ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

দিঘীর মালিকানা দাবি নিয়ে লক্ষ্মীপুর পৌরসভা - জেলা পরিষদ মুখোমুখি, জনমনে তীব্র ক্ষোভ

মোঃওয়াহিদুর রহমান মুরাদ, করেসপন্ডেন্ট : | প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার ১৪ জুন ২০২২ ০৩:১৩:০০ অপরাহ্ন | দেশের খবর

লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের ঐতিহ্যবাহী জুবলি দিঘির একাংশ বালু ফেলে ভরাট শুরু করেছে পৌরসভা। সোমবার (১৩ জুন) সকাল থেকে ট্রাকভর্তি বালু ফেলে ভরাটের কাজ শুরু করলে এতে বাঁধা দেয় জেলা পরিষদ।

 

জেলা পরিষদ জানিয়েছে- দিঘির মালিক জেলা পরিষদ। পৌরসভা কোন অনুমতি ছাড়াই সেটি ভরাট করতেছে।

 

জানা গেছে, দীর্ঘদিন থেকে দিঘিটি জেলা পরিষদের নিয়ন্ত্রণে ছিলো। চলতি মৌসুমে মাছ চাষের জন্য ইজারা দেয় জেলা পরিষদ। এর আগেও জেলা পরিষদ থেকে দিঘিটি ইজারা দেওয়া হতো। তবে পৌর কর্তৃপক্ষ হঠাৎ করে ভরাট শুরু করলে পৌরবাসীর মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।

 

 

 

পৌরসভার দাবি- দিঘির দক্ষিণ পাশে পুরনো পৌরসভা ভবন এবং দিঘির দক্ষিণ অংশ পৌরসভার মালিকানাধীন। ফলে পৌরসভার তাদের অংশটি ভরাটের উদ্যোগ নেয়।

 

পৌরবাসী জানায়, পৌরসভার নিজস্ব কোন ভবন না থাকায় দিঘির একাংশ ভরাট করে সেখানে পৌরভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়।

 

স্থানীয়রা বলছে, পুকুরটির অবস্থান একেবারে বাজারে মাঝখানে। এটি সাধারণ মানুষের নিত্য ব্যবহারের পাশাপাশি পরিবেশের ক্ষেত্রে বিরাট ভূমিকা রাখছে। এছাড়া বাজারে কোথায় অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটলে এ দিঘি থেকে পানির জোগান দেওয়া যাবে। কিন্তু দিঘিটির একাংশ ভরাট শুরু করলে আস্তে আস্তে পুরো দিঘি তার অস্তিত্ব হারাবে। তাই দিঘি ভরাটের বিপক্ষে অনেকেই মত দিয়েছেন।

 

স্থানীয়রা জানায়, গত কয়কদিন থেকে দিঘি ভরাটের গুঞ্জন শোনা যেত। সোমবার সকাল থেকে পৌরসভার ট্রাকের মাধ্যমে বালু এনে দিঘির দক্ষিণ-পূর্ব অংশে ভরাট কাজ শুরু করে। খবর পেয়ে জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে বাঁধা প্রদান করা হয়। সেখানে জেলা পরিষদের এক কর্মচারীকে পাহারায় রাখা হয়েছে, যাতে দিঘিতে বালু ভরাট না করে।

 

পাহারায় নিয়োজিত জেলা পরিষদের ওই কর্মচারীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে আমি পাহারা দিচ্ছি। দিঘিতে যাতে কেউ বালু না ফেলতে পারে।

 

পৌর মেয়র মোজাম্মেল হায়দার মাসুম ভূঁইয়া বলেন, দিঘির দক্ষিণ পাশে পৌরসভার পুরনো ভবন। পাশে আরও ভূমি ছিলো। দিঘিতে ভূমি ভেঙে ভবন ঝুঁকিতে পড়েছে। তাই একপাশে ৪-৫ ট্রাক বালু ফেলেছি। দিঘি ভরাটের উদ্দেশ্যে বালু ফেলা হয়নি। এছাড়া দিঘির ভেতরে পৌরসভার জমি আছে।

 

দিঘির দক্ষিণ অংশে নতুন পৌর ভবন নির্মাণের উদ্যোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেটার জন্য আমরা আবেদন করেছি, দিঘির ওই অংশ অবমুক্ত করলে ভবন নির্মাণের বিষয়টি দেখা যাবে।

 

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জেলা পরিষদের প্রশাসক মো. শাহজাহান বলেন, জেলা পরিষদের দিঘি কোনভাবে পৌরসভা ভরাট করতে পারে না। পৌর কর্তৃপক্ষ আজ সোমবার সকাল থেকে বালু ফেলে দিঘি ভরাটের কাজ শুরু করে। আমরা জানতে পেরে বাঁধা দিই। এরপর থেকে আর বালু ফেলা হয়নি। বিষয়টি নিয়ে পৌর মেয়রের সাথে কথা বলেছি। তিনিও দিঘির ভরাট না করার বিষয়ে একমত হয়েছেন। দিঘি ভরাটের উদ্দেশ্যে যে বালু ফেলা হয়েছে, সেগুলো পৌরসভা অপসারণ করে নেবে।তিনি বলেন, জেলা শহরের মধ্যে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ দিঘি। কোনভাবেই দিঘির ভরাট করতে দেওয়া হবে না