ঢাকা, বৃহস্পতিবার ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ঠা আশ্বিন ১৪৩১

দেশে উন্নয়নও হচ্ছে, দূর্নীতিও হচ্ছে : পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান

কাজী জমিরুল ইসলাম মমতাজ, সুনামগঞ্জ : | প্রকাশের সময় : রবিবার ১৩ মার্চ ২০২২ ১২:২৬:০০ অপরাহ্ন | সিলেট প্রতিদিন

আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনমালে দেশের যে উন্নয়ন হয়েছে তা বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ‘সহ্য করতে পারছেন না’ বলে মন্তব্য করেছেন পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান।

তিনি বলেন, দেশের উন্নয়ন সহ্য হয় না মির্জা ফখরুলের। গত ১০ থেকে ১২ বছর ধরে যখন দেখছেন আমরা দেশকে পরিবর্তন করে ফেলেছি, উনি তখন এসির নিচে বসে উল্টাপাল্টা কথা বলছেন।

অনুষ্ঠানে আসা সাংবাদিকদের দুর্নীতি বিষয়ক এক প্রশ্নের জবাবে এম এ মান্নান বলেন, দুর্নীতি বাংলাদেশে আছে, সেটা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। তবে কোন খাতে দুর্নীতি হচ্ছে সেটার অভিযোগ পেতে হবে, স্বাক্ষী পেতে হবে, তাহলে তাদের বিচার হবে।

দুর্নীতিবাজদের বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে তিনি বলেন, বিচার করার ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেই। বিচার করার ক্ষমতা আদালতের। সুতারাং যারাই বাংলাদেশে দুর্নীতি করবে, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।

পরিকল্পনামন্ত্রী জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের উদ্দেশ্যে বলেন, জিএম কাদের সাহেব যে দলের বর্তমান চেয়ারম্যান সেই দল টি কি ভাবে এসেছিলো সেটা সবাই জানেন। প্রয়াত হুসাইন মোহাম্মদ এরশাদ মার্শাল ল এর মাধ্যমে এই দলটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এবং তিনি সেই সময় বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিও ছিলেন। আমি  এই বিষয়ে বলতে চাই না শুধু পরিচয় করিয়ে বা স্মরণ করে দিতেই বলেছি। বর্তমানে জিএম কাদের সাহেবদের দলের সংসদেও অবস্থান আছে। দূর্নীতি দেশে আছে সেটা অস্বীকার করার কোন সুযোগ নাই। সেটা সবাই জানে, উনি নিজেও জানেন। উনার দলের প্রধান যখন এই দেশের সরকার প্রধান ছিলেন সেই সময়ও দূর্নীতি ছিলো, এর অনেক রেকর্ড আমাদের হাতে আছে। অতীত ঘাটাঘাটি করার সময় আমাদের কাজ নয়, আমাদের কাজ হচ্ছে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া। এক জন মিলিটারি শাসক বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর এই দেশে ২০-২৫ বছর শাসক ছিলো। আমি নাম বলতে চাই না। তারা কি সেই সময় শিক্ষা খাতে ব্যয় করেছিলো? তারা কি গ্রামে গ্রামে বিদ্যুৎ দিয়ে ছিলো? আমাদের আগে কেউ কি দেশে এতো উন্নয়ন করেছিলো? করেনি। এখন এই কাজ করতে গিয়ে কোন কোন লোক দুষ্ঠুমি করে দূর্নীতি করছে। তবে তাদের বিচারও হচ্ছে। বিচার তো আমরা করতে পানি না, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তো আদালত না। অপরাধীর বিচার আদালতের মাধ্যমে সেখানের বিচার করে থাকেন। ঐখানে অভিযোগ থাকলে করবেন। এভাবে ঢালাও ভাবে সাক্ষি প্রমাণ ছাড়া অভিযোগ করলাম সেটা ঠিক নয়। 

 

মন্ত্রী আরো বলেন, চোর ধরতে গিয়ে সকল ভালো (নিরপরাধ) লোকদের গ্রাম থেকে তাড়িয়ে দেবো সেটা আমাদের কাজ নয়। আমার কাজ হচ্ছে উন্নয়ন, ব্রীজ, কালর্ভাট, স্কুল-কলেজ, রাস্তা, বিদ্যুৎ এগুলোর উন্নয়ন করা। দ্রব্যমূল্যের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, এটা আমাদের বাড়ানোর ক্ষমতা নাই যেমন, তেমনি ভাবে কমানোরও ক্ষমতা নাই। তবে আমাদের কিছু কৌশল আছে, সেটা আমরা করছি। আমরাও তাদের সাথে দোকান দিয়ে গ্রামে গঞ্জে ট্রাকে করে চাল, ডাল, তৈল, চিনি সহ দ্রব্যাধি বিক্রয় করছি। সেই কার্যক্রমকে আরো বাড়ানো হবে। তবে দ্রব্যমূল্য শুধু বাংলাদেশে নয় সারা বিশ্বেই বেড়েছে। সেটাকে মানতে হবে। আমাদের সরকারের প্রচেষ্ঠায় সেটাকে আমরা সহনশীল পর্যায়ে রাখতে পেরেছি। আর তা না হলে দ্রব্যমূল্যের দার আরো ব্যাপক ভাবে বৃদ্ধি পেতো। তবে আমরা চাই এটা নেমে আসুক।   

 

শনিবার(১২ মার্চ) দুপুরে সুনামগঞ্জ জেলার শান্তিগঞ্জ উপজেলার পাথারিয়া সুরমা উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজের ৪র্থ তলা বিশিষ্ট ভবনের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এমপি উপরোক্ত কথা গুলো বলেন। 

 

এসময় উপস্থিত ছিলেন জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) মো. সাজেদুল ইসলাম, শান্তিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) কাজী মোক্তাদির হোসেন, শান্তিগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী আল নুর তারেক, পরিকল্পনা মন্ত্রীর পুত্র, যুক্তরাজ্য প্রবাসী শাহাদাত মান্নান অভি, উপজেলা আওয়ামী লীগ সহ সভাপতি মাওলানা আব্দুল কাইয়ূম, জয়কলস ইউপি চেয়ারম্যান মো. আব্দুল বাছিত সুজন, পাথারিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. শহীদুল ইসলাম, শিমুলবাক ইউপি চেয়ারম্যান শাহীনুর রহমান, উপজেলা কৃষকলীগ সভাপতি ফয়জুর রহমান, পাথারিয়া ইউপি আওয়ামী লীগ সভাপতি আলী নেওয়াজ, পাথারিয়া সুরমা উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. আমিনুল ইসলাম, দরগাপাশা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মো. মনির উদ্দিন, পাথারিয়া ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা,

ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আবুল ফয়েজ, ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব প্রমুখ। পরে পরিকল্পনামন্ত্রী পাথারিয়া সুরমা উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজে নবীন বরণ অনুষ্ঠানে যোগদান করেন।