মাগুরা বিআরটিএর প্রভাবশালী দালালচক্রের অন্যতম সদস্য লিটন বিশ্বাস, মাত্র সাত বছর আগেও অন্যের গাড়িতে ড্রাইভার হিসেবে জীবন শুরু করেছিলেন।
ঘটনা ক্রমে পরিচয় হয় মাগুরায় সেই সময়ের কর্মরত ছিলেন বিআরটিএর অন্যতম দুর্নীতিবাজ এডি বিলাস সরকার (স্বর্গীয়) তিনি লিটন বিশ্বাসকে নিয়ে আসেন মাগুরা বিআরটিএর কার্যালয়ে মাস্টার রোলের কর্মচারী হিসেবে। বিভিন্ন তদবির ও অবৈধভাবে ড্রাইভিং লাইসেন্স পাইয়ে দেওয়ার কাজ এই লিটন বিশ্বাস এর মাধ্যমেই শুরু হয়। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই লিটন বিশ্বাস পুরো বিআরটিএ অফিসে রাম রাজত্ব কায়েম করেন, হাতে পেয়ে যান টাকা বানানোর আলাদিনের চেরাগ, এরপর আর পিছনে তাকাতে হয়নি। বর্তমানে সে বিপুল অর্থ-বিত্তের মালিক। মাগুরা মোল্লাপাড়া নিজে বসবাস করেন একটা টিনের বাড়িতে, মাগুরা পুলিশ সুপারের বাসভবনের পাশে একটা প্লট কিনে বিশাল অট্টালিকা তৈরি করছেন এবং মাগুরা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি তানজেল হোসেন খানের বাড়ির সামনে একটা বাড়ি কিনেছেন সেটাও কোটি টাকার উপরে, মোল্লাপাড়াতে জায়গা কিনেছেন ১০ শতকের একটা প্লট।তারপাশেই আর একটা কিনেছেন ৪ শতকের একটা প্লট এবং এই লিটন বিশ্বাসের দুইটা গাড়ি আছে প্রাইভেট কার যেটার নাম্বার ঢাকা মেট্রো-খ ১১-৯০-৯৪ আর একটা নোয়া যার নাম্বার ঢাকা মেট্রো-চ ১১-৬৫-২৪। লিটন বিশ্বাসের খান পাড়ায় যে বহুতল ভবন টা সদ্য কেনা সেখানে এখন মাগুরায় কর্মরত বিআরটিএর ইন্সপেক্টর সজীব সরকার ভাড়া থাকেন। মাগুরা বিআরটিএর এডি এস এম মাহফুজুর রহমান বলেন আমি মাগুরায় বদলি হয়ে আসার পর থেকেই এই লিটন বিশ্বাসকে অফিসে দেখছি। তবে লিটন বিশ্বাস বাড়ি গাড়ির মালিক কিভাবে হয়েছে আমার জানা নাই। মাগুরা বিআরটিএতে এখন সরকারি কর্মচারী আছেন মেকানিকাল অ্যাসিস্ট্যান্ট আবু জামাল ও অফিস সহায়ক ব্রজেন। লিটন বিশ্বাসের সঙ্গে যোগাযোগ হলে সে খান পাড়ার বাড়ি টা বাদে সবগুলার কথায় সে নিজের বলে স্বীকার করেন, খান পাড়ার বাড়িটা বোনের নামে ক্রয় করে থাকতে পারেন বলে সবার ধারনা । মাইক্রো স্ট্যান্ডের এক চালক বলেছেন লিটন ভাই আমাদের সঙ্গে ড্রাইভারি করতেন বিআরটিএ-তে কাজ করার পরপরই তার ভাগ্য পরিবর্তন হয়ে গেল হয়তো আরব্য উপন্যাসের আলাদিনের চেরাগ পেয়েছে আমাদেরও খুব ইচ্ছা করে ড্রাইভারি বাদ দিয়ে বিআরটিএর কাজ করার জন্য। আমরা সরোজমিনে লিটন বিশ্বাসের গ্রামের বাড়ি চর চৌগাছি গিয়ে দেখা যায় সেখানে তিনি গ্রামে প্রচুর টাকা দান খয়রাত করেন , অনেকে তাকে গ্রামের হাতেমতাই হিসেবে আখ্যায়িত করেন। একসময় তার দাদা ভাদু বিশ্বাসের অনেক জমি জাতি ছিল কিন্তু লিটন বিশ্বাসের বাবা কেছেম বিশ্বাস একজন ভবঘুরে মানুষ ছিলেন এবং ৫টা বিয়ে করেছিলেন তার দাদাকে লাঠিপেটা করে মেরে ফেলেছিলেন । এবং এর ফলে তার বাবা পৈত্রিক সম্পত্তি অধিকাংশ খুঁইয়ে ফেলেন ।মাগুরা সাধারন মানুষ মনে করেন অবিলম্বে এই দুর্নীতিবাজ দালাল চক্রের হাত থেকে বিআরটিএ কার্যালয়কে মুক্ত করতে হবে, তা না হলে সরকারের সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছানো সম্ভব নয়।