ঢাকা, মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

নরসিংদীতে পূর্বশত্রুতার জেরে ৫ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা-লুটপাটের অভিযোগ, পুলিশ বলছে নাটক

নরসিংদী প্রতিনিধি: | প্রকাশের সময় : শনিবার ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২২ ০৪:৪৪:০০ অপরাহ্ন | দেশের খবর

নরসিংদীর রায়পুরায় আধিপত্য বিস্তার কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে ৫ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেলেও পুলিশ বলছে এটা সাজানো নাটক। 

শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারী) ভোরে উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের গৌরিপুর বাজারে এ ঘটনা ঘটে।

 

জানা যায়, গত ২৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হয়ে যাওয়া ইউপি নির্বাচন ঘিরে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে দ্বন্ধের সৃষ্টি হয়। তখন নৌকার প্রার্থী মো. হোসেন ভুইয়ার সমর্থক মোল্লাবাড়ী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সানাউল্লাহ ভুইয়ার সমর্থক পাঠানবাড়ীর লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। নির্বাচন পরবর্তি সময়ে এরই জের ধরে কয়েক দফায় মোল্লাবাড়ী ও পাঠানবাড়ীর লোকজনের মধ্যে হামলা-ভাংচুরের ঘটনাও ঘটে। সর্বশেষ ঘটনায় প্রতিপক্ষের দায়ের করা মামলায় মোল্লাবাড়ী কিছু লোকজন জেল হাজতে ও এলাকার বাহিরে অবস্থান করছেন। তাদের ব্যবসা-বানিজ্যগুলো ছেলে-মেয়ে-স্ত্রীরা দেখাশুনা করছেন। এই সুযোগে শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারী) ভোরে পাঠান বাড়ী সমর্থকরা মোল্লা বাড়ী সমর্থক ৫ ব্যবসায়ীর দোকানে হামলা চালিয়ে লুটপাটের ঘটনা ঘটিয়েছে বলে জানান ক্ষতিগ্রস্থ্য পরিবারের লোকজন।

ক্ষতিগ্রস্থের শিকার মুদি ব্যবসায়ী সুমন মোল্লার স্ত্রী আসমা বেগম জানান, বিগত দিনের হামলা-ভাংচুরের মামলায় আমার স্বামী কিছুদিন ধরে এলাকার বাহিরে থাকায় আমার ছেলে ফোয়াদ মোল্লা দোকানে বসে। শনিবার ভোরে পাঠান বাড়ীর লোকজন দোকানে হামলা চালিয়ে গ্যাসের সিলিন্ডার, তেলের ড্রাম, ফ্রিজসহ কয়েক লাখ টাকার মালামাল নিয়ে যায়। 

হোটেল মালিক আশিকুর রহমানের স্ত্রী সাজেদা বেগম জানান, হোটেলের ভিতর থাকা আটা-ময়দা, চিনির বস্তা, ফ্রিজ, টিভি, খাদ্র সামগ্রী সহ প্রায় ২লাখ টাকার মালামাল লুট হয়।

চাউল ব্যবসায়ী কাওসার মোল্লার মা পিয়ারা বেগম জানান, আমার ছেলের দোকানে ছোটবড় মিলিয়ে অর্ধশতাধিক বস্তা চাউল ছিল। পাঠান বাড়ীর লোকজন সব নিয়ে গেছে।

ফার্নিচার ব্যবসায়ী মুন্তাজ মিয়ার স্ত্রী শিরিনা বেগম জানান, বেশ কয়েকটি রেডিমেট খাট, সুকেট, ওয়ারড্রপ, মিশিনারী যন্ত্রপাতি সব নিয়ে যায় প্রতিপক্ষের লোকজন।

কনফেকশনারী ব্যবসায়ী হারুন মিয়ার স্ত্রী ইয়াসমিন জানান, আমাদের দোকানে থাকা অনেকগুলো কোমলপানীয় সহ বিভিন্ন মালামাল নিয়ে যায়।

এদিকে মোল্লা বাড়ীর লোকজন আরো জানান যে, পাঠান বাড়ীর লোকজন প্রতিরাতেই ককটেল ফুটিয়ে এলাকায় আতংক সৃষ্টি করে রাখে। তাই সন্ধার পর আমরা ঘরের বাহিরে বের হতে ভয় পাই। বাড়ী-ঘর পুরুষ শুন্য থাকায় রাতের আধারে বাহিরে থাকা গবাদী পশু, হাস-মুরগী নিয়ে যায়।

এ ব্যাপারে পাঠান বাড়ীর সমর্থক রুবেল মিয়া বলেন, চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে মোল্লা বাড়ীর লোকজন আমাদের বাড়ী-ঘরে হামলা চালিয়ে লুটপাটের ঘটনা ঘটায়। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। আজকের ঘটনার সাথে আমাদের কোন সম্পৃক্ততা নেই। তারা নিজেরাই এ ঘটনা ঘটিয়ে আমাদের উপর দায় চাপানোর চেষ্ঠা চালাচ্ছে।

এদিকে ঘটনাস্থল পরির্দশনকালে রায়পুরা থানার এস আই রাকিবুল ইসলাম ক্ষতিগ্রস্থদের সকল অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়ে বলেন, এসব তাদের সাজানো নাটক। তারা একেবার একেক ধরনের অভিযোগ করছেন।

এ ব্যাপারে বিকাল চার ঘটিকায় রায়পুরা থানার ওসি আজিজুর রহমানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমি এই মাত্র শুনলাম। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।