বুধবার বগুড়া সদরের আকাশতারা এলাকায় ট্রেন- মাইক্রোবাসের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে মাহদিয়া নামে পনের দিন বয়সের এক নবজাতক নিহত এবং মাইক্রোবাসে থাকা নবজাতকের পিতা মিন্টু মিয়া(৪০) আহত হন। তবে মাইক্রোবাস চালকসহ এর অন্যান্য অরোহীরা রক্ষা পান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে লালমনিরহাট থেকে সান্তাহারগামী ট্রেনটি সদরের আকাশতারা এলাকায় ২৬ নং রেলগেটে অতিক্রম করার সময় এই দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনায় আহত মিন্টু মিয়ার বাড়ি ঢাকার মোহাম্মাদপুর এলাকায়। তার শ^শুরবাড়ি বগুড়ার আকাশতারা এলাকায়। তিনি স্ত্রী মারুফা ও নবজাতক জমজ শিশু-মাহদিয়া ও মাহদি, শ^াশুড়ি ও শালিকাসহ মাইক্রোবাস নিয়ে শ^শুর বাড়ি আসছিলেন। বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে মাইক্রোবাসটি(ঢাকা মেট্রো-চ-১৫-৮৩৯৩) রেলগেটের সামনে আসে। এটি রেলগেট হলেও এর কোন গেটম্যান নেই। এখানে রেল কর্তৃপক্ষের দেয়া একটি সাইনবোর্ডে সেটি উল্লেখ করে পথচারী ও যানবাহন চালকদের পারাপারের সময় সর্তক থাকার জন্য বলা হয়েছে। মাইক্রোবাসে থাকা মিন্টু মিয়ার শাশুড়ি শিউলি বেগম জানান, রেল লাইন পার হওয়ার এসি চলার কারণে বাইরের কোন শব্দ তারা পাননি। রেললাইনের অপর পাশর্^ থেকে এক ব্যক্তি মাইক্রোবাস চালককে ইশারায় না আসার জন্য বললেও মাইক্রোবাস চালক রেল লাইন পার হওয়ার জন্য এগিয়ে গেলে দুর্ঘটনা ঘটে। ট্রেনের ধাক্কায় মাইক্রোবাসটি ছিটকে পড়ে রেললাইনের পাশে একটি গাছের সঙ্গে ধাক্কা খায় এবং মাইক্রোবাসের সামনের অংশ ক্ষতিগ্রস্থ হয়। আশে পাশের লোকজন দ্রুত এসে আহতদের উদ্ধার করে। এতে ঘটনাস্থুলেই নবজাতক জমজ শিশুর এক জন মাহদিয়া মারা যান বলে পরিবার থেকে জানান হয়েছে। দুর্ঘটনায় আগে শিউলি বেগমের পুরো পরিবারে ছিলো খুশির আমেজ। কারণ জামাই ও মেয়েসহ নতুন অতিথি জমজ শিশু তাদের নানার বাড়ি প্রথম আসছিলে। দুর্ঘটনাস্থলের ৫শ গজের মধ্যে মিন্টু মিয়ার শ^শুড়বাড়ি। সেখানে খুশির পরিবর্তে এখন কান্নার রোল। নবজাতকের মা মারুফা বেগম হাসপাতালে দুর্ঘটনায় আহত স্বামী মিন্টু মিয়ার পাশে। তার পরিবার থেকে বলা হয়েছে, মারুফা ও মিন্টু মিয়ার বিয়ে হয়েছিল ৫ বছর আগে। তাদের সংসারে নতুন অতিথি জমজ শিশুর জন্ম হয় ১৫ দিন আগে। মারুফার মা মেয়ে, জামাই ও নাতনিসহ বাড়ি আসছিলেন। দুর্ঘটনাস্থল আকাশতারা ২৬ নম্বর গেটের পাশের বাসিন্দা ভ্যান চালক শাহ আলম ও তানিয়া পারভীন জানালেন, এই স্থানে ইতোর্পুবে একাধিক দুর্ঘনাসহ প্রানহানীও ঘটেছে। তাদের দাবি সেখানে রেলগেট দেয়া হোক। রেলগেট থাকলে দুর্ঘটনা ঘটতো না। বগুড়া রেলস্টেশন মাস্টার সাজেদুর রহমান সাজু জানান লালমনিরহাট থেকে ২০ ডাউন ওই ট্রেনটি বগুড়া স্টেশনে এসে পৌঁছে ১১টা ৪৮ মিনিটে। তিনি জানান ও ঘটনাস্থল রেলগেট হলেও ২৬ নম্বর গেটে কোন গেট বা গেটম্যান নেই। ঘটনাস্থলে থাকা রেল নিরাপত্তা বাহিনীর এসএস আই মুকুল হোসেন জানান, তারা ঘটনাস্থলে পৌছাঁর আগেই স্থানীয় লোকজন হতাহতদের উদ্ধার করে।