জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আসন্ন ভর্তি পরীক্ষায় ভর্তি পরীক্ষার আবেদন ফি কমানোসহ ৪ দাবিতে মানববন্ধন করেছেন গণ অভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলন।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) বেলা পৌনে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে মানববন্ধন করেন তারা। তাদের অন্যান্য দাবিগুলো হলো উপাচার্য কোটা বাতিল, পোষ্য কোটার যৌক্তিক সংস্কার এবং অভিন্ন প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা পদ্ধতি চালু।
মানববন্ধন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের ৪৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী জুবায়ের শাবাবের সঞ্চালনায় নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের শিক্ষার্থী শোয়াইব হাসান বলেন, ‘পোষ্য কোটার যেন যৌক্তিক সংস্কার করা হয়। সেক্ষেত্রে নবম গ্রেড অথবা তার অধিক পদমর্যাদার কোন শিক্ষক কিংবা কর্মকর্তা এই সুবিধা গ্রহণ করতে পারবেন না। যেহেতু তারা সমাজের কোন অনগ্রসর অংশ নন সুতরাং তাদের এইরকম একটি অতিরিক্ত সুবিধা গ্রহণ করা বৈষম্যবিরোধী যে চেতনা তার সাথে সাংঘর্ষিক। আমরা একই সঙ্গে বলেছি পোষ্য কোটার ক্ষেত্রে যেন ন্যূনতম একটা স্ট্যান্ডার্ড কাট মার্ক রাখা হয় এবং সেই কাটমার্কটা যথাযথভাবে অনুসরণ করেই যেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হয়।’
সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৫০ ব্যাচের শিক্ষার্থী জিয়াউদ্দিন আয়ান বলেন, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া বাংলাদেশের আর কোনো স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ে অথর্ব ভিসি কোটা নেই। আগামী এক কর্মদিবসের মধ্যে ভিসি কোটা বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে। তা নাহলে আমরা প্রশাসনিক ভবন অবরোধ করতে বাধ্য হবো। এছাড়া পোষ্য কোটার যৌক্তিক সংস্কার করতে হবে। এই উপাচার্য যদি ভর্তি পরীক্ষায় বৈষম্যমূলক কোটার যৌক্তিক সংস্কার না করতে পারেন তাহলে তার পরিণতিও পূর্বের ভিসি নূরুল আলমের মতো হবে।’
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী শাহাদাত হোসেন, ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আল মাহাদী প্রমুখ।
গণঅভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলনের আহ্বায়ক আব্দুর রশিদ জিতু বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে যে অনিয়ম, দুর্নীতি হতো সেগুলোর ব্যাপারে গণঅভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলন বরাবরই সোচ্চার। তারই ধারাবাহিকতায় আমরা গত ১৪ নভেম্বর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল, ভিসি কোটা বাতিল, পোষ্য কোটার যৌক্তিক সংস্কার অভিন্ন প্রশ্নপত্রে পরীক্ষাসহ বেশ কয়েকটি দাবি নিয়ে আমরা দীর্ঘদিন আন্দোলন করে আসছিলাম। বিশ্ববিদ্যালয় প্রদর্শন আমাদের মৌখিক আশ্বাস দিলেও এই দাবিগুলো বাস্তবায়নের জন্য তাদের কোন কার্যকর পদক্ষেপ আমাদের চোখে পরেনি। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সর্বশেষ কঠোর হুঁশিয়ারি দিতে চাই যদি আজকের মধ্যে ভিসি কোটা বাতিল করে প্রজ্ঞাপন দেওয়া না হয় এবং অন্যান্য দাবিগুলোর ব্যাপারে আমরা কোন সদুত্তর না পাই তাহলে আমরা আগামী এক কর্ম দিবসের মধ্যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন অবরোধ করতে বাধ্য হব। একইসঙ্গে এই সমস্যাগুলোর সমাধান না করে আমরা কিছুতেই আগামী ভর্তি পরীক্ষা হতে দিব না।
প্রসঙ্গত, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক সম্মান প্রথম বর্ষের (২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষে) ভর্তি পরীক্ষার আবেদনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে প্রশাসন থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-নাতনি কোটা বাতিলের কথা জানানো হলেও কোন প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়নি।
বায়ান্ন/প্রতিনিধি/পিএইচ