ঢাকা, মঙ্গলবার ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১লা আশ্বিন ১৪৩১
প্রথম চালানে এলো ৬১ ট্রাক্টর ও জিপসাম

বেনাপোল দীর্ঘ দেড়মাস পর বন্দর দিয়ে রেলপথে আমদানি বাণিজ্য শুরু

মনির হোসেন, বেনাপোল (যশোর) : | প্রকাশের সময় : শুক্রবার ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০২:০৭:০০ অপরাহ্ন | খুলনা
দীর্ঘ প্রায় দেড়মাস বন্ধ থাকার পর যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে রেলপথে ভারতের সাথে বাণিজ্য শুরু হয়েছে। বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাত ১০ টার দিকে ভারত থেকে রেলযোগে দুটি চালানে ২ হাজার ৪৬০ টন জিপসাম সার ও ৬১ টি ট্রাক্টর আমদানি করা হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় থেকে নিরাপত্তাজনিত কারণে গত ১৯ জুলাই থেকে দুই দেশের মধ্যে রেলপথে পণ্য পরিবহন এবং যাত্রী যাতায়াত বন্ধ রাখে ভারতীয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। এরপর দুই দেশের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের আলোচনার প্রেক্ষিতে আনুষ্ঠানিকভাবে বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) থেকে পুনরায় শুরু হয় রেলপথে আমদানি বাণিজ্য। তবে এখনও বন্ধ রয়েছে যাত্রী পারাপারের ‘বন্ধন এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি।
 
 
 
বন্দর সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশে সড়ক পথের পাশাপাশি রেলপথে ভারতের সাথে বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি বাণিজ্যসহ পাসপোর্ট যাত্রী যাতায়াত করে থাকে। গত জুলাই মাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় নিরাপত্তাজনিত কারণ দেখিয়ে ভারত সরকার গত ১৯ জুলাই থেকে দুই দেশের মধ্যে রেলে পণ্য পরিবহন ও পাসপোর্ট যাত্রী যাতায়াত বন্ধ করে দেয়। এ সময় থেকে বন্ধ করা হয় বাংলাদেশিদের ভারতীয় ভিসা দেওয়া। তবে ৫ আগস্ট গণঅভ্যুথানে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর অন্তর্বতীকালীন সরকার ব্যবস্থায় স্বাভাবিক হয় দেশ। এরপর বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বাণিজ্য ও যাত্রী যাতায়াত চালুর দাবিতে ভারতীয় রেল কর্তৃপক্ষকে গত ১২ আগস্ট একটি চিঠি দেন। কিন্তু বিভিন্ন কারন দেখিয়ে সাড়া না দেওয়ায় বাংলাদেশে বাণিজ্যিক ক্ষতির পাশাপাশি বাংলাদেশ নির্ভর ভারতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানও অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়ে। একপর্যায়ে ভারত সরকার ৪৭ দিন পর বুধবার থেকে রেলপথে পণ্য পরিবহন সেবা চালু করেছে।
আমদানিকারক রফিকুল ইসলাম বলেন, ব্যবসার কাজে প্রায়ই ভারতে যেতে হয় ব্যবসায়ীদের। ভিসা বন্ধ থাকায় ভারতে যাতায়াতে অসুবিধায় পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। তাড়াতাড়ি ভিসা চালুর দাবি জানাচ্ছি।
বেনাপোল বন্দরের আমদানি-রফতানিকারক সমিতির সভাপতি মহসিন মিলন জানান, জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় নিরাপত্তাজনিত কারণ দেখিয়ে বেনাপোল দিয়ে রেলপথে আমদানি বাণিজ্য বন্ধ থাকে। এতে ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মুখে পড়েন। পুনরায় এ বন্দর দিয়ে রেলপথে আমদানি বাণিজ্য চালু হওয়ায় ব্যবসায়ীদের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে।
 
তিনি জানান, এ বন্দর দিয়ে ভারত থেকে রেলপথে পাথর, জিপসাম ও সিমেন্ট তৈরির সামগ্রী আমদানির পাশাপাশি গার্মেন্টস, কেমিকেল, মোটরকারসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানি হয়ে থাকে। ভারতের কলকাতা থেকে সড়ক পথে ট্রাকে পণ্য পরিবহনে ৫ থেকে ৭ দিন সময় লেগে যায়। সেখানে রেলপথে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টায় বেনাপোল বন্দরে পণ্য পৌঁছে যায়।
বেনাপোল আন্তর্জাতিক রেলওয়ের স্টেশন মাস্টার সাইদুজ্জামান জানান, বেনাপোল দিয়ে রেলপথে বাণিজ্য ও যাত্রী পরিবহন চালুর জন্য গত মাসের ১২ আগস্ট ভারতীয় রেল কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেয়া হয়েছিল। এরপর এ মাস থেকে পুনরায় রেলপথে পণ্য আমদানি চালু হয়েছে। কিন্তু যাত্রী যাতায়াত বন্ধ রেখেছে ভারতীয় রেল কর্তৃপক্ষ। খুব দ্রুতই যাত্রী যাতায়াত চালু হবে বলে তিনি জানান।
বেনাপোল বন্দরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক রেজাউল করিম জানান, দীর্ঘদিন রেলপথে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য বন্ধ থাকার পর পুনরায় ভারতের সাথে বাণিজ্য শুরু হয়েছে এবং পণ্য দ্রুত খালাসের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।