ঢাকা, রবিবার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ই আশ্বিন ১৪৩১

বিশ্বনাথে বিধবার বাড়ি দখলের চেষ্টা করেছে লায়েক মিয়া ও সেজু মিয়া

বিশ্বনাথ প্রতিনিধি: | প্রকাশের সময় : রবিবার ১০ এপ্রিল ২০২২ ০৭:০৯:০০ অপরাহ্ন | দেশের খবর


সিলেটের বিশ্বনাথে জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত এক স্কুল শিক্ষকের নেতৃত্বে বিধবা নারীর বাড়িতে হামলা, গাছ কর্তন ও বাড়ির কেয়ারটেকারকে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ ঘটনায় বিশ্বনাথের পালেরচক গ্রামের মৃত সাইদুর রহমানের স্ত্রী মোছা. আছিয়া বেগম গত ১ এপ্রিল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলা দায়েরের পরও অভিযুক্তদের হুমকি-ধমকি অব্যাহত রয়েছে বলে বাদী পক্ষের অভিযোগ।

মামলা সূত্রে জানা যায়, আছিয়া বেগমের এক ছেলে ও দুই মেয়ে যুক্তরাজ্যে থাকেন এবং তিনি সিলেট নগরীতে বসবাস করেন। বিশ্বনাথের পালেরচকস্থ তাদের বাড়িতে সুনামগঞ্জের একটি পরিবার কেয়ারটেকার হিসেবে থাকে। এ বাড়িটি দীর্ঘদিন ধরে জবরদখলের চেষ্টা চালাচ্ছেন একই গ্রামের মৃত আব্দুর রবের ছেলে লায়েক মিয়া (৪৫) ও তার ভাই সেজু মিয়া (৪০) এবং তাদের সহযোগিরা।

এরই ধারাবাহিকতায় গত ৩১ মার্চ বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে লায়েক ও সেজু অন্ততঃ ১৫ জনের একটি দল নিয়ে ধারালো এবং দেশিয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আছিয়া বেগমের বাড়িতে হানা দেন। এসময় বাড়ির কেয়ারটেকার আব্দুল হাসিম ও রুনা বেগম প্রতিবাদ করলে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাদের উপর হামলা চালানো হয়। এসময় বাড়ির কেয়ারটেকার আব্দুল হাসিমের স্ত্রী রুনা বেগমের শ্লীলতাহানির চেষ্টাসহ তার হাতে ও মাথায় দায়ের কুপ দিয়ে মারত্মক জখম করেন হামলাকারীরা। এছাড়াও রুনা বেগমের মোবাইল ফোন লুট করে নিয়ে যান লায়েক ও সেজুর সহযোগী মৃত ইছবর আলীর ছেলে নুর আলম। হামলার পর বাড়ির বিভিন্ন প্রজাতির দেড় লক্ষ টাকার প্রায় ৪৫টি গাছ কর্তন করেন এবং বাড়ির সীমানা প্রাচীর ভাঙচুর করে আরও অর্ধ লক্ষ টাকার ক্ষতিসাধন করেন লায়েক, সেজু ও তাদের সহযোগিরা।

এক পর্যায়ে আহতদের চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে হামলাকারীরা রুনা বেগম ও তার স্বামীকে শাসিয়ে চলে যান। পরে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রেরণ করেন।

আছিয়া বেগমের দায়েরকৃত মামলায় লায়েক মিয়া ও তার ভাই সেজু মিয়া ছাড়াও পালেরচক গ্রামের মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে মাছুম মিয়া (৩২), মৃত সিরাজুল ইসলামের ছেলে সাদিকুর রহমান (৩২, নুরুল ইসলামের ছেলে মাসুদ মিয়া (৩০), মন্টু মিয়ার ছেলে ফরহান মিয়া (২৬) ও এমরান মিয়া (২৮)-সহ অজ্ঞাত আরও ৬/৭ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলা দায়েরের পর বিশ্বনাথ থানার এস.আই মো. মামুনুর রশীদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে বলে থানাপুলিশ সূত্রে জানা গেছে।

এদিকে, বাদী পক্ষের অভিযোগ- প্রধান আসামি লায়েক মিয়া জামায়াত নেতা। তিনি এলাকায় নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করে বেড়াচ্ছেন। আছিয়া বেগমের বাড়িটি অনেক দিন ধরে জবরদখলের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। এ বাড়িতে হামলা ও মারধরের ঘটনায় মামলা দায়েরের পর অভিযুক্তরা নানা ধরনের হুমকি-ধমকি প্রদর্শন করছেন। এমনকি- বাড়ির কেয়ারটেকার পরিবারকে প্রাণনাশের হুমকি পর্যন্ত দিচ্ছেন।

বাদী পক্ষের আরও অভিযোগ- মামলার এজাহারে উল্লেখিত অভিযুক্তরা ছাড়াও লায়েক ও সেজুর সঙ্গে পালেরচক গ্রামের আব্দুর রবের ছেলে ফয়েক মিয়া (৫০), মনির মিয়ার ছেলে বদরুল (৩৫), সিরাজ মিয়ার ছেলে জাকের (৩০) ও জুবের (২৯) এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত। তারা প্রবাসে থেকে আসামিদের ইন্ধন দেওয়াসহ আর্থিক সহায়তা প্রদান করছেন। তারা সবাই মিলে আছিয়া বেগমের বাড়ি জবরদখলে মরিয়া হয়ে উঠেছেন।

এদিকে, মামলা দায়েরের পর আসামিদের মধ্যে কয়েকজন আদালত থেকে জামিন নিয়ে আরও বেপরোয় হয়ে উঠেছেন। এছাড়াও বাকি আসামিরা এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরাফেরা করছেন।