করেন ঠাকুরগাঁও জেলা হোটেল ও বেকারি শ্রমীক ইউনিয়নের সভাপতি জয়নাল আবেদিন।
জয়নাল আবেদিন বলেন, আমরা গরীব হোটেল শ্রমিক। দিন রোজগার করি দিন খাই। আমাদের উপর জেল জুলুম কেন। আমাদের শ্রমিকদের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে হোটেলে কাজে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমাদের শ্রমিক ভাইদের নিঃশর্ত মুক্তি না দেয়া পর্যন্ত আমরা আর কাজে যাবোনা। কোন হোটেলে কাজ করবোনা। না খায়ে মরে যাবো, তবুও কাজে যাবোনা।
অতিরিক্ত জরিমানা ও হেনস্থার প্রতিবাদে হোটেল শ্রমীকের সিদ্ধান্তে একাত্মতা জানিয়ে জরিমানা বাতিল না করা পর্যন্ত হোটেল বন্ধ রাখার ঘোষনা দেয় বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি ঠাকুরগাঁও জেলা শাখার সভাপতি অতুল কুমার পাল।
তিনি বলেন, নিরাপদ খাদ্য আইনে তুচ্ছ ভুলের কারনে হোটেল রোজ ও গাওসিয়াকে তিন লাখ করে ছয় লাখ টাকা জরিমানা করে চিফ জুডিশিয়াল মেজিস্ট্রেট আরিফুল ইসলাম। এ সময় রোজ হোটেলের ম্যানেজার ও গাওসিয়ার ম্যানেজারকে ভ্রাম্যমানে ১ বছর করে সাজা দেয়া হয়। এ কারনে কর্ম বিরতি দিয়েছে শ্রমিকরা। তারা হোটেলে না আসলে হোটেল খোলা রাখা বন্ধ রাখা সমান কথা৷ আমরা তাদের সিদ্ধান্তে একাত্মতা প্রকাশ করছি। সেই সাথে অতিরিক্ত জরিমানা প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত আমরাও হোটেল না খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিত্যানন্দ সরকার জানান, বিশুদ্ধ খাদ্য আদালত' নিয়মিত পরিচালনা করা হবে।