ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে পুকুর থেকে মাছ চুরির অভিযোগে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে ফয়জুল ইসলাম (২৪) নামে এক যুবককে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করার অভিযোগে আব্দুর রাজ্জাক ও তাঁর বাবা আলিম উদ্দীনকে দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্ত মূলক বিচারের দাবীতে মানববন্ধন করা হয়েছে।
সোমবার (২৪ অক্টোবর) সকাল ১১ টায় সর্বস্তেরের জনগনের আয়োজনে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা শহরের প্রধান সড়কগুলোতে র্যালি প্রদর্শিত করে চৌরাস্তায় ঘন্টাব্যাপি মানবন্ধন করা হয়। এতে অংশ নেন বিভিন্ন পেশার মানুষ।
মানবন্ধনে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, ইউপি সদস্য মুক্তাদুর রহমান, ব্যবসায়ী শামসুজ্জোহা, শিক্ষক আবু তালেব, রফিজুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য প্রদান করেন।
এসময় বক্তারা বলেন, ফইজুল ইসলামের ভুল হলে তাঁর পরিবার, পুলিশ, জনপ্রতিনিধিরা আছেন। তাদের অবগত না করে এভাবে নির্যাতন করতে পারেনা। কিশোর ফাইজুলকে এমনভাবে নির্যাতন করা হয়েছে যে তাঁর শরীরের ২২টি সেলাই দেওয়া হয়েছে। এ ধরনের নির্যাতনকারীদের উপযুক্ত শাস্তির দাবী জানান বক্তারা।
বালিয়াডাঙ্গী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খায়রুল আনাম জানান, এ বিষয়ে মামলা হয়েছে। আসামীদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশ তৎপর রয়েছে।
উল্লেখ্য, ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় পুকুর থেকে মাছ চুরির সন্দেহে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে ফয়জুল ইসলাম (২৪) নামে এক যুবককে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের অভিযোগ উঠে পুকুর মালিক আব্দুর রাজ্জাক ও তার বাবা আলিম উদ্দীনের বিরুদ্ধে।
শুক্রবার (২১ অক্টোবর) বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার চরকডাঙ্গী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরে আহত যুবককে উদ্ধার করে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্সে ভর্তি করা হয়। নির্যাতনের শিকার ফয়জুল ইসলাম উপজেলার দুওসুও ইউনিয়নের আমতলা গ্রামের মফিজ উদ্দীনের ছেলে। এবং অভিযুক্ত পুকুরের মালিক আব্দুর রাজ্জাক ও তার বাবা আলিম উদ্দীনের বাড়ি একই এলাকায়।
জানা যায়, ওইদিন রাতে তিনজন যুবক আব্দুর রাজ্জাকের পুকুরে মাছ চুরি যায়। পুকুরের মালিক তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে ধাওয়া করে। দুই যুবক পালিয়ে গেলেও ধরা খেয়ে যায় ফয়জুল। পরে তাকে মার ধর করে পুকুর মালিক আব্দুর রাজ্জাক ও তার বাবা আলিম উদ্দীন। পরে তাকে উদ্ধার করে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।এ ঘটনায় নির্যাতিত যুবকের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ২২টি সেলাই দেওয়া হয়েছে বলে জানায় কর্তব্যরত চিকিৎসক। এরপর তাকে রংপুরে রেফার্ড করা হয় বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে পুকুর মালিক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, দীর্ঘদিন যাবৎ পুকুরের মাছ চুরি হচ্ছে। আজ ভোররাতে ফয়জুলসহ তিনজনে জাল দিয়ে মাছ তুলতে আসলে ফয়জুলকে ধরে ফেলি। অপর দুজন পালিয়ে যায়। আমাকে ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে মারধর দেওয়া হয়েছে। থানায় নিয়ে গেলে ইউপি চেয়ারম্যানকে জমা দিতে বলেছে। পরে ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলামের মাধ্যমে হাসপাতালে ভর্তি করেছে। তাঁর যাবতীয় খরচ আমি বহন করব বলে বলেছি।