ফেনীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র গণঅভ্যুত্থানে হত্যা, গুলি ও হামলার ঘটনায় ছাত্র-জনতা হত্যা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে এ পর্যন্ত মোট ১৭টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় গত রোববার পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে এজাহারভুক্ত ও সন্ধিগ্ধ ১৭০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা।
এদের মধ্যে দাগনভূঞার দুই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, সোনাগাজী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ফেনী পৌরসভার কাউন্সিলরসহ বেশিরভাগই আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের রাজনীতির সাথে জড়িত।
গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে পাঁচজন আসামি বিচারিক আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী প্রদান করেছেন বলে হত্যা মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী ফেনী পৌর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মেজবাহ উদ্দিন ভূঁঞা এ প্রতিবেদককে নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ইতিহাসের জঘন্যতম নির্মম ঘটনা মহিপালে ছাত্র-জনতা হত্যা ও হত্যাচেষ্টা মামলায় আসামীদের সর্বোচ্চ সাজা নিশ্চিত করতে এবং বাদী পক্ষের ন্যায় বিচার পেতে আইনগত সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হবে।
পুলিশ জানায়, গত রোববার অভিযান চালিয়ে একজন ইউপি চেয়ারম্যানসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারা হলেন-দাগনভূঞা উপজেলার সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন স্বপন (৫৫), ফেনী সদর উপজেলার মহিলা আওয়ামী লীগের সম্পাদক শাহানা আক্তার (৫০), পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড উত্তর কাশিমপুরের ছাত্রলীগ নেতা মো. সুমন (২৪) ও ধর্মপুর ইউনিয়নের মাঠ বাড়িয়া এলাকার মহিউদ্দিনের ছেলে স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতা মোবাশ্বির হোসেন (১৯)।
গত শনিবার রাতে জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর আগে বিভিন্ন সময় অভিযান চালিয়ে দাগনভূঞা উপজেলার রাজাপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আনম কাশেদুল হক বাবর, সোনাগাজী সদর ইউপির চেয়ারম্যান উম্মে রুমা, ফেনী জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার ১৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আমির হোসেন বাহার, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুল করিম, শর্শদীর ছাত্রলীগ নেতা সম্রাট, নিজাম হাজারীর এমপির পিএস মানিকসহ ১৭০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে কয়েকজনকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছে তদন্ত কর্মকর্তারা।
পুলিশ জানায়, ৪ আগস্ট ফেনীর মহিপালে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হতাহতের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় জড়িত অন্যান্যদের গ্রেপ্তারে এবং অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ফেনী সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মর্ম সিংহ ত্রিপুরা বলেন, গত ৪ আগষ্ট ফেনীর মহিপাল এলাকায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতা আন্দোলন ও সমাবেশে হামলা এবং হতাহতের মামলায় ইউপি চেয়ারম্যানসহ ৪ জনকে গত রোববার আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান জানান, ফেনীর মহিপালে হতাহতের ঘটনায় দায়েরকৃত ১৭ মামলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালিয়ে এ পর্যন্ত জড়িত অনেক আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। জড়িত অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
বায়ান্ন/প্রতিনিধি/একে