নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে দাবিকৃত টাকা না দেওয়ায় দুই বিএনপি কর্মীর নামে হত্যা মামলায় দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মামলার বাদী বিরুদ্ধে। উপজেলার তারাব পৌরসভার তারাব দক্ষিণপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
তারাব এলাকার কিশোরগ্যাং গ্রুপ শ্রাবণ গ্রুপ ও শিমুল গ্রুপের মাঝে মাদক ব্যবসার আধিপত্যকে কেন্দ্র করে হৃদয় (২২) ও রাশেদুল (২২) নামে দুইজনকে ছুড়িঘাতে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহত হৃদয়ের চাচা তৌহিদুল ইসলাম বাদী রূপগঞ্জ থানায় ২৮জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। সেখামে মামলার এজাহারে দাবিকৃত টাকা না পেয়ে মামলা বাদী যাত্রামুড়া এলাকার দুই বিএনপি কর্মী শাহজাহান ও বিপ্লবের নাম মামলার এজাহারের দিয়ে দেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তারাব এলাকার শ্রাবণ গ্রুপ ও শিমুল গ্রুপের মাঝে মাদক ব্যবসার আধিপত্যকে কেন্দ্র করে এর আগে বেশকয়েকবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এই দুই গ্রুপের সদস্যরা এলাকার ছিনতাই, চাঁদাবাজি, লুটপাটসহ বিভিন্ন অপকর্ম চালাচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে। এই দুই গ্রুপকে শেল্টার দিতো তারাবোর স্থানীয় আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী নেতারা। তখনও সংঘর্ষ বা মারামারি ঘটনা ঘটলে তারা টাকা না দিলে নিরীহদের নাম মামলার এজাহারে দিয়ে দিতো। পরে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে নাম কেটে দিতো। মামলার নামে দুই গ্রুপের সদস্যরা বানিজ্য চালাতো। আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পর এই দুই গ্রুপের সদস্যরা বিএনপি নেতাদের ছত্রছায়ায় চলে যায়। বিএনপি নেতাদের শেল্টারে গিয়ে তারা আরো বেপরোয়া হয়ে যেতে থাকে। গত ৪ জানুয়ারি শ্রাবণ গ্রুপ ও শিমুল গ্রুপের মাঝে মাদক ব্যবসার আধিপত্যকে কেন্দ্র করে ঝামেলা বাড়তে থাকে। এদিন রাতে শিমুল গ্রুপের সদস্যরা শ্রাবন গ্রুপের হৃদয় ও রাশেদুল ইসলামকে ছুড়িকাঘাতে হত্যা করে। পরে এ ঘটনায় তৌহিদুল ইসলাম ও শ্রাবন গ্রুপের সদস্যরা মিলে মামলার মূল আসামী ছাড়া নিরীহ অনেকের কাছে মোটা অংকের টাকা দাবি করতে থাকে। টাকা না দিলে তাদের তাদের নাম জোড়া হত্যা মামলার এজাহারে দিয়ে দিবে হুমকি ধামকি দিতে থাকেন। টাকা দিয়েছে তারা মামলার এজাহার থেকে মুক্তি পেলেও যারা টাকা দেননি তাদের নাম মামলার এজাহারে দিয়ে দেওয়া হয়েছে। এমনই কয়েকজন যাত্রামুড়া এলাকার বিএনপি কর্মী শাহজাহান ও মোঃ বিপ্লব। তাদের কাছে নিহত হৃদয়ের চাচা তৌহিদুল ও শ্রাবন গ্রুপের সদস্যরা ২ লাখ টাকা দাবি করেন। তারা টাকা দিতে রাজী না হলে তাদের নাম মামলার এজাহারে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন শাহজাহান ও বিপ্লব।
শাহজাহান বলেন, ঘটনাস্থল হচ্ছে তারাব। আমি বসবাস করি যাত্রামুড়া। আর ঘটনার দিন আমি ও বিপ্লব জেলা বিএনপির আহবায়ক মামুন মাহমুদকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানাতে সিদ্ধিরগঞ্জ তার বাড়িতে অবস্থান করছিলাম। মামলার বাদী ও শ্রাবণ গ্রুপের সদস্যরা আমার ও বিপ্লবের কাছে দুইলাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। টাকা না দিলে মামলা আমাদের নাম দেওয়ার হুমকি দিতে থাকেন। আমরা টাকা না দেওয়ায় আমাদের নাম মামলার এজাহারে দিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে মামলার বাদী তৌহিদুল ইসলাম বলেন, আমি লোকের মুখে যাদের নাম শুনেছি তাদের নামই মামলার এজাহারে দেওয়া হয়েছে। বাকিটা তদন্ত করে পুলিশ বের করবে।
রূপগঞ্জ থানার ওসি লিয়াকত আলী বলেন, ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করা হবে। যারা হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত তাদের নামে চার্জশিট দিয়ে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
বায়ান্ন/প্রতিনিধি/পিএইচ