সিলেটে দ্বিতীয দফায় ভযাবহ বন্যা শুরু হতেই বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াতে অধ্যাপক ড. জফির সেতু নানান মাধ্যমে প্রশাসনসহ রাজনৈতিক নেতাদের এগিয়ে আসার অনুরোধ জানাচ্ছিলেন। প্রশাসন থেকে শুরু করে রাজনৈতিক ও সমাজের নেতৃত্ব দানকারীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান ফেইসবুকেও। মিডিয়াকে প্রকৃত অবস্থা তুলে ধরার অনুরোধ করেন। সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার কৃতি সন্তান ড. জফির সেতু শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক।
১৫ জুন থেকে ড. জফির সেতু একাধিক পোস্ট দিয়েছেন ফেইসবুকে। শুক্রবারে ড. জফির সেতুর ফেইসবুক ঘুরে দেখা গেছে বন্যার্তদের নিয়ে তাঁর বেকুলতা। ১৫ জুন তিনি প্রথম পোস্ট দেন তাঁর নিজ ফেইসবুকে।
ড. জফির সেতুর ফেইসবুকে দেয়া একাধিক পোস্টের কয়েকটি এখানে তুলে ধরা হচ্ছে।
১৫ জুন প্রথম পোস্টে ড. জফির সেতু জানান, সিলেটের (বিশেষত কোম্পানিগঞ্জ ও গোয়াইনঘাট) বন্যাপরিস্থিতি চরম অবনতির দিকে যাচ্ছে। স্থানীয় ও জেলা প্রশাসনসহ দুর্যোগ ও ত্রাণমন্ত্রণালয়কে পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য অনুরোধ করছি।
একই দিন তিনি লেখেন বন্যাপরিস্থিতি (কোম্পানীগঞ্জ ও গোয়াইনঘাট) অবনতির দিকে যাচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসন, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও জনপ্রতিনিধিদের দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখার জন্য অনুরোধ করছি।
১৬ জুন দুপুরে তিনি লেখেন রনিখাই ইউনিয়নের ফেদারগাঁও, বেতমুড়া, দিঘলবাকের পার, কাকুরাইল প্রভৃতি গ্রাম পানির নিচে। স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের ফেদারগাঁও-দিঘলবাকের পার উচ্চবিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে নিরাপদে পৌঁছে দেওয়ার জন্য দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
একই দিন তিনি একাধিক পোস্ট দেন। তাতে তিনি লেখেন এখন, এই মুহুর্তেই আপনার সাহায্য খুব জরুরি
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বানভাসি মানুষের বাঁচানোর জন্য সর্বস্তরের মানুষের কাছে আকুল আবেদন জানাচ্ছি। এদিন রাতে লেখেন পাঁচতলার এসি কক্ষ থেকে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ করবেন না। অবস্থা শোচনীয়। সিলেট বোর্ডের এসএসসি পরীক্ষা স্থগিত করুন!
এদিন রাতে আরেকটি পোস্টে লেখেন
কেন????
সিলেটের কোম্পানিগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট, জৈন্তাপুর প্রভৃতি অঞ্চলের বন্যার্ত মানুষ মৃত্যুর মুখোমুখি। কিন্তু জাতীয় মিডিয়া তেমন খবর নেই। কেন?
রাতে আরেকটি পোস্টে লেখেন
উদ্ধার কাজের উদ্যোগ নিন
সিলেট ও সুনামগঞ্জ তলিয়ে যাচ্ছে। দলকানা ও স্বার্থপর হবেন না। পানিবন্দি মানুষকে এখনই উদ্ধার কাজের উদ্যোগ নিন। যার যার অবস্থান থেকে কর্তৃপক্ষকে জানান। তাঁদের ঘুম ভাঙান। মিডিয়ার ভাইয়েরা জাতিকে জানান। এটা আপনাদের দায়িত্ব।
ড. জফির সেতু আরেকটি পোস্টে লেখেন
রাতেই সেনাবাহিনী নামান; পরিস্থিতি ভয়াবহের দিকে যাচ্ছে
সিলেটের কোম্পানিগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট, জৈন্তাপুর এবং সুনামগঞ্জের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের গ্রামে গ্রামে পানিবন্দি মানুষ। ঘরে আগুন নেই, চুলা নেই, খাবার নেই, বিছানা নেই। মানুষ যোগাযোগহীন, অসহায়। এই পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনীর উদ্ধার কার্যক্রম ও ত্রাণতৎপরতা রাতেই শুরু করতে অনুরোধ করছি।
অপর একটি পোস্টে তিনি বলেন.
প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিকস মিডিয়ার ভাইয়েরা; দয়া করে সিলেট ও সুনামগঞ্জের বন্যাপরিস্থিতি নিয়ে যথাযথ সংবাদ ও ছবি পরিবেশন করুন। দায় এড়াতে পারবেন না। জাতি কিছুই জানতে পারছে না।
শুক্রবার দুপুরে তিনি লেখেন
মাননীয় মন্ত্রীদের (সিলেট ও সুনামগঞ্জ)সমীপে
সিলেটের কোম্পানিগঞ্জের উত্তর রনিখাইয়ের ফেদারগাঁও, তেলিখাল, বেতমুড়া, দিঘলবাক, কাকুরাইল গ্রামের বন্যার্তরা ঘরের ছাদের উপরে দাঁড়িয়ে আহাজারি করছে। কারও ঘর পানিতে ভেসে গেছে। খাবার নেই, পানি নেই। অবিরাম বজ্রঝড়, বৃষ্টি। জীবন বিপন্ন হতে চলেছে। এই অবস্থা গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট, জৈন্তাপুরসহ সুনামগঞ্জের বিস্তীর্ণ অঞ্চলেরও। যথাযথ উদ্যোগ নিতে সিলেট-সুনামগঞ্জের মাননীয় মন্ত্রীদের সমীপে আকুল আবেদন জানাচ্ছি।
শুক্রবার সকালে ড. জফির সেতু লেখেন
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সমীপে
সিলেটের কোম্পানিগঞ্জের উত্তর রনিখাইয়ের ফেদারগাঁও, তেলিখাল, বেতমুড়া, দিঘলবাক, কাকুরাইল গ্রামের বন্যার্তরা ঘরের ছাদের উপরে দাঁড়িয়ে আহাজারি করছে। কারও ঘর পানিতে ভেসে গেছে। খাবার নেই, পানি নেই। অবিরাম বজ্রঝড়, বৃষ্টি। জীবন বিপন্ন হতে চলেছে। এই অবস্থা গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট, জৈন্তাপুরসহ সুনামগঞ্জের বিস্তীর্ণ অঞ্চলেরও। যথাযথ উদ্যোগ নিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সমীপে আকুল আবেদন জানাচ্ছি।
শুক্রবার সকালে তিনি লেখেন
সকালে এইমাত্র পাওয়া খবর
এইমাত্র কথা হলো সিলেটের জেলা প্রশাসকের সঙ্গে। দুর্গত এলাকায় ঘণ্টাখানেকের মধ্যে সেনাবাহিনী কাজ শুরু করবে।
মনে সাহস রাখুন, যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী বন্যার্তদের সাহায্যে এগিয়ে আসুন।