সুজলা-সুফলা শস্য শ্যামলায় ভরপুর বাংলাদেশ আজ শ্রীমহীন হয়ে পড়েছে। অভাব ও দারিদ্রের কষাঘাতে আজকের জনজীবন দুঃখ ও হাহাকারে পূর্ণ। মানুষের ওপর চেপে বসেছে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির খরক। জীবনধারনের উপযোগী প্রতিটি জিনিসের অগ্নিমূল্যে চাহিদার ১৬ এর ১ অংশ খেয়ে কোন রকম দিন যাপন করতে হচ্ছে। তেল, চিনি, চাল, ডাল, মাছ, মাংস, ডিম, তরিতরকারি, হলুদ-মরিচ, আদা-জিরা ইত্যাদি দ্রব্যের মূল্যের লাগাম টানতে পারেননি কেউ। ফলে সাধারণ মানুষ বিশেষ করে খেটে খাওয়া মেহনতি মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। এখন এটা দেখার কেউ নাই। এমনটা বললেন ব্যবসায়ী ও ক্রেতা সাধারন।
এক জটিল ভয়ংকর সংকটের আকার দিন দিন বেড়ে চলেছে। একদিকে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বিস্তারের ঝুঁকি, অন্যদিকে সেই ঝুঁকি এড়ানোর লক্ষ্যে পুরো জাতি অবরুদ্ধ দশার অনিবার্য ফল হিসেবে উদ্ভূত জনদুর্ভোগ। অন্যদিকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারে আগুন। আর সেই আগুনে পুড়ছে সাধারণ মানুষ। আয় নেই, পকেট উজাড়, ক্রেতা পড়েছেন মহাসংকটে। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের ক্রান্তিকালে মানুষ যখন কোনো রকমে বেঁচে থাকার চেষ্টা করছে ঠিক তখনই - চাল, ডাল, তেল, চিনি, মুরগি, ডিম, পেঁয়াজ, সবজিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম যেন লাগাম ছাড়া ঘোড়া। এতে হিমশিম খেতে হচ্ছে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষের। মানুষের টিকে থাকাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে পড়েছে।
শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারী ) বাজার ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে। নতুন মূল্য অনুযায়ী, বোতলের এক লিটার সয়াবিন তেল ১৭০ টাকা এবং খোলা এক কেজি সয়াবিন তেল ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া বোতলের পাঁচ লিটার তেল ৭৮০ টাকা এবং খোলা পাম সুপার এক লিটার ১৬০ টাকায় বিক্রি হয়। তেলের দামের বিষয়ে খালপাড়ের ব্যবসায়ী মোঃ জামাল জানান, তেলের দাম বাড়ানোর ঘোষণার কথা শুনেছি। কিন্তু নতুন দামের তেল এখনও আমরা পাইনি। নতুন দামের তেল এলে, তখন আমরাও দামে বিক্রি করব। এখন আমরা যে দামে ক্রয় করেছি তার থেকে ৫ টাকা বেশী দামে বিক্রি করছি। তেলের দাম না কমার বিষয়ে প্রায় ব্যবসায়ী একই ধরনের কথা বলেন। নতুন বাজারের ব্যবসায়ী নুর মাহান্মদ বলেন, প্রশাসন বর্তমানে চুপ, তাদের বাজার মনিটর নাই, আমাদের ধারনা সামনে রোজাকে পুজি করে তেল বর্তমানে সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রনে রয়েছে। তেলের দাম আরো বাড়বে কমার সম্ভাবনা কম। কারণ কোনো ব্যবসায়ী লোকসান দিয়ে তেল বিক্রি করবে না। তাই অল্প কিনে অল্পই বিক্রি করে।
এদিকে, চালের বাজারও ৫০ কেজির প্রতি বস্তা প্রকার ভেদে ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা বেড়ছে। এখন ছিন্নমুলের নারী, পুরুষ ও শিশুরা চাল ভিক্ষার জন্য সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মানুষের দুয়ারে দুয়ারে দাবড়িয়ে বেড়াচ্ছে। নতুন চাল (বোর) না আসা পর্যন্ত চালের দাম কমবেনা বলে জানান ব্যবসায়ী ইলিয়াছ ও জামাল। চিনি এক লাফে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আমদানি করা আদার কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৮০ টাকার মধ্যে। এর সঙ্গে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের সবজি। গরু, খাশি, বক্রী, ব্রয়লার, সোনালী, পাকিস্তানি কক এবং লাল লেয়ার মুরগরী দাম লাফ দিয়েছে। কেজিতে দাম বেড়েছে ৩০ থেকে ৫০ টাকা। এর মধ্যে আলু, ডিম ও পেঁয়াজের দামও বেড়েছে। আবার জালানীর ভুর্তকী থেকে বেড়িয়ে আসা বক্তব্যে এখন মানুষ হাপিয়ে উঠছে।
এবিষয়ে প্রশাসনের কোন কর্মকর্তাই কথা বলতে রাজি হচ্ছেননা।